যুদ্ধবিধ্বস্ত, রাজনৈতিক অস্থিরতার শিকার অথবা শুধুমাত্র শান্তির খোঁজে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক মানুষ বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করে থাকে। আশ্রয় প্রার্থনার দিক থেকে কানাডা, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ডেনমার্ক, রাশিয়া অন্যতম। তবে সম্প্রতি ব্রিটিশ রিফিউজি কাউন্সিলের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রাজনৈতিক আশ্রয় পার্থনার দিক দিয়ে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে উঠে গেছে।
২০১৩ সালের প্রথম দিকেই শুধু যুক্তরাজ্যেই রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন দেশের ৫ হাজার ৬২৫ জন মানুষ আবেদন করেছে। যা ২০১২ সালের আশ্রয়প্রার্থীদের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি।
আর এবারের এই আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং সিরিয়ার মানুষের সংখ্যাই বেশি। এর আগের বছর আশ্রয়প্রার্থী মানুষের মধ্যে লিবিয়ার নাগরিকদের সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্য।
২০১২ সালে করা তাদের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান পঞ্চম। ক্রমটি এরকম- পাকিস্তান, ইরান, শ্রীলঙ্কা, ভারত, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, সিরিয়া, নাইজেরিয়া, আলবেনিয়া এবং ইরিত্রিয়া।
২০১৩-এর মে মাসের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৩ সালে গোটা বিশ্বে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়ে গেছে।
তালিকায় নতুনভাবে যোগ হয়েছে বৃহৎ রাষ্ট্র চীন এবং বাদ পড়েছে ইরিত্রিয়া এবং বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে উঠে গেছে।
এ পরিসংখ্যান থেকে খুব স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যায়, যেসব দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে এবং বহির্দেশীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট যোগাযোগ রয়েছে সেসব দেশ থেকেই রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য বেশি সংখ্যক আবেদন জমা পড়ছে।
উন্নত বিশ্ব ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ক্রমবর্ধমান চাপের কাছে নতিস্বীকার করে অনেক সময় রাজনৈতিক বন্দিদের বিভিন্ন দেশে নির্বাসন দিয়ে থাকে ক্ষমতাসীন সরকার। অনেকে নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যে স্ব-উদ্যোগে ভিন্ন কোনো দেশে আশ্রয় গ্রহণ করে থাকেন।
এক সমীক্ষায় দেখা যায়, গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৭৬ জন ব্যক্তি।
এই বিপুল সংখ্যক আবেদনকারী যাতে কোনো রকম আমলাতান্ত্রিক জটিলতার সম্মুখীন না হন, সেজন্য স্যাক্সনি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জার্মানি সম্পর্কে তিনটি ভাষায় একটি তথ্যপুস্তিকা প্রকাশ করে। সে পুস্তিকায় সহজ ভাষায় ডাক্তারের কাছে যাওয়া থেকে শুরু করে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানো পর্যন্ত নানা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল।
২০১৩ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ থেকে ৫ ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়াতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। কিন্তু আশ্রয়প্রার্থীদের পর্যাপ্ত কাগজপত্র না থাকায় তাদেরকে আস্ট্রেলিয়া সরকার পাপুয়া নিউগিনিতে স্থানান্তর করে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত এম শামীম আহসান এর সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তবে বাংলাদেশ থেকে ২০০৬ সালে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ রাজনৈতিক আশ্রয়ে বিভিন্ন দেশে চলে যান। অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ শাখার গবেষক আব্বাস ফায়েজ এ বিষয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে ২০০৬ সালে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হয়। ব্রিটিশ এবং বাংলাদেশ উভয় সরকারেরই উচিৎ এ ব্যাপারে যথাযথ ভূমিকা পালন করা।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।