ভালবাসি মা-মাটি-দেশ। স্বপ্ন দেখি একটি সুন্দর সকাল। এক নতুন সূর্যোদয়ের।
বাংলাদেশের রাজনীতি যেহেতু আওয়ামী লীগ-বিএনপি এ দুটি দলকে ঘিরেই আবর্তিত। সেহেতু এ দেশের সকল নাগরিকই তাদের সমর্থন প্রদানের ক্ষেত্রে এ দুটি দলকে বিবেচনায় নিয়েই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এটাই স্বাভাবিক।
সাধারণ মানুষ কাকে বা কোন দলকে সমর্থন করবে এটা নির্ভর করে দল দুটির আদর্শ, পূর্বাপর কর্মকাণ্ড এবং সর্বোপরি বিপদে কারা তাদের পাশে এসে দাঁড়াবে তার উপর। সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে নীতি আদর্শের চেয়েও এ ক্ষেত্রে তারা সর্বাধিক বিবেচনায় নেন নিরাপত্তার ইস্যুটি। কেননা তারা সংখ্যাগরিষ্ঠের বল প্রয়োগের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাই বেশি আশা করে।
দলীয় আদর্শ অনুযায়ী বিএনপি কখনোই সংখ্যা লঘু নির্যাতনের পক্ষে নয়।
তবে দলটি যে সংখ্যা লঘু নির্যাতনকারীদের একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল এতেও সন্দেহ নেই। বিষয়টি এতটাই স্পষ্ট যে, প্রথমেই এই দলটিকে সংখ্যা লঘুদের হিসেবের বাইরে রাখতে হয়। আর এটা নিয়ে বিএনপিরও কোন মাথা নেই। কারণ তারা বরং এটাকে পুঁজি করেই রাজনীতি করতে অভ্যস্ত। তারা চায় মুসলিম জন অধ্যুষিত এ দেশের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষগুলিকে এটা বোঝাতে যে, বিএনপির হাতেই ইসলামের রক্ষাকবচ।
আর আওয়ামীলীগ মানেই হিন্দুত্ব বাদ, নাস্তিক্যবাদ। তারা এটাকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, এখন মানুষের ধর্মীয় বিধি বিধান মানার মাঝেই তার পরিচয় নির্ণীত হচ্ছে না। মুখ্য হয়ে পড়েছে রাজনৈতিক পরিচয়। অর্থাৎ আপনি বাম রাজনীতি পছন্দ করেন তার মানেই আপনি নাস্তিক, আপনি আওয়ামী লীগের সমর্থক মানেই আধা নাস্তিক। মুসলমান হতে হলে আপনাকে আগে বিএনপি সমর্থক হতে হবে আর পরিপূর্ণ মুসলিম হতে হলে আপনাকে অবশ্যই জামায়াতের বা হেফাজতের সমর্থক হতে হবে।
এই শ্রেণী ভেদের সুযোগটিই নিচ্ছে ধর্ম ব্যবসায়ীরা এবং সমাজের মধ্যে বসবাসকারী ভোল পালটানো দুষ্কৃতি কারীরা। তারা জানে এখন দাড়ি-টুপি ওয়ালা একজন লোকের বিপক্ষে বা তার কৃত কুকর্ম নিয়ে কথা বলতে গেলে আপনাকে শত বার চিন্তা করতে হবে। অতএব প্রথমেই একটি ধর্মীয় লেবাসের মধ্যে সেঁধিয়ে যেতে হবে। আর তা পারলেই সাত খুন মাফ। ইসলামকে যারা কেবলই লৌকিকতার মোড়কে আবদ্ধ করে রাখার চেষ্টা করে তারা আসলে কতটা ইসলামের সেবক তা প্রশ্নের দাবী রাখে।
