মন্ত্রিসভায় স্থান না পেয়ে বেদনার্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীর পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব-উল আলম হানিফ। মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পদকে কাজে লাগিয়ে অস্বাভাবিক সম্পদের অধিকারী হওয়া হানিফের। অন্যদিকে গত সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা আবদুল মান্নান খানের এবার মন্ত্রী হওয়া তো হলোই না, তার সংসদ সদস্য পদও নেই। নেই আওয়ামী লীগের দলের দায়িত্ব। নিজের এত দিনের সুবিধাভোগী অনুগতদের নিয়ে এলাকায়ও যেতে পারছেন না।
সব হারিয়ে মান্নান এখন নিঃস্ব-রিক্ত। জানা যায়, গত পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে দাপুটে নেতা ছিলেন মাহবুব-উল আলম হানিফ। একাধারে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীর পদ ও দলের অন্যতম মুখপাত্রের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা হানিফের পরিবর্তে শরিক দলের এক নেতাকে সংসদীয় আসনের মনোনয়ন দেওয়ার হয়। এরই অংশ হিসেবে তাকে নিজের বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্বে নিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কিন্তু দায়িত্ব পালনকালেই এবারের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন হানিফ। অব্যাহতি দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। তবে মনোনয়ন দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের। ক্ষমতার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলে যখন নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা দাখিল করেন তখন বেরিয়ে আসে বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়ার খবর। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী থাকাকালীনই মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখা হানিফ নির্বাচনে বিএনএফ প্রার্থীর সঙ্গে বিজয়ী হওয়ার পর নানাভাবে মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার লবিংও করেছেন।
কিন্তু ভাগ্যের শিকে ছিঁড়েনি। মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি হাইব্রিড এই আওয়ামী লীগ নেতা। এখন তাকে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক পদ নিয়েই। অন্যদিকে গত পাঁচ বছরে কয়েকশ গুণ সম্পদ বাড়ানো ও ব্যাপক অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা আবদুল মান্নান খান নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরই আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদকের পদ থেকে বাদ পড়েন। তার জায়গায় দায়িত্ব পান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ।
এরপর গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সালমা ইসলামের কাছে পরাজিত হন মান্নান খান। শুধু প্রার্থীর কাছেই নয় সেদিন ভোটারদের কাছেও কথা শুনতে হয়েছে তাকে। আবার ভোটের পরের দিন মান্নান খানের সমর্থক ও সালমা ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। এতে প্রাণহানিও হয়। ব্যাপক সমালোচনাও হয় এ নিয়ে।
সব মিলিয়ে রাজনীতি থেকেই বিদায় নেওয়ার অবস্থায় চলে গেছেন আবদুল মান্নান খান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।