কুষ্টিয়া ও পাবনায় শহীদ মিনার ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বাহান্ন ও একাত্তরের পরাজিত বাঙালিবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রেতাত্দারা এখনো যে লাল-সবুজের এই জমিনে সক্রিয় শহীদ মিনার ভেঙে ফেলার ঘটনা তারই প্রমাণ। উভয় ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর এক বড় অংশ এ ঘটনার পেছনে জামায়াত-শিবির বা জঙ্গিবাদীদের হাত আছে বলে সন্দেহ করেছে। তারা শহীদ মিনার ভাঙার ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করা ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। বাহান্নর ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে সেই বাহান্নতেই প্রথম শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়। পাকিস্তানি শাসকরা পুলিশ লেলিয়ে সে মিনার ভেঙে দেয়। পরবর্তী সময়ে ছাত্রসমাজ এবং বাঙালি জাতির প্রতিরোধের মুখে তারা পরাস্ত হয়। মেনে নেয় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে। শহীদ মিনার স্থাপনের অধিকারও স্বীকৃত হয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ মিনার আবার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের পদলেহী ঘাতক দালালদের আক্রোশের লক্ষ্যস্থলে পরিণত হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সারা দেশের হাজার হাজার শহীদ মিনার ভেঙে তছনছ করে সাম্প্রদায়িকতাবাদী শক্তির প্রতিভূরা। স্বাধীন বাংলাদেশে শহীদ মিনারের মর্যাদা সমুন্নত থাকলেও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর গর্ত থেকে উঠে আসে অন্ধকারের জীবরা। ভাষা আন্দোলনের স্মারক শহীদ মিনার শুধু নয়, মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জন তাদের জিঘাংসার লক্ষ্যস্থলে পরিণত হয়। মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান জয় বাংলা, জাতীয় সংগীত 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি'সহ অনেক কিছুই বাহান্ন ও একাত্তরের পরাজিত শক্তির রোষানলের শিকার হয়। প্রকাশ্যে উচ্চারিত হয় জাতীয় সংগীত পাল্টে দেওয়ার অভিসন্ধি। এমনকি দেশের নাম পাল্টে দেওয়ার পাঁয়তারা চালায় ২৩ বছরের পাকিস্তানি শাসনের উত্তরসূরিরা। বাহান্ন ও একাত্তরের পরাজিত শক্তির প্রতিহিংসাপরায়ণতার শিকার হয়ে পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূলে প্রাণ হারিয়েছে বিপুলসংখ্যক সংস্কৃতিসেবী। উদীচীর সভাস্থলেও চলেছে হত্যাযজ্ঞ। বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার যুদ্ধ ঘোষণার পর দেশের একাধিক স্থানে শহীদ মিনার ভাঙচুরের পেছনে দেশি-বিদেশি কোনো ষড়যন্ত্র জড়িত কি-না উদঘাটিত হওয়া উচিত। এ দুর্বৃত্তপনায় যারা জড়িত তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।