দুঃসাহসিকভাবে পুলিশকে গুলি করে তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার মাধ্যমে বাংলাদেশে জঙ্গি নাশকতার ঝুঁকি আরও বাড়ল বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলোচনায় এ আশঙ্কার কথা জানান সাবেক এই শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশে বিশেষায়িত একটি বাহিনীর প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন তিনি।
মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ বলেছেন, জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। এটি একটি দুঃসাহসিক অভিযানও বটে।
কারণ পুলিশকে গুলি করে বোমা ফাটিয়ে মুখোশধারীরা কাজটি করেছে। আবার ঘটনার জন্য এমন স্থানও বিবেচনা করা হয়েছে, যেখানে তাদের পক্ষে এই ঘটনা ঘটানো সম্ভব হবে। আমাদের নিরাপত্তার দুর্বলতার স্থানটিকে খুঁজে বের করে স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। ফলে তাদের সহজেই পালিয়ে যাওয়াটাও সম্ভব হয়েছে। এখন সুযোগ হয়েছে আমাদের নিরাপত্তার দুর্বলতার বিষয়টিকে নতুন করে খতিয়ে দেখার।
তিনি বলেন, আমাদের সাধারণ নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী পুলিশ বাহিনীর পক্ষে ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়াটা সম্ভব হয় না। তাদের সে ধরনের প্রস্তুতি ও প্রয়োজনীয় ট্রেনিংও নেই। তাই সময় এসেছে এমন একটি বাহিনী করার যারা ঘটনার পর দ্রুত রেসপন্স (প্রতিক্রিয়া) জানাতে পারবে। অর্থাৎ বিশেষায়িত বাহিনীটি প্রস্তুতই থাকবে এ ধরনের জঙ্গি সম্পৃক্ত অপতৎপরতায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। যেমন এবারের ঘটনায় জঙ্গিরা খুব সহজেই অভিযান চালিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে গেছে।
যদি তাদের সঙ্গে সঙ্গে চেজ করার জন্য একটি স্ট্যান্ড বাহিনী ফোর্স (সদা-প্রস্তুত বাহিনী) থাকত তাহলে ভালো হতো। তিনি বলেন, এটা বাংলাদেশে নতুন ঘটনা। এর মাধ্যমে আমাদের চোখ খুলে গেল। এখন প্রস্তুত হতে হবে।
সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় পদে থাকার পর দীর্ঘদিন নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষণার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকা মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ বলেছেন, জেএমবির পুনরুত্থান হয়েছে এটা বলা সম্ভব নয়।
কারণ জেএমবি কখনোই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি। এটা এ ধরনের গোষ্ঠীর একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া যে, কঠিন পরিস্থিতিতে তারা গাঢাকা দেয়। জনগণের মাঝে মিশে যাওয়ার মাধ্যমে নিজেদের আড়াল করে রাখে। আবার পরে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। নাশকতার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
জেএমবির ক্ষেত্রেও এমন হয়েছে বলেই মনে করছেন এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক। আল-কায়েদার বার্তা ও জঙ্গি তৎপরতা কোনো বিশেষ ধরনের হুমকির সৃষ্টি করে কি না জানতে চাইলে মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ বলেন, এটা স্বীকৃত একটি বিষয় যে আল-কায়েদার মতো বড় জঙ্গিগোষ্ঠীর বার্তা ক্ষুদ্র গোষ্ঠীগুলোকে উজ্জীবিত করে। ফলে বড় ধরনের নাশকতা ঘটিয়ে ফেলতে পারে, যা রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থায় আঘাত করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।