ধর্ম ব্যবসায়ীরা যে তাদের আত্ম রক্ষার্থে ধর্মকে কতটা নিকৃষ্ট উপায়ে ব্যবহার করতে পারে তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ গন জাগরণ মঞ্চের কর্মীদের উপরে নাস্তিকের তকমা লাগিয়ে দেয়া। মানুষ কতটা অবিবেচক হলে পড়েই একটি প্রগতি শিল প্রজন্মের গায়ে এমন কালিমা লাগিয়ে দিতে পারে? একটু লক্ষ্য করে দেখুন কাজটি কারা করেছে? বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ সরাসরি গন জাগরণ মঞ্চের কর্মীদের নাস্তিক বলে আখ্যায়িত করলেন। যারা এ দেশের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। তাহলে বিষয়টি কি দাঁড়াল সংখ্যা লঘু নির্যাতনের বীজটি লুকায়িত আমাদের প্রধান নেতৃত্বের মাঝেই। এর সাথে যখন জামায়াতে ইসলামীর মত স্ব ঘোষিত সাম্প্রদায়িক শক্তি একীভূত হয় তখন পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে তার প্রমাণ তো তারা গত একটি বছর ধরে দেখিয়ে আসছে।
পঁচাত্তর পরবর্তী দীর্ঘ তিন যুগ ধরে একটু একটু করে এ দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ান হয়েছে। যা বরাবরই সংখ্যা লঘুদের নিরাপত্তা হীন করে তুলেছে আর তারই ফলশ্রুতিতে ক্রমশ কমেছে তাদের সংখ্যা। এর পেছনে ধর্মের কোন ভূমিকা নেই প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে অর্থ-বিত্ত আর বাস্তু ভিটা। এখানে ধর্মীয় পরিচয় কেবল নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কারা অত্যাচার করবে আর কারা সইবে। কারা থাকবে কারা পালাবে।
এ দেশের মুসলমানদের একটি বিশেষত্ব হল এরা সুফিবাদে বিশ্বাসী। যার ফলে জামায়াতের জ্বিহাদী ধ্যান ধারনা এখানে অত বেশি সুবিধা করতে পারেনা। যতটা পেরেছে ওহাবি সম্প্রদায় অধ্যুষিত দেশগুলিতে। এটা যতটা সস্থির ঠিক ততটাই অস্বস্তির বিষয় হল এ দেশের মুসলমানরাই আবার ধর্ম ব্যবসায়ীদের কথায় চাঁদে সাঈদির মুখ দেখতে পায়! আর তাই দেখে উন্মাদও হয়ে যায়। যদিও সে উন্মাদনা স্তিমিত হয়ে এলে এরা লজ্জায় মুখও লুকায়।
ততক্ষণে সর্বনাশ যা হওয়ার তা হয়ে যায়। এই যে মানসিকতা একে আমরা একদিকে যেমন নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে পারি অপরদিকে একে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতেও দেখতে পারি। কারণ এটা খুব সহজেই অনুমেয় যে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষ সরল এবং ধর্ম প্রাণ। সাধারণ মানুষের এই দুটি গুনকে চাইলে যেমন ভাল কাজে ব্যবহার করা যায় তেমনি চাইলে খারাপ কাজেও ব্যবহার করা যায়। এখন কথা হল আমরা কোনটি করছি?
বেশির ভাগ মুসলমানের কাছে মসজিদের ইমাম মানেই ইসলামী বিশ্বকোষ আর গ্রাম্য মাতব্বর মানেই দেশের মহাজন।
এরা যা বলেন তাই সই। তারা যদি বলেন বিধর্মীদের সম্পদ মানেই গনিমতের মাল তো তাই সঠিক। তারা যদি বলেন একে ভোট দিলে ধর্ম রক্ষা হবে ওকে সমর্থন মানেই দেশ বিক্রি হয়ে গেল তবে তাই ঠিক। এ ক্ষেত্রে তাদেরকে যে সঠিক বুঝ দেয়া হল না বা হচ্ছে না এ দায় কার?
লক্ষ লক্ষ মাদ্রাসা ছাত্র যখন বিশ্বাস করতে শুরু করে ব্লগার মানেই নাস্তিক তখন আমি নিজেই কি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি না? এই বুঝি কোন জেহাদি আমায় খুন করতে উদ্যত হল শহিদ কিংবা গাজি হবে বলে। মহান স্রষ্টার বিচারে আমি ভুল না শুদ্ধ সে বিচারের সময় তার কোথায়?
