দু’দিনের এই আয়োজন যেন ফিরিয়ে নিয়ে গেল হরিয়ে যাওয়া, বাঁধনহারা দূরন্ত কৈশরে কিংবা শৈশবে। উৎসবে আসা শিশুদের বাঁধ ভাঙা আনন্দের কিছুটা যেন ফুটে উঠছিলো চোখে মুখে আর বাকিটা যেন রয়ে গেল বিস্ময়ভরা চাহনিতে!
স্থানীয় বাসিন্দা নৈরী নিয়ে এসেছিলেন ৪ বছরের ফুটফুটে মেয়ে উলাখিনকে নিয়ে। পেঙ্গুইন ঘুড়ি উড়াতে পেরে যেন বাবা-মাকেই ‘ভুলে’ যাবার অবস্থা।
ঢাকার সালমা হক সমুদ্র সৈকতে গিয়ে পড়েছেন ‘বিপদে’! ৫ বছরের মেয়ে ওয়াসিমা অন্য বাচ্চাদের ঘুড়ি ওড়ানো দেখেই বায়না ধরেছে, ২০ মিনিট ধরে অপেক্ষা করেছেন হাসিমুখে একটি ঘুড়ি পাবার আশায়।
এই আয়োজনের প্রতিপাদ্য ‘প্রকৃতি পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব সবার, ধর্ম যার যার উৎসব আনন্দ সবার’ যেন একাকার হয়ে গেল জলরাশির বিশালতায়।
টুপি, ঘোমটার পাশেই দেখা গেল শাঁখা-সিঁদুরের ঘুড়ি প্রেমিকদের। এমনকি ‘কর্তব্যরত’ পুলিশ সদস্যরাও বাদ পড়েননি! অপুর্ব এক প্রাণের টান দেখা গেল এই ঘুড়ি উৎসব ঘিরে।
বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেড়ারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মৃধা বেনু যথার্থই যোগ করেন ঘুড়ি উড়ানোর আনন্দের বিষয়টি, “এটি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ”
আরও ছিল ঘুড়ির কাটাকাটি, শিশু ও মহিলাদের ঘুড়ি ওড়ানো, রাতে আলোক ঘুড়ি ও উন্মুক্ত আধুনিক ঘুড়ি উড্ডয়ন প্রতিযোগিতা।
আর সন্ধ্যায় ছাড়া হয় সারিসারি ফানুস।
ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
রাজধানী মিরপুরের অধিবাসী আয়শা। তিনি বলেন “উৎসবের কথা জানতে পেরে ৯ বছরের ছেলে জিশানকে নিয়ে একরাত বেশিই থেকে গেলাম কক্সবাজারে। ”
ঢাকার আরামবাগের গোলাম রাব্বানী সমুদ্রে গোসল বাদ দিয়ে সৈকতে উঠে এলেন ঘুড়ি ওড়াতে। সঙ্গে আরও ৬ ভাইবোন।
নিজের ছেলের কাছ থেকে ৫১ বছরের বেলাল হোসেন যখন ঘুড়ির নাটাই হাতে পেলেন তখন তার খুশি হল দেখার মতো।
জীবনে প্রথমবারের মতো ঘুড়ি উড়াতে পেরে যেন স্বপ্নের দেশে হারিয়ে গেছেন ‘ব্যাটমান-ঘুড়ি’ নিয়ে ৫ বছরের রাখাইনশিশু শুশ।
সুদুর বেলজিয়াম থেকে বাংলাদেশি স্ত্রীর সংগে এসেছেন মধ্যবয়ষ্ক উইলি। চমৎকার সৈকতে গোধুলিতে এই আয়োজন দেখে রীতিমতো অভিভূত।
তবে কণ্ঠে ছিল উৎকণ্ঠা, “ঘুড়ি পাবো কখন?” কারণ তখনও ঘুড়ি মেলেনি তার হাতের মুঠোয়।
ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
প্রত্যাশার থেকে লোক সমাগম একটু বেশি হওয়ার কারণেই বার’দুই ঘুড়ি সরবরাহ করতে সদা সাহায্যকারী স্বেচ্ছাসেবকদের হিমশিম খেতে হয়েছে।
তবে উৎসবে যোগদানকারীরা এই দুঃখ ভাগাভাগি করেছেন শেয়ারে ঘুড়ি উড়িয়ে।
শত সমস্যা অথবা সমালোচনার মধ্যেও চমৎকার এই ‘প্রাণের’ মেলাকে সহোযোগিতা করবার জন্য বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনকে বিশেষ ধন্যবাদ দিতেই হবে।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।