মানুষের মর্যাদাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে মহানবী (সা.)-এর একটি পদক্ষেপ হলো ছোট বড় ভেদাভেদের অমানবিক প্রাচীর ভেঙে ফেলা। আজকের জরাজীর্ণ পৃথিবীতে যে অশান্তি, অনাচার, অসাম্য, হিংসা-বিভেদ, মানহানি, অরাজকতা ও খুনাখুনি চলছে তা থেকে মানবতাকে বাঁচাতে হলে এবং দুনিয়ার বুকে মানবিকতার বিজয় নিশান উড়াতে হলে রাসূল (সা.)-এর প্রবর্তিত আদর্শ অনুসরণ ছাড়া কোনো উপায় নেই। যে নবী (সা.) সাম্য ও মৈত্রীর এমন বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন সেই নবীর উম্মত মুসলমানরাই আজ বিশ্বের সর্বত্র চরম বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার। অথচ আজও মুসলমানরা নবীর আদর্শ লঙ্ঘন করে কোথাও অমুসলিম মানুষদের উপর কোনো অত্যাচার-নিপীড়ন করছে এমন নজির পৃথিবীতে নেই বললেই চলে। আজকের দুনিয়ার অমানবিকতার অন্যতম বিষয় তুচ্ছ রাজনৈতিক স্বার্থে অসহায় ও নিরীহ মানুষের ওপর অত্যাচার ও নিপীড়ন এবং আধিপত্য প্রতিষ্ঠা। পশ্চিমা জাতিগুলো তাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক হীনস্বার্থ উদ্ধারের জন্য হাজার, হাজার মানুষকে নির্বিচারে মেরে ফেলতে পর্যন্ত দ্বিধাবোধ করে না অথচ বিশ্বনবী (সা.) অসহায়, দুর্বল ও পীড়িত মানুষের অধিকার ছাড়া অন্যকিছুই কল্পনা করতে পারেননি। তাদের প্রতি সর্বদাই ছিলেন সদয় ও মহানুভব। পৃথিবীর আদি থেকে আজ পর্যন্ত যত মানুষ এসেছে আর যত মানুষ আসবেন সবার থেকেই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় মানুষ হলেন মুহাম্মদ (সা.)। পাপ, অন্যায়, অপরাধ যাকে কোনো দিন স্পর্শ করতে পারেনি। তার আচরণ, সত্যবাদিতা, ন্যায়পরায়ণতা, চরিত্র মাধুর্য সব কিছু মানুষকে মুগ্ধ করেছে। সৎ ও মানবীয় গুণাবলি তার চরিত্রে বর্তমান ছিল। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইতিহাসের পৃষ্ঠায় সম্পূর্ণ তুলনাহীন একটি জাতির, একটি সাম্রাজ্যের এবং ধর্মের ত্রিমুখী প্রতিষ্ঠাতা। নিরক্ষর হয়েও তিনি আল্লাহর কাছ থেকে নাজিল হওয়া এমন একটি গ্রন্থ বিশ্ববাসীকে উপহার দিয়ে গেছেন। যা বিজ্ঞানীদের জন্য একটি বিজ্ঞান সংস্থা। আইনবিদদের জন্য একটি আইন বিশ্বকোষ, ভাষাবিদদের জন্য একটি শ্রেষ্ঠ ব্যাকরণ গ্রন্থ। মুহাম্মদ (সা.)-কে নির্দিষ্ট কোনো গোত্রে, সম্প্রদায় বা জাতির জন্য প্রেরণ করা হয়নি বরং গোটা মানবজাতিকে মুক্তির পথ দেখানোর জন্যই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলে গেছেন, তোমাদের মাঝে দুটো জিনিস রেখে গেলাম তোমরা এই দুটো জিনিস অাঁকড়ে ধরলে পথভ্রষ্ট হবে না। এক কোরআন ও দুই হাদিস। এ ঘোষণার মাধ্যমে মুসলমানরা যাতে পথভ্রষ্ট না হয় সে নির্দেশনাই তিনি উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য দিয়েছেন।
[বরিশালের দক্ষিণ পাংশা নূরানি তালিমুল কোরআন ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার উদ্যোগে ২৪ ফেব্রুয়ারি বার্ষিক তাফছিরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে প্রদত্ত বক্তৃতার অংশ বিশেষ]
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।