এই কোমল মতি শিক্ষার্থীদের হাতের প্ল্যাকার্ডে যখন লেখা দেখি ব্লগারদের ফাঁসি চাই।
তখন নিজেকে ব্লগার ভাবতেও ভয় করে। এখানেই আমি উপলব্ধি করি ধর্মান্ধ, উন্মত্ত মানুষের সামনে একজন সংখ্যালঘু কতটা অসহায়। কারণ এ ক্ষেত্রে আমিও তো সংখ্যালঘু। আমাকে নিরাপত্তা দেবে কে? একদিকে তথ্য আইনের নামে সরকারের চোখ রাঙ্গানোই অন্যদিকে অশিক্ষিত ধর্মান্ধ কতগুলি মানুষের তেরে আসা। ঠিক একই ভাবে একদিকে সম্পত্তির লোভে একদল ইতরের ধর্ম বিক্রি অন্যদিকে শত্রু/অর্পিত সম্পত্তি আইনের নামে তাদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রদান।
তার উপরে আছে তৃনমূলের ভোটের রাজনীতির হিসেব নিকেশ। একজন সংখ্যা লঘু ভোটারের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে যদি শখানেক সংখ্যাগুরুর ভোট হারাতে হয় তাহলে তো চোখ কান বুঝে থাকাই মঙ্গল! আইনের শাসন যখন প্রতিষ্ঠিত হয় গোষ্ঠী স্বার্থ বিচারে তখন সংখ্যালঘু নির্যাতন অব্যাহত ভাবে চলতে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
আমাদের গ্রাম্য সমাজ ব্যবস্থা এখনো অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হয় গ্রাম্য মাতব্বর, মসজিদের ইমাম, স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক এবং সর্বোপরি স্থানীয় নির্বাচিত প্রতিনিধি তথা মেম্বার চেয়ারম্যান দ্বারা। আর এই লোক গুলিই সাধারণ মানুষকে দিয়ে তাদের ভুল বুঝিয়ে নারকীয় তাণ্ডব চালায়। যদি সে অত্যাচার সইতে না পেরে একজন সংখ্যা লঘুও ভিটেমাটি ছেড়ে পালায় তবেই স্বার্থ হাসিল।
কার স্বার্থ হাসিল হয়? নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষের নয়। যাদের স্বার্থ হাসিল হয়, প্রথমত তারা গ্রামের মাথা তারপরে কোন না কোন দলের আশ্রিত। এদের কাছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বড় কথা নয় স্বার্থ সিদ্ধিই আসল। এদের মাঝে দেখা যায় এক ভাই আওয়ামী লীগ, এক ভাই বিএনপি, কখনো কখনো আরেক ভাই জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। এটা আদর্শগত ভিন্নতার কারণে নয়।
এটা স্বার্থ সিদ্ধির একটি উপায় মাত্র। এতে করে ক্ষমতায় যেই আসুক তাদের কেশাগ্রটি পর্যন্ত কেউ ছিন্ন করতে পারে না। সেই সাথে আছে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং বিচার হীনতার সংস্কৃতি। যার মুলেও রয়েছে আর্থিক লেন দেন।
এই যখন সার্বিক অবস্থা তখন যে সব সংখ্যা লঘু মানুষ দেশকে ভালবেসে ভিটে মাটি আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকতে চায় তারা সেক্যুলারিজমের কথা বলা আওয়ামী লিগকেই তাদের মুল আশ্রয় বলে ভাবতে চায়।
যেহেতু এ দলটি ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিতে বিশ্বাসী সঙ্গত কারণেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আওয়ামী লিগের মাঝেই তাদের নিরাপত্তা খোঁজে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ কি তাদের সত্যিই সে আশ্রয় দিতে পারছে; না কি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে তাদের সাথে প্রকারান্তরে তারাও প্রতারণাই করছে। এ প্রশ্নটি এখন বেশ জোরে শোরেই উপস্থাপিত হচ্ছে। কারণ পরিসংখ্যান বলছে শত্রু সম্পত্তি দখলের ক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের নেতারাও কম যান না। এ তো গেল নেতৃস্থানীয়দের কথা।
তৃণমূলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা মুখে বলেন সংখ্যা লঘুদের স্বার্থ রক্ষায় তারা অঙ্গীকারাবদ্ধ আর বাস্তবে সংকট কালীন সময়ে হয় তারা দুষ্কৃতিকারীদের সাথে একাত্ম হয়ে একযোগে সংখ্যা লঘুদের উপর হামলা চালায় নয়ত পরবর্তীতে ফায়দা লোটার আসায় সংকটাপন্ন সময়ে নিজেরা গা ঢাকা দেয়। কাজেই সংখ্যা লঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কখনোই শুধুমাত্র প্রশাসনের পক্ষে সম্ভব নয়। প্রয়োজন সামাজিক প্রতিরোধ। প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণ।
প্রয়োজন-
প্রথমত: মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচারে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মতই একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত কর।
