মানুষজন বিপদে পড়ে কাস্টোমার কেয়ারে ফোন করে। কিন্তু অবস্থা যা দাড়িয়েছে কাস্টোমার কেয়ারে ফোন করাটাই একটা বিরাট বিপদ। এরা চীনা জোকের মত ফোনে লেগে থাকে;ফোন রাখতেই চায় না। মোবাইল কোম্পানিগুলোর সাথে কোন কারিকুরি আছে নাকি কে জানে। কিছুদিন আগে নিতান্ত বাধ্য হয়ে কিউবি-র কাস্টোমার কেয়ার সেন্টারে ফোন করতে হল।
ফোন করার আগেই মেজাজ খারাপ,টিএন্ডটি আইউটগোয়িং বন্ধ থাকায় মোবাইল থেকে ফোন করতে হল। শুরুর নানা ইতং বিতং শেষে ফোন ধরল এক আপু। পরিচয় দিয়ে বলল, আপনার জন্য কি করতে পারি। আমার সমস্যার কথা বললাম। উনি মনে হয় বঙ্গিম চট্টোপাধ্যায়-এর রচনার শিল্পগুনে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
একটা কথা যেখানে একটা বাক্যে শেষ করা যায় সেখানে উনি সেই বাক্য ভেঙ্গে বারটি বাক্য বানিয়ে আমার মোবাইলের ব্যালেন্সের বারোটা বাজাচ্ছেন। আমার প্যাকেজ চ্যাঞ্জ করতে চাইলাম। উনি কি সব জানতে চাওয়া শুরু করল। কিউবি-র মডেলের ম্যাক নাম্বার;আমার আইডি নাম্বার,ইউজার নাম। এত কিছু জানতে চাচ্ছে,ভাবলাম কখন না আবার জন্মদিন,ব্লাড গ্রুপ,ম্যারিটাল স্টাটাস-ও জানতে চায়।
যাই হোক আপা আমার ফর্মে ব্যবহার করা মোবাইল নাম্বারটাও জানতে চাইল। একটু পর পর বলছে- আমার রিকোয়েস্টের ব্যপারে কাজ হচ্ছে। অনুগ্রহ করে সাথে থাকুন। ভাবখানা এমন যেন অনেকপদিন পর হারানো কোন প্রেমিক খুজে পেয়েছেন। একটু পর হারিয়ে যাব।
তাই বারবার এই কথা বলে সাথে থাকা নিশ্চিৎ করছে। আমি তখন মোবাইল রাখতে পারলে বাচি। সর্বশেষে উনি যখন বললেন, জী স্যার। আপনার রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বলুন আপনার জন্য আর কী করতে পারি।
মনে হল বলি, ‘আর কিছু করতে হবে না। মোবাইল নাম্বার তো রাখছেন, পরেরবার এই নাম্বার থেকে মিস কল দিলে কলব্যাক কইরেন’। আফসোস বলা হলো না। মানবজন্মের এই এক সমস্যা। যা বলতে চাই বেশিরভাগ সময়েই বলতে পারি না।
ধন্যবাদ বলে ফোন রেখে দিলাম। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।