প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি ও ভাষা বিবেচনায় সার্ক দেশগুলো এক সূত্রে গাঁথা। জাতিতে জাতিতে মেলবন্ধন সৃষ্টিতে সাহিত্য-সংস্কৃতির মানুষরাই সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে পারে। রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠিত দুই দিনের সার্ক সাহিত্য উৎসবের উদ্বোধনকালে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য বিশেষ তাৎপর্যের দাবিদার। সার্কভুক্ত দেশগুলোর রয়েছে অভিন্ন ইতিহাস। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষার ক্ষেত্রে এ দেশগুলোকে একই পরিবারের সদস্যও বলা যায়। খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, আবেগ, আনন্দ ও বেদনার দিক থেকেও সার্কভুক্ত দেশগুলোর সাধারণ মানুষের মিল লক্ষণীয়। এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে হৃদ্যতার সম্পর্ক বিরাজ করছে শত শত বছর ধরে। ঔপনিবেশিক আমলে শাসন ও শোষণের স্বার্থে শাসকশ্রেণী সাম্প্রদায়িকতার ভেদবুদ্ধিকে ছড়িয়ে দেয়। এ ভেদবুদ্ধি সার্ক অঞ্চলের গণমানুষের ঐক্যে ভাঙন ধরায়। সৃষ্টি করে অবিশ্বাসের পরিবেশ। যা টিকিয়ে রাখে ঔপনিবেশিক শাসনকে। ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের পরও ঔপনিবেশিক আমলে সৃষ্ট বিষবাষ্প থেকে আমরা এখনো রেহাই পাইনি। এই দুর্ভাগ্যজনক অবস্থার অবসান এবং সার্কভুক্ত দেশগুলোর সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের বিকাশ ঘটাতে সাহিত্য ও সংস্কৃতিসেবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। তারা তাদের মানবিকতাবাদী চেতনার মাধ্যমে সার্কভুক্ত দেশগুলোকে এক সূত্রে আবদ্ধ হতে অনুপ্রেরণা জোগাতে পারেন। এই অঞ্চলের গণমানুষের দারিদ্র্যমোচন ও উন্নয়নে কাঁধে কাঁধ রাখার পরিবেশ সৃষ্টিতে রাখতে পারেন কার্যকর ভূমিকা। এ কারণেই সার্ক সাহিত্য উৎসবের উদ্বোধনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী হিংস্রতা ও হানাহানির অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে জীবনমুখী সাহিত্যের ওপর আস্থা রেখেছেন। জীবনমুখী সাহিত্যের বিকাশ সার্কভুক্ত প্রতিটি দেশের মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যেমন অবদান রাখতে পারে, তেমনি সার্কভুক্ত এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের মেলবন্ধন রচনায়ও রাখতে পারে মূল্যবান ভূমিকা। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, ইকবালের মতো প্রথিতযশা সাহিত্যিকের জন্ম সার্কভুক্ত দেশগুলোতে। মানবতার কথা উচ্চারিত হয়েছে এসব মহীরুহের লেখনীতে। তাদের পথ ধরে এ সময়ের সাহিত্যকর্মীদেরও এগিয়ে যেতে হবে মানবিকতা, মৈত্রী ও সহযোগিতার আহ্বানকে সামনে নিয়ে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।