আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশÑ জেএমবি’র উত্থান ও শক্তিশালী হয়ে ওঠার পেছনে ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শীর্ষনেতাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা। তারেক রহমান এবং চারদলীয় জোট সরকারের প্রভাবশালী কয়েক মন্ত্রী-এমপি-নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন কুখ্যাত জেএমবি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই। অভিযোগ রয়েছে, জেএমবির এ উত্থানের পেছনে তারেক রহমান ও সরকারের মন্ত্রী এমপিদের পৃষ্ঠপোষকতার পুরো ঘটনা ঘটেছে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পূর্ণ সমর্থন নিয়েই। প্রধানমন্ত্রী ও তার ছেলেসহ সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা করায় অনেক ক্ষেত্রেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রকাশ্যে কাজ করেছে জঙ্গি উত্থানের পক্ষে। কুখ্যাত বাংলা ভাই ও শায়খ আবদুর রহমান নিজেদের অফিসে নিরাপদে বৈঠক করতো খালেদা জিয়ার ছবি টাঙিয়ে।
স্বঘোষিত আঞ্চলিক শাসন জারি করে জেএমবি রাজশাহীর বাগমারা ও নওগাঁর আত্রাই-রাণীনগরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসের রামরাজত্ব কায়েম করেছিল। জিয়া পরিবারের সঙ্গে বাংলা ভাইয়ের সম্পর্কের গভীরতা এতোটাই বেশি ছিল যে, প্রকাশ্যেই তারেক রহমানকে মোবাইল ফোনে সম্বোধন করতেন মামা বলে।
এখানেই শেষ নয়, ২০০৫ সালে জেএমবি নেতা বাংলা ভাইয়ের সহযোগী খামারুকে আটক করার পর তাঁর মুক্তির ব্যবস্থা করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান। তাঁর হস্তক্ষেপে খামারুকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা। উইকিলিকসের ফাঁস করা মার্কিন দূতাবাসের এক বার্তায়ও আছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গিদের পক্ষে তারেক রহমানের মদদের কথা।
উইকিলিকসের ফাঁস করা বার্তায় দেখা যায়, ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের তখনকার চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জুডিথ চামাসকে একথা জানিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. কামাল সিদ্দিকী। কুখ্যাত বাংলাভাই ও শায়খ রহমানসহ শীর্ষ ৬ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পরও জঙ্গি মদদদাতারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। জঙ্গিবাদে মদদদানের অভিযোগে জোট সরকারের সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক, সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আলমগীর কবীর, রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, সাবেক সাংসদ নাদিম মোস্তফা ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শীশ মোহাম্মদের বিরুদ্ধে রাজশাহীর বাগমারা ও নাটোরের নলডাঙ্গা থানায় পৃথক পৃথক তিনটি মামলা দায়ের ছাড়া আজ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। এদের মধ্যে কেবল সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ত্রাণের টিন আত্মসাতের মামলায় জেল খেটেছেন। আর বাংলা ভাইয়ের মামা বলে যিনি জঙ্গি উত্থানে মদদ জুগিয়েছেন সেই তারেক রহমান লন্ডনে রাজকীয় জীবনযাপন করছেন।
২০০৪ সালে জেএমবি নিয়ে পুলিশের অনেক শীর্ষ কর্মকর্তাই বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জেএমবির কার্যক্রমে সম্মতি ছিল। তার ছেলে তারেক রহমান জঙ্গিদের কোনও নজরদারি সমর্থন করতেন না। এক সময় সাবেক পুলিশ প্রধান নূর মোহাম্মদ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, কিছু মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও ক্ষমতাসীন দল (বিএনপি) নেতারাই জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন।
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম আরও সক্রিয় করার জন্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল আল কায়েদা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরির। গত বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট আমলে ২০০২ সালের মার্চ মাসের প্রথমদিকে বাংলাদেশে আল কায়েদার তৎকালীন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরি নিরাপদেই সফর করেছেন বলে আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোতেও সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
আল কায়েদা নেতা সফরকালে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের আশীর্বাদ নিয়েই বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও অবস্থান করেছেন কয়েক মাস। এসব বিষয় নিয়ে বহুবার প্রশ্ন উঠলেও আজ পর্যন্ত জামায়াত ও বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হয়নি। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সেই আমলেই আফগানিস্তান থেকে ফিরে আসা দুই নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম (বাংলাভাই) এবং শায়খ রহমান দল গঠন করে জঙ্গিবাদী তৎপরতা শুরু করে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় আফগান ফেরত শত শত জঙ্গি। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের আর্থিক সহায়তায় তারা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাংগঠনিক ভিত্তি তৈরি করে, বিভিন্ন সময় যার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এই দুই জঙ্গি নেতার মৃত্যুদ-ের আগে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, তাদের সঙ্গে জামায়াত ও বিএনপির নেতাদের সম্পৃক্ততার কথা। জানা গেছে, জঙ্গি নেতাকর্মীরা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ছত্রছায়ায় চরমপন্থি সদস্যদের উৎখাতের নামে রাজশাহী অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। তাদের এই কর্মকা- নিয়ে মিডিয়া সরব হলেও সরকার ছিল পুরোপুরি নীরব। সরকারের রহস্যজনক নীরবতা নিয়েও গণমাধ্যমে প্রশ্ন তোলা হয়। তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা রাজশাহী অঞ্চলে জঙ্গি নেতা বাংলা ভাইয়ের বর্বরতার কথা তুলে ধরে নজর কাড়েন দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের।
তখন অনেক গণমাধ্যমও শেখ হাসিনার কথায় শুরুতে কান দেননি। এক পর্যায়ে ২০০৪ সালে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে একের পর এক রিপোর্ট বের হয় গণমাধ্যমে। সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই স্বীকার করেন, সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সহায়তায় রাজশাহী অঞ্চলে সে তার কর্মকা- পরিচালনা করছে। এখান থেকেই তাদের কর্মকা- বিস্তৃত হতে থাকে সারা দেশে। বাংলাভাই নিজে সাংবাদিকদের সাক্ষাতকার দিয়ে তার কর্মকা- সম্পর্কে জানান দিলেও তখন সরকার জঙ্গি তৎপরতার উপস্থিতি পুরোপুরি অস্বীকার করে।
তখন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিজেই বলেছেন, বাংলাভাই মিডিয়ার সৃষ্টি। বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। এ সময় জঙ্গি নেতারা সরকারের সহায়তায় রাজনৈতিক নেতাদের মতো চলাফেরাতেই কেবল সীমাবদ্ধ ছিলেন না। জঙ্গিদের পেছনে সরকারের শীর্ষ নেতাদের সমর্থন থাকায় এক পর্যায়ে বাংলা ভাইয়ের মিছিলে সরকারি ও বেসরকারি জীপ, কার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল পাঠানো বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে। পুলিশকে দিতে হয়েছে বাংলা ভাইয়ের কর্মসূচিতে নিরাপত্তাও।
জঙ্গি নেতা সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের মতো ডিসি, এসপিদের সঙ্গে বৈঠক করার সুযোগ পেয়েছে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের বদৌলতে। তবে বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি বলে জঙ্গিদের আড়াল করার খালেদা জিয়ার চেষ্টার কিছুদিন পরই ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৪টি জেলায় একযোগে বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে জেএমজেবি ও জেএমবি তাদের সরব উপস্থিতির জানান দেয়। এ ঘটনাটি জাতিকে স্তম্ভিত ও বিস্মিত করে।
জেএমজেবির মতো জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশÑজেএমবি চট্টগ্রাম থেকে যাত্রা শুরু করে। তারপর সারা দেশে তাদের কর্মকা- বিস্তৃত করে।
জেএমবির নেতৃত্ব দেন শায়খ রহমান। এক পর্যায়ে দুটি দল অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হতে থাকে। এ দুই দলকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে বিএনপি-জামায়াত জোট। জোট সরকারের তৎকালীন উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতায় অভিযুক্ত। এ ছাড়া স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন জেএমবি ও জেএমজেবির কর্মকা- পরিচালনায় সার্বিক সহায়তা দিয়েছে।
বাংলাভাই ১৯৮০ সালে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছিল। তার আগে সে সেখানে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। শায়খ রহমানও সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। এরাই বাংলাদেশে জঙ্গিগোষ্ঠীকে সংগঠিত করে। তাদের সহায়তা করে জোট সরকারের কিছু লোক।
জোট নেতাদের সঙ্গে বাংলা ভাইয়ের সম্পর্কের গভীরতা এতোটাই বেশি ছিল যে, জনসমক্ষে তারেক রহমানকে মোবাইল ফোনে তিনি মামা বলে সম্বোধন করতেন। সরকারি অফিসের কর্মকর্তার মতো কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙিয়ে বাংলা ভাই, শায়খ আবদুর রহমান বৈঠক করেছেন এমন ছবিও পাওয়া গেছে।
আগে পরে নানা ঘটনা ঘটলেও মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি নেতা দুলু ও নাদিম মোস্তফার ক্যাডারবাহিনী রাজশাহীর পুঠিয়া, দুর্গাপুর ও নাটোরের নলডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। নাদিম-দুলু বাহিনীর হাতে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ নির্যাতিত হতে থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এদের নির্যাতনের হাত থেকে সাধারণ মানুষদের রক্ষা করেনি, উল্টো নাদিম-দুলু বাহিনীকে প্রকাশ্যে সহযোগিতা দিয়ে গেছে, পুলিশের নির্লিপ্ত ভূমিকায় সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে।
এ অবস্থায় ২০০৪ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে নাদিম-দুলু বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বহারা ক্যাডাররা ঘোষণা দিয়ে এ্যাকশনে নামে। ২০০৪ সালের ৭ ফেব্র“য়ারি সন্ধ্যায় নাটোরের নলডাঙ্গা এলাকায় সর্বহারা ক্যাডাররা সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর ভাতিজা সন্ত্রাসী গামাকে গুলি ও জবাই করে হত্যা করে। এরপর তারা পুঠিয়ার সাধনপুরে নাদিম মোস্তফার ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুবদলের সন্ত্রাসী পাখি ও দুর্গাপুর বাজারে প্রকাশ্য দিবালোকে যুবদলের সন্ত্রাসী ওয়ার্ড কমিশনার আনোয়ারকে খুন করে। এসব সন্ত্রাসী খুন হওয়ার পর এলাকাবাসী স্বস্তি প্রকাশ করে এবং অনেক স্থানেই তারা মিষ্টি বিতরণ করে। এসব সন্ত্রাসীকে খুন করার কারণে সর্বহারাদের প্রতি জনসমর্থন বেড়ে যায়।
কারণ নাদিম-দুলুর পোষা এসব দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মানুষ দিনের পর দিন থানায় ধর্না দিয়েও কোনো ফল পায়নি।
সর্বহারা ক্যাডাররা জনসমর্থনকে পুঁজি করে এসব এলাকায় ব্যাপকহারে সংগঠিত হওয়ার এক পর্যায়ে ২০০৪ সালের ফেব্র“য়ারি মাসের শেষের দিকে সন্ত্রাসীদের গডফাদার দুলু ও নাদিমকে হত্যার হুমকি দেয়। এ হুমকিতে দুলু এবং নাদিম বিচলিত হয়ে পড়েন। তাঁরা প্রথমে সর্বহারাদের সঙ্গে সমঝোতায় আসার চেষ্টা চালান। এর অংশ হিসেবে ২০০৪ সালের মার্চ মাসে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে সর্বহারাদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক হয়।
মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে সমঝোতা প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার পরও এক পর্যায়ে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সর্বহারাদের শায়েস্তা করার জন্য কুখ্যাত বাংলাভাই ও তার বাহিনীকে নাদিম ও দুলু মাঠে নামিয়ে দেন। এর ফলে সমঝোতা ভেঙে যায়। এর জন্য নাদিম-দুলু ও সর্বহারারা একে অপরকে দায়ী করেন। সে সময় সর্বহারাদের কবল থেকে জীবনরক্ষার কথা বলা হলেও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নিয়েই এদের মাঠে নামানো হয়েছিল বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। সূত্রমতে, জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করেই তাদের মাঠে নামনো হয়।
নির্বাচনের আগেই পুলিশ বাহিনীকে অকার্যকর রেখে বাংলাভাই ও তার জঙ্গি বাহিনীকে দিয়ে মাঠ দখলে রাখতে চেয়েছিল হাওয়া ভবনের কর্ণধাররা। তাদের পরিকল্পনা ছিল, দুই একজন কথিত সর্বহারাকে নির্যাতনের পাশাপাশি ব্যাপকহারে আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা, যাতে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। অপারেশনের প্রথমদিকে বাংলাভাই’র বাহিনী সর্বহারাদের বিরুদ্ধে লোক দেখানো অভিযান শুরু করে জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালায়। অপারেশন শুরুর প্রথম দিনই তারা বাগমারার পলাশী গ্রামে ওসমান বাবু নামের এক যুবককে শত শত মানুষের সামনে প্রকাশ্যে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর ধীরে ধীরে তারা বাগমারা, আত্রাই, রাণীনগর ও নলডাঙ্গা এলাকায় নির্যাতন ক্যাম্প স্থাপন করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ এলাকার সাধারণ মানুষদের ওপর চরম নির্যাতন চালায়।
তারা মাত্র পৌনে ২ মাসে অন্তত ২২ জনকে খুন করে এবং শত শত মানুষকে নির্যাতন করে পঙ্গু করে দেয়। এর পাশাপাশি তারা এলাকায় ব্যাপক লুটপাট চালাতে থাকে।
রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকরা নেপথ্যে থাকায় পুলিশ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা নিয়েই বাংলাভাই ও তার ক্যাডার বাহিনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। নাটোর, নওগাঁ ও রাজশাহীর তৎকালীন পুলিশ সুপাররা সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে বাংলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেন। সাবেক উপমন্ত্রী দুলু ও সাবেক সাংসদ নাদিম মোস্তফা হাওয়া ভবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকায় হাওয়া ভবনের মাধ্যমে বাংলাভাই বাহিনী প্রশাসনিক ও আর্থিকসহ সকল প্রকার সহযোগিতা পায়।
রাজশাহী রেঞ্জের তৎকালীন ডিআইজিপি (পুলিশের সাবেক আইজি) নূর মোহাম্মদ বাংলাভাইকে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নিলে নাদিম, দুলু ও হাওয়া ভবনের চাপে তাকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।