দ্বিতিয়তঃ যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা। এ ক্ষেত্রে সন্দেহ ভাজন শত . শত গ্রাম বাসির নামে মামলা করার কোন মানেই হয় না। বরং গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বার করে তাদেরকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
তৃতীয়ত: প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাচিত জন প্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন এবং অত্র এলাকায় বসবাসকারী সকল ধর্মের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি করে জন নিরাপত্তা সেল গঠন করা। যারা এই সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে একদিকে যেমন জনসচেতনতা সৃষ্টি করবে অন্যদিকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তারা নির্যাতিত’র পাশে গিয়ে দাঁড়াবে এবং সংখ্যা লঘুদের নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থ হলে দায়ী থাকবে।
চতুর্থত: দলীয় কর্মসূচীর আওতায় হোক কিংবা সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক বোধ তৈরি করতে সকলকে একীভূত হয়ে কাজ করতে হবে। সবার আগে আওয়ামীলীগের তৃনমূলের নেতা কর্মীদের আক্ষরিক অর্থেই জানাতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক বোধ বলতে কি বোঝায়।
পঞ্চমত: দেশের প্রত্যন্ত এলাকার প্রতিটি মসজিদের ইমামদের এবং মসজিদ কমিটির সদস্যদের এ ব্যাপারে সজাগ করে তোলা অত্যন্ত জরুরী। যাতে কোন পবিত্র মসজিদকে এবং মসজিদের মাইক ব্যবহার করে এই ধরনের নাশকতা মূলক কর্মকাণ্ড ঘটানো সম্ভব না হয়।
বরং এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হলে যেন মসজিদের মাইক থেকেই জনসাধারণকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করা হয়। ইসলামের সঠিক জ্ঞান দান করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত এবং তার সহ-গবেষকদের রচিত 'পলিটিকাল ইকোনমিক অব মাদ্রাসা এডুকেশন ইন বাংলাদেশ' পুস্তক থেকে জানা যায়, দেশের মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদের ৯২ শতাংশ সদস্যই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। যাদের মধ্যে কমপক্ষে ২৯ ভাগ সদস্যই জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। বর্তমানে গড়ে প্রতি তিনজন শিক্ষার্থীর একজন মাদ্রাসায় পড়ে।
আর ৮৭ শতাংশ মাদ্রাসাই গ্রামে অবস্থিত। মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৭৫ ভাগ।
অধ্যাপক আবুল বারকাতের দেয়া তথ্যানুযায়ী ১৯৫০ সালে দেশে মাদ্রাসার ছাত্র ছিল ১০ লাখ। ২০০৮ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় এক কোটি। পরিচালনা পরিষদের ২৯ শতাংশ সদস্য জামায়াতে ইসলামী, ২৭ শতাংশ বিএনপি, ২২ শতাংশ আওয়ামী লীগ, বাকিগুলো অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
ড. বারকাতের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ৫০ শতাংশ মাদ্রাসা ছাত্র আদর্শের ব্যক্তিত্ব মনে করেন ধর্মভিত্তিক রাজনীতিবিদ বিশেষ করে দেলওয়ার হোসেন সাঈদী, মতিউর রহমান নিজামী ও গোলাম আযমের মতো মানুষকে। কওমি মাদ্রাসার ৭০ ভাগ এবং আলিয়ার ৬০ ভাগ শিক্ষার্থী মনে করে মাদ্রাসাই বেহেস্তে যাওয়ার সহজ পথ। এমতাবস্থায় মাদ্রাসা শিক্ষা সংস্কার যে কতটা জরুরী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে যতদিন পর্যন্ত এই সংস্কার সাধন সম্ভবপর না হয় সে পর্যন্ত দেশের প্রতিটি মাদ্রাসায় সরকারি বেতনভুক্ত শিক্ষক নিয়োগ করা একান্তই জরুরী। যারা ছাত্রদের এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-ইতিহাস-ঐতিহ্য-কৃষ্টি সর্বোপরি অসাম্প্রদায়িক বোধ সম্পর্কে উপযুক্ত শিক্ষা প্রদান করবেন।
আমাদের এটা মনে রাখা উচিৎ যে,দেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষকে অসচেতন রেখে রাজনৈতিক ফায়দা লোটা হয়ত সম্ভব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন নয়। আর সেটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক বলে দাবী করা বর্তমান সরকারকে আরো বেশি করে বুঝতে হবে।
সঞ্চালক; আপন ভুবন ডট কম
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।