বাকি দুই জঙ্গিসহ পুলিশের গাড়িতে হামলাকারীরা যাতে পালাতে না পারে, সেজন্য সীমান্তে জারি করা রেড অ্যালার্ট। তিন জঙ্গিকে ধেরিয়ে দিতে ইতোমধ্যে ২ লাখ টাকা করে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম জানান, রোববার বিকালে মির্জাপুরের তক্তারচালা এলাকায় পায়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সন্দেহ হওয়ায় একজনকে আটক করা হয়। পরে তাকে জেএমবি সদস্য রাকিবুল হাসান ওরফে হাফিজ মাহামুদ (৩৫) হিসাবে সনাক্ত করা হয়।
“তার গলা, হাতে ও পায়ে ডাণ্ডাবেরির দাগ ছিল।
এর সঙ্গে সদ্য দাড়ি কামানো চেহারা দেখেই আমাদের সন্দেহ হয়। ”
এর আগে টাঙ্গাইলের সখীপুর থেকে জাকারিয়া ওরফে মিলন (২৮) নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ছিনতাই হওয়া তিন জঙ্গিকে বহনকারী গাড়ির চালক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোবাবর সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংয়ের ত্রিশালে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে বোমা মেরে ও গুলি করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবি নেতা সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি (৩৮), রাকিবুল হাসান ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মিজান ওরফে জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজানকে (৩৫) ছিনিয়ে নেয়া হয়।
এ সময় প্রিজন ভ্যানে থাকা পুলিশ কনস্টেবল আতিকুল ইসলাম (৩০) নিহত হন, আহত হন আরো দুইজন পুলিশ সদস্য।
একটি মামলায় হাজিরার জন্য জেএমবির ওই তিন সদস্যকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ময়মনসিংহের আদালতে নেয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর কয়েক ঘণ্টা পর ময়মনসিংহ থেকে টাঙ্গাইল হয়ে পালানোর সময় হামলাকারী দলের একজন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন।
টাঙ্গাইলের সখীপুর থানার ওসি মোখলেছুর রহমান জানান, দ্রুতগতির একটি মাইক্রোবাস সখীপুরের পৌর এলাকার কাছে প্রশিকা এলাকায় একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়।
“ওই গাড়িতে পলাতক তিন জঙ্গি ছিল। দুর্ঘটনার পর আসামিরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
আমরা সেখান থেকে গাড়ি চালক জাকারিয়াকে একটি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও ছয়টি ককটেলসহ গ্রেপ্তার করি। ”
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাহাফুজুল হক নুরুজ্জামান বলেন, “জাকারিয়া ওরফে মিলন চার বছর আগে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পায়। তার বিরুদ্ধে জেএমবি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। সকালের ঘটনায় সে জড়িত ছিল বলে আমরা প্রমাণ পেয়েছি। ”
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “বাকিরা যাতে পালাতে না পারে, সেজন্য সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
তাদের ধরতে আমরা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছি। আশা করি শিগগিরই সবাইকে আটক কতা সম্ভব হবে। ”
এ ধরনের আসামিদের আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে আগামীতে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাহাফুজুল হক নুরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছিনতাই হওয়া জেএমবি সদস্যকে ধরিয়ে দিতে পারলে প্রত্যেকের জন্য ২ লাখ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
“ত্রিশালের ঘটনার পর ময়মনসিংহ ও আশেপাশের সব জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থারসদস্যরা মাঠে রয়েছেন। ”
এ ঘটনায় অতিরিক্ত সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) এস এম মাহাফুজুল হক নুরুজ্জামান, ডিআইজি প্রিজন (সদর দপ্তর) টিপু সুলতান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব খায়রুল কবির মেনন এই কমিটিতে সদস্য হিসাবে আছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ইফতেখারুল ইসলাম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে জেএমবির সাজাপ্রাপ্ত শতাধিক নেতাকর্মী রয়েছেন।
যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারাগারের অভ্যন্তর ও আশপাশের এলাকায় রেড এলার্ট জারি করে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ”
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।