আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উচ্চশিক্ষার ভ্রান্তনীতি, সদিচ্ছাই অর্থায়নের সমাধান



ড. মঞ্জুরে খোদা

ভূমিকা
উচ্চশিক্ষার আর্থিক দায় কার এই বিষয় নিয়ে দেড় দশকের অধিক সময় ধরে বিতর্ক চলছে। কিন্তু তা কেবল বিতর্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, কর্তৃপক্ষ যখন তা কার্যকর করতে গেছে দেশের প্রায় সব প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতস্ফুর্ত আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে উঠেছে এবং তা সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ অনুযায়ী মঞ্জুরি কমিশনের কৌশলপত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরণের ভর্তূকি তুলে নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। ২০ বছর মেয়াদী (২০০৬-২০২৬) দীর্ঘ এই পরিকল্পনা চারটি ধাপে বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীণ আয় থেকে সেই অর্থের সংস্থান করার কথা বলা হয়েছে।

তাদের সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ব্যয়ের ৫০ শতাংশ আসতে হবে তাদের নিজস্ব আয় থেকে আর সে দায় ছাত্রদেরই নিতে হবে। তারই অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি বৃদ্ধি ও সান্ধ্য কোর্সের ঘোষণা করা হয়। সরকারের এই নীতি-কৌশল আসলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্র পাল্টে তাকে মুনাফা তৈরীর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবে! মেধার ভিত্তিতে ভর্তি হওয়ার এই সুযোগ থেকে ক্রমে দেশের মধ্যবিত্ত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বঞ্চিত হবে। সরকারের এই বিপদজনক ভ্রান্তনীতি ও উচ্চশিক্ষার অর্থায়নের আলোচনা এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য।


উচ্চশিক্ষায় সরকারের নীতি ও কৌশল
জাতীয় শিক্ষানীতির উচ্চশিক্ষার নীতি ও কৌশলে উল্লেখ আছে, “উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য হবে জ্ঞান সঞ্চারণ ও নতুন জ্ঞানের উদ্ভাবন এবং সেই সঙ্গে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা।

...বর্তমান প্রচলিত উচ্চশিক্ষাব্যবস্থা বাংলাদেশের মত একটি স্বাধীন দেশের প্রয়োজন সম্পুর্ণভাবে মেটাতে সমর্থ নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চশিক্ষার সামগ্রিক ব্যবস্থায় পূর্ণবিন্যাস আবশ্যক। ...উচ্চশিক্ষার আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার জন্য শিক্ষাখাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে হবে। ...বর্তমান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ভর্তি ফি খুবই সামান্য। ...অভিভাবকের আর্থিক সচ্ছলতার প্রত্যায়ন পত্রের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর বেতন নির্ধারণের চেষ্টা করা হবে।

...মেধা ও অভিভাবকের আর্থিক সচ্ছলতার নিরিখে পর্যাপ্ত পরিমান বৃত্তি প্রদান করা হবে। ...এই নীতিমালা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করতে পারে। ” সেক্ষেত্রে বর্তমান শিক্ষানীতিকে ইউজিসি’র সুপারিশের নির্দেশিকা বলা যেতে পারে।

নয়াউদারতাবাদের একটি প্রধান নীতি হলো অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে সরকারের নিয়ন্ত্রন অপ্রয়োজনীয়, কারণ এই মতবাদে মনে করা হয় সরকারের অংশগ্রহন ছাড়াই এর অর্থনীতি নিজস্ব নিয়মে চলতে সমর্থ। আর এই তত্ত্বের সাথে যুক্ত হয়েছে বাজার অর্থনীতির ধারন।

