আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন কুতুব (বাগী)

একজন ভীরু মানুষ...

অফিস থেকে ফিরছিলাম, ফার্মগেট খামারবাড়ির পাশে এক বিরাট গরু+ছাগল+উটের অসময়ের এক হাট দেখে থমকে গেলাম। কয়েক’শ গরু-ছাগল, ডজনখানেক উট আর ডজন দু’য়েক মহিষ নিয়ে ব্যস্ত ঢাকার রাস্তায় বেশ একটা হাট। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, পশুগুলোর মল-মূত্র পরিষ্কারের জন্য কটকটে হলুদ গেঞ্জি পড়া বেশ কিছু অতি-উৎসাহী থাকলেও হাঁটে কোন ক্রেতা নেই। তাই আমি একটু এগিয়ে গেলাম গরুর বর্তমান বাজার-দর জানার আগ্রহে। গরুর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মালিককে গরুর দাম জিজ্ঞাসা করতেই কটমট করে আমার দিকে তাকিয়ে বলল এসব গরুর বিক্রির না, এগুলান বাবার ওরশের সিন্নির জন্য।

তখন আমার হুঁশ ফিরলো, ডানপাশে চলা বাবা কুতুববাগীর ওরশের তোরজোড় নজরে আসলো আর মনের পটে বাবা কুতুববাগীর চেহারাটা (কেউ দেখে না থাকলে নেটে সার্চ দিয়ে দেখে নিন কারণ দেখার মতই জিনিস!!!) ভেসে উঠল, এই নাহলে বাবার সিন্নি। আমি এবার গরুর পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করলাম, “আচ্ছা এই পীর সাহেব কেমন কামেল মানুষ?” এবং আরও একবার তার অগ্নিদৃষ্টিতে বারবিকিউ হলাম আর জবাব পেলাম, “বেশি কিছু কমুনা, শুধু এইটুক জাইনা রাহেন স্বয়ং জিব্রাইল ফেরেশতা তার কাছে কেবলা নিয়া আসে আর তিনি দিনে তিনবার করে তার তওয়াফ কইরা হজ্ব করেন”। আমার চোখে হঠাত কি যেন হলো, আমি একটা গরু সাথে একটা মানুষের জায়গায় পাশপাশি দুইটা গরু দেখা শুরু করলাম আর মনের ভেতর অনেকদিন আগে শোনা একটা গল্প এসে দাঁড়িয়ে গেল।

গল্পটা এমনঃ
“অনেক দিন আগে একটি গ্রামে হঠাৎ এক হুজুরের উদয় হল। সে বিভিন্ন কথা-বার্তা সহ ইসলামের বিষয়ে নিজের সীমাহীন পান্ডিত্যের কেরামতি দেখাল।

তার আচরণে গ্রামের সহজ সরল মানুষ দারুণ আকর্ষিত এবং আনন্দিত হল। এক কথায় গ্রামের মানুষকে এই লোক মন্ত্রমূগ্ধের মত বশ করে ফেলল। তাই গ্রামের লোকজন ঠিক করল আমাদের গ্রামের ইমামকে বদলিয়ে তাকেই ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। তো কিছুদিন ইমামমিত করে ও চটকদার কথা বলে ভালই চলছিল। একদিন হঠাৎ জামাতে নামাজ পড়ার সময় যেই সবাই সেই নতুন ইমামের সাথে রুকুতে গেল তখনই সবাই শুনল হুজুর বলতে লাগলেন "হুস! হুস! হুস!" কিন্তু তারা কেউ কিছুই বলল না।

এভাবে বেশ কয়েকদিন খালি হুজুর রুকুতে গেলেই এই অদ্ভুত হুস, হুস আওয়াজ করত। সবাই একটু চিন্তিত হয়ে গেল। ব্যাপারটা কি হুজুর আজকে বেশ কয়েকদিন ধরে এইভাবে অদ্ভুত রকমের আওয়াজ করে তাও নামাজের মধ্যে যা ইসলামী রীতির মধ্যে পড়ে না। ঘটনাটা কি! তাই কয়েকজন সাহস করে হুজুরকে একদিন জিজ্ঞাসা করল "আচ্ছা হুজুর আপনি নামাজের রুকুতে গেলে কেন হুস, হুস শব্দ করেন?"। তখন লোকটা বলল "আর বলো না আমি যখন রুকুতে যাই তখন এখান থেকে দেখি যে এক দল নেড়ি কুকুর কাবা শরীফের চারপাশে ঘুর ঘুর করতে করতে এক সময় সেখানে ঢুকে পরতে চায়(নাউজুবিল্লাহ)।

আমি তখন এখান থেকেই হুস, হুস আওয়াজ দিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেই। সবাই আবার নতুন করে টাস্কি খাইল। বাপরে দেখছ যে হুজুরের কত বড় ক্ষমতা এইখান হতে হাজার মাইল দূরের নেড়ি কুত্তা খেদায়া দেয়। তো এই ঘটনা গ্রামের এক চাষার গিন্নী শুনে তার স্বামীকে বলল একদিন হুজুরকে আমাদের বাসায় দাওয়াত দাও। স্বামী গিন্নীর কথামত হুজুরকে দাওয়াত দিতেই তিনি বহুত খুশী এবং দাওয়াত কবুল! তো দিন ক্ষণ মত হুজুর চাষার বাসায় হাজির।

উনাকে মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে তাকে এক থালা ভাত ও এক গ্লাস পানি দিয়ে স্বামীকে বলল তুমি চলে আস। হুজুর ভাবল হয়ত মুরগী, গরু অথবা রুই মাছ সহ ভাল রান্না খাবার আনার জন্য গেছে। কিন্তু হুজুর এভাবে কয়েক মিনিট বসে থাকলেও কেউ এল না। এভাবে ৫ মিনিট ১০ ও যখন ১৫মিনিট হয়ে গেলেও আসল না তখন হুজুর রাগে কাপতে লাগল। তারপর হুংকার দিল বেয়াদপের বাচ্চারা তোরা আমাকে অপমান করতে এখানে এনেছিস! স্রেফ এক থালা ভাত আর এক গ্লাস পানি! তরকারি কোথায়? এই কথা শেষ হওয়া মাত্র চাষার গিন্নী হুজুরের রুমে ঢুকল হাতে একটা ঝাটা নিয়ে, গিন্নী বলল ভাতে হাত দেন হুজুর! হুজুর হাত দিতেই দেখল ভাতের ভিতর একটি ভাজা আস্ত কৈ মাছ।

তখন গিন্নী তেড়ে এসে লোকটাকে পিটাতে শুরু করে বলল ব্যাটা বাটপার "ভাতের নীচে কৈ মাছ দেখ না আবার কাবা শরীফের কুত্তা খেদাও!"

কুত্তা খেদানো আসলেই জরুরি...


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.