। রাজনীতি ও প্রশাসনের ক্ষেত্রে আবার অনুসরণ করা হয় এর উল্টো নীতি। সরকার পয়সা দেবে আটআনা কিন্তু খবরদারি করবে ষোলআনা! যারা উচ্চশিক্ষার ব্যয় নিয়ে উন্নত দেশের কথা বলেন, সেই সব দেশের মাথাপিছু আয়, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইত্যাদির বিবেচনায় তাদের উচ্চশিক্ষার ব্যয় নাম মাত্রই বলা যায়। জার্মান, ইতালি, কানাডাসহ অনেক দেশেই এই ব্যবস্থা প্রচলিত। উপরন্তু সেখানে শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি নির্ধারিত হয় তাদের পরিবারের বাৎসরিক আয়ের ভিত্তিতে, সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সূদবিহীন শিক্ষাঋণ(ক্ষেত্র বিশেষে তা মওকুফের ব্যবস্থা), মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আছে পর্যাপ্ত বৃত্তি ও বরাদ্দ, খন্ডকালীন কাজের ব্যবস্থা, পরিবহন, চিকিৎসা ও বিভিন্ন ধরণের ছাড়ের সুবিধা ইত্যাদি।

যার কারণে শিক্ষার্থীকে অর্থের অভাবে তাদের লেখাপড়া-গবেষণা বন্ধ করতে হয় না। কিন্তু বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় এই তত্ত্বের অনুসরণ কতটা যুক্তিসঙ্গত ও গ্রহনযোগ্য, এই প্রশ্নের মীমাংসা এই মুহুর্তে অবশ্যই গুরূত্বপূর্ণ।


শিক্ষার্থীর ব্যয় ও উচ্চশিক্ষা ভাবনা
পত্রিকায় দেখলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন এন্ড ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগে অনার্সে ভর্তি হতে লাগবে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা! বর্তমান জিডিপি অনুসারে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১০৪০ ডলার মানে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এই আর্থ-সামাজিক কাঠামোয় মধ্যবিত্তরা কি এই অংক দেবার সামর্থ্য রাখে? মধ্যবিত্তের জন্য যে অংক যোগাড় করা কঠিন, তাতো নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের জন্য অসম্ভব! তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কি কেবল উচ্চবিত্তের ছেলে-মেয়েরাই পড়বে? এই নীতি উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে মধ্যবিত্ত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আখের ছোবড়ার মত ছেঁটে ফেলবে। সরকার উচ্চশিক্ষায় অর্থবরাদ্দকে বিনিয়োগ বলছে, যদি বিনিয়োগই হয় তাহলে কোন বিবেচনায় তা অলাভজনক? বিনিয়োগ ও মুনাফাই যদি উদ্দেশ্য হয় তাহলে প্রশ্ন সামরিকখাতে বিনিয়োগ কোন বিবেচনায় লাভজনক?

বলা হচ্ছে যাদের সঙ্গতি নেই তাদের জন্য ব্যাংক আছে ঋণ।

তারমানে বৃহৎ ও ক্ষুদ্র পুজিঁ ঋণের জালে বাঁধতে চায় মেধাও। ক্রমান্বয়ে এলিটদের ছেলে-মেয়েরা কেবল পড়বে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। ব্যতিক্রম বাদে যারা বাংলাদেশের সমাজ-রাজনীতি-প্রকৃতি-পরিবেশ বিষয়ে উন্নাষিক। তাতে বর্তমান ধারার ব্যক্তি ও পরিবারকেন্দ্রীক লুটেরা রাজনীতির নির্বিঘ্ন পরিবেশ তৈরী হবে। বৃহৎ পুঁজির বাণিজ্যের সুযোগ হবে নিরঙ্কুশ, আর কমিশন ও উচ্ছিষ্ট ভোগীদের সাথে যুক্ত হবে আরেকটি নতুন অংশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীন আয় বাড়ুক তা সবাই চান, যেমনটি চায় সরকার। কিন্তু সেটা কিভাবে? আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি, ব্যয়বৃদ্ধি ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ার সাথে সাথে পুঁজিবাদি ও কল্যানরাষ্ট্রেও বেতন-ফি বৃদ্ধির একটি স্বীকৃত প্রক্রিয়া আছে। সামর্থ বৃদ্ধি আর মুনাফার প্রশ্ন এক বিষয় না। পাবলিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে আমাদের দেশে পেশাদারিত্ব, দলবাজি, রাজনীতির যে চরিত্র তাতে এই ব্যবস্থা কার্যকর করা মানে এগুলোকে ধ্বংস ও লুটপাটের আরেকটি ক্ষেত্র তৈরী বৈ অন্য কিছু নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য নিশ্চয়ই মুনাফা করা নয়।

মুনাফাই যদি উদ্দ্যেশ্য হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় না খুলে যেহেতু এদের কিছু জায়গা-জমি আছে সেখানে দোকান, মার্কেট, এপার্টমেন্ট, গার্মেন্টস করে ভাড়া দিলে শিক্ষকদের রাত-দিন ২ শিফটে ক্লাস নিতে হবেনা। কেরানি দিয়ে কেবল মাস-বছরের ভাড়া গুনলেই হবে। কর্তৃপক্ষের একটি অংশ দলবাজিতে যে পরিমান সময় ব্যয় করেন সেই সময় যদি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সৃজনশীলতার কাজে লাগাতেন তাহলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বার্ষিক আর্থিক সংকট প্রায় ৫০ কোটি টাকা, যে অংকের জন্য সরকার ও কর্তৃপক্ষ একটি বিশ্ববিদ্যালকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছেন! যেখানে শিক্ষায় বিনিয়োগের ফলাফল প্রমানিত, এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সুফলে উন্নত, উপকৃত, বিকশিত, হয় রাষ্ট্র, সমাজ, প্রকৃতি ও পরিবেশ।


উন্নত বিশ্বে ব্যয়বৃদ্ধিঃ আমার অভিঙ্গতা
এশিয়ার দেশ জাপানের একটি সরকারী এ্যপার্টমেন্টে আমি ভাড়া থাকি।

বাসাভাড়া নির্ধারিত হয় পরিবারের বাৎসরিক আয়ের উপর কিন্তু গাড়ির পার্কিং ফি আলাদা এবং তার সাথে উপার্জনের কোন সম্পর্ক নাই, তা সবার জন্য সমান ভাবে প্রযোজ্য। গতবছর নভেম্বরে সিটি অফিস থেকে একটি চিঠি পেলাম তাতে লেখা আছে আমার পার্কিং ফি বাড়বে। আমার বর্তমান পার্কিং ফি ৪৫০০ ইয়েন তা ৫০০ ইয়েন বাড়িয়ে ৫০০০ ইয়েন করা হবে। কিন্তু এই ৫০০ ইয়েন হটাৎ করে বাড়বে না, তা বাড়বে ৩ ধাপে মানে আগামী ৩ বছর যাবত। যেমন, ২০১৪’র এপ্রিল ১০০ ইয়েন, ২০১৫’র এপ্রিলে ২০০ ইয়েন এবং ২০১৬’র এপ্রিলে ২০০ ইয়েন।

তারমানে ৩ বছর পরে আমার পাকিং ফি ৫০০ ইয়েন বেড়ে ৪৫০০ থেকে ৫০০০ ইয়েন হবে। এবং ঠিক ৩ বছর ৬ মাস আগে আমি তার নেটিশ পেলাম। জাপান একটি সভ্য, উন্নত ও গণতান্ত্রিক দেশ যেখানে নাগরিকদের আয় বন্টনের একটি ভারসাম্য আছে এবং সবাই তাদের আয় দিয়ে একটি নিরাপদ ও মার্জিত জীবন-যাপন করতে পারে। ৫০০ ইয়েন তাদের জন্য খুব সামান্য অর্থ যা দিয়ে ২টি ফুলকোপি পাওয়া যায় মাত্র। তারপরও এই সামান্য অর্থও যেন নাগরিকদের মাসিক-বাৎসরিক হিসেবের এতটুকু বিড়ম্বনার কারণ না হয় তার জন্য কত সতর্কতা, কত দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা! আর আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন-ফি রাতারাতি বাড়িয়ে বর্তমান যা আছে ৭৮২৫ টাকা থেকে ৩ গুণ বাড়িয়ে ২০ হাজার ১০০ টাকা করে, তারপরও কর্তৃপক্ষ বড়গলা করে বলবে এটা সামান্যই বাড়ানো হয়েছে।

প্রায়ই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও নীতিনির্ধারকরা কথায় কথায় উন্নত দুনিয়ার উদাহরণ দেন, তাদের কাছে এই সব দৃষ্টান্ত কি খুব অজানা? এদের অনেকেরই উন্নত দেশগুলোতে থাকার ও ঘোরার অভিজ্ঞতা আছে। জাপানের মাথাপিছু আয় ৪৬৭২০ ডলার আর বাংলাদেশের আয় ১০৪০ ডলার যেখানে ৫০০ ইয়েন (৪০০ টাকা) বাড়ানোর জন্য ৪ বছর আগের সিন্ধান্ত নিয়ে ৩ বছর ধরে বাস্তবায়ন করে, আর আমাদের দেশে বাজেট ঘোষনার আগেই জিনিষ-পত্রের দাম বাড়ে। কারণ ফড়িয়ারা জেনে বসে আছে কিসের দাম ও ট্যাক্স বাড়বে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার ব্যতিক্রম কিছু করেন নাই।
কেউ প্রশ্ন করতে পারেন ইউজিসি তো ৪ স্তরে ২০ বছরের পরিকল্পনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নের কথা বলেছে।

প্রশ্ন, একেক ধাপেই যদি ৩ গুন করে বাড়ানো হয় ৪ ধাপে ৩ গুণ করে বাড়ালে তা হবে ১২ গুণ অর্থাৎ ৯৩,৯০০ টাকা। আর যা কেতাবে লেখা আছে জনসমক্ষে তা প্রকাশ করা হয়নি। সেটা কি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কোন ভাবে সমর্থন ও গ্রহনযোগ্য?


উচ্চশিক্ষায় বৈষম্যের একটি খন্ডচিত্র
ইউজিসি’র উপাত্তে তথ্য মন্ত্রনালয়ের চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর থেকে প্রকাশিত ‘সচিত্র বাংলাদেশ’ মে, ২০০৯ সংখ্যায় বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার কিছু ব্যয় উল্লেখ করেছে। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পিছু ব্যয়ের একটি পরিসংখ্যান পাওয়া যায়। এতে দেখা যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছাত্রের পেছনে ব্যয় হয় বছরে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার উপরে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীপিছু বছরে ব্যয় পড়ে ৫২ হাজার টাকার বেশি। অন্যদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছাত্রের পেছনে ব্যয় মাত্র ৭৪৫ টাকা। প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশের সবচেয়ে পুরনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির বছরে শিক্ষার্থীপিছু ব্যয় ৪৩ হাজার ৬৯২ টাকা। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ব্যয় ১ লাখ ৪৩ হাজার টাকারও বেশি। ইন্ডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয় প্রায় ৮৮ হাজার টাকা।

এটি ২০০৭ সালে প্রকাশিত তথ্য, এখন হয়তো তার কিছু পরিবর্তন ঘটেছে।


সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনা করলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ প্রায় ৭০ থেকে ১৮৮ গুণ কম। এক বিশাল বৈষম্য ও বঞ্চনার স্বীকার এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা, আর তাদেরকেই বলা হচ্ছে, দ্রুত নিজের পায়ে দাঁড়াতে। তার একটাই উপায়, যত ব্যয় তা আদায় করতে হবে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে। যেমনটি করছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

বেতন-ফি বেশি নেয়ার অর্থ কি সবসময় মানসম্পন্ন জ্ঞান অর্জনের নিশ্চয়তা? তারমানে কি সবচেয়ে কম যোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এখানে পড়েন ও পড়ান? এক দেশের একই সরকার ও নীতির কেন এই ভিন্নভিন্ন বাস্তবতা? তাকে মেনে নেয়া মানে তো একটি অযৌক্তিক ও অনৈতিক বিষয় সমর্থনের অপরাধ। তাদের মনে যে বৈষম্য ও নীতিহীনতার বীজ বুনে দেয়া হচ্ছে, সেই বৈষম্যের স্বীকার সুবিধাবঞ্চিত প্রজন্মের কাছ থেকে রাষ্ট্র ও সমাজ কিভাবে সুস্থ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখবে।

ফিগারঃ ১, বিভিন্ন পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী প্রতি খরচের একটি তুলনামূলক চিত্র


শিক্ষার বিনিয়োগ কি সামরিকখাতের চেয়ে কম গুরূত্বপূর্ণ?
শিক্ষার বিনিয়োগ সবচেয়ে নিরাপদ, ঝুঁকিমুক্ত, দীর্ঘমেয়াদী ও বহুমাত্রিক। আর তা নির্ভর করে এ বিষয়ে উপযুক্ত নীতি, কৌশল ও ব্যবহারের উপর। প্রখ্যাত চৈনিক দার্শনিক, শিক্ষক ও রাজনীতিক কনফুসিয়াস (খ্রীষ্টপূর্ব ৫৫১-৪৭৯) বলেছিলেন, If you plan for a year, plant a seed. If for ten years, plant a tree. If for a hundred years, teach the people. When you sow a seed once, you will reap a single harvest. When you teach the people, you will reap a hundred harvests. কনফুসিয়াস যে সত্য উপলব্ধি করেছিলেন প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে আমাদের শাসকরা তা জানলেও কতটা মানেন তা নিয়ে প্রশ্ন জাগে, যখন তারা শিক্ষার মত অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগে অনীহা প্রকাশ করে।

যেখানে বাংলাদেশের মত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মানবসম্পদই হচ্ছে প্রধান উপাদান (active agencies) আর সেই মানবসম্পদের উপযুক্ত ব্যবহার জ্ঞান-বিজ্ঞান-শিক্ষা-প্রশিক্ষন দিতে সরকারের তহবিলে পড়ে টান।

২০১২-১৩’র তুলনায় ২০১৩-১৪’র বাজেটে সামরিক খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ০.৭% আর শিক্ষাখাতে বাজেট কমেছে ০.৮% তাহলে কি আর চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হয় সরকার কোন খাতকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু এই অধিক গুরুত্ব দেয়ার সাথে কি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কোন প্রত্যক্ষ সম্পর্ক আছে? কিন্তু শিক্ষার সাথে একটি সমাজের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সম্পর্ক সরাসরি। যেহেতু শাসকদের চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম একটি সুশৃংখল বাহিনী তাদের আস্থায় নেয়ার বিষয়ের সাথে আছে নানা হিসেবে-নিকেষ। সামরিক বাহিনীকেও যদি বলা হয় তাদের আভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধি করতে, আলু-পটলের চাষ করতে হবে, বিষয়টি কি ঠিক হবে? এতে যেমন তাদের পেশাগত দক্ষতা ও মর্যাদা রক্ষা হবেনা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও বিষয়টি অভিন্ন সত্য।

২০১৩’র জানুয়ারীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়ার সাথে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়বাবদ ১ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা) একটি চুক্তি করেছেন। যে টাকা ৩২ টি বিশ্ববিদ্যালেয়ের প্রায় ৭ বছরের খরচের সমান! শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের কথা বললেও সামারিকখাতে খরচে অকৃপন! কোন বিবেচনায়, বলবেন কি?


সমস্যা অর্থের, নীতির না সদিচ্ছার?
সরকারের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণী প্রতিবেদন থেকে জানা যায় শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার কথা। এবার দেখা যাক বাস্তব চিত্রটা কি? ২০০১-০২ সালে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ ছিল ৩২২৭.৫২ কোটি টাকা, অর্থাৎ জাতীয় বরাদ্দের ১৫.৯১% এবং ২০১৩-১৪ সালে ১৩১৭৯.২৩ কোটি টাকা অথাৎ জাতীয় বরাদ্দের ১১.৫৮%। সাধারণভাবে টাকার অংক বাড়লেও শিক্ষামন্ত্রনালয়ে রাজস্ব ও উন্নয়ন বরাদ্দ কমেছে ৪.৩৩%। বাজেটের আকার যত বড় হচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে, শিক্ষাব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু শিক্ষাবাজেট ততো কমছে।

ফিগার ২এ রেখাচিত্রের সাহা্য্যে তা দেখানো হয়েছে। শিক্ষাখাতের বরাদ্দ না বাড়িয়ে যদি তার ধারাবাহিকতা রক্ষাকরা যেত তাহলে সরকার যে শিক্ষারমান উন্নয়নের কথা বলেছে তা করা সম্ভব হতো। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপর এই দায় চাপানোর নয়া ফন্দি আটতে হতো না।

ফিগারঃ ২, গত ১৩ বছরে (২০০১-২০১৪) শিক্ষামন্ত্রনালয়ে বরাদ্দ রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেটের অর্থের পরিমান ও শতকরা হার


২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতুতে দূণীতির অভিযোগে তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি ১.২ বিলিয়ন ডলার চুক্তি বাতিল করে। তখন সরকার ঘোষণা করল দেশের নিজস্ব আয় দিয়েই পদ্মাসেতু করা হবে।

বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিক, আবুল বারাকাত, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি আয়োজিত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনের সভাপতিত্বে বলেন- বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ উৎস খেকে ১টা নয় ৪টা সেতুর অর্থ যোগাড় করা সম্ভব। এবং কোন কোন উৎস থেকে কিভাবে, কতটাকা সংগ্রহ করা হবে তাও দেখিয়েছিলেন। পদ্মাসেতুর বাজেট ধরা হয়েছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা আর সেখানে তিনি মোট ১৪ টি উৎস খেকে ৯৮ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার চাঞ্চল্যকর তথ্য উপস্থাপন করেছিলেন। সেই তথ্য্ যদি রুপকল্প না হয় তাহলে তো বলতেই হয় সদিচ্ছা থাকলে উপায়ই সামর্থ বাতলে দেবে।


গত সরকারের সময় ১৮০ জন সাংসদের বিলাশবহুল গাড়ির পেছনে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি প্রায় ৫৫৫ কোটি টাকা, যা সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচের প্রায় অর্ধেক।

আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক ঘাটতি পুরণে ধান্দা করতে হয় বাণিজ্যের! ছাত্রদের বুকে গুলি, বিশ্ববিদ্যালয়ে নৈরাজ্য ও বিভক্তি! সরকারের বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসের এই আত্মঘাতি সিন্ধান্ত থেকে সরে না এসে ছাত্রদের সাথে পাঞ্জার নীতি মারাত্বক ভুল। জাতীর অভিভাবক হিসেবে সরকার কোন ভাবেই সন্তানের সাথে একাজ করতে পারে না! অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এবারের বাজেট হবে প্রায় আড়াই লক্ষ হাজার কোটি টাকার! শিক্ষাবাজেট কি আবারও হবে সর্বোচ্চ বরাদ্দের শুভঙ্করের ফাঁকি?


কেন শিক্ষাখাতের দায় সরকারের
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে মেধার ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি হতে হয়। সেখানেও উচ্চবিত্তের সন্তানরা নামিদামি স্কুল-কলেজ থেকে পাশ করে, বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের কোর্স, গৃহশিক্ষকের সাহায্য নিয়ে এগিয়ে থাকে। সেখানে অল্পআয়ের সাধারণ মানুষদের উচ্চবিত্তদের সাথে নানা মাত্রিক প্রতিযোগিতায় টিকতে হয়। সেই অসম প্রতিযোগিতার সুযোগটিকেও তারা দূরুহ করে তুলছে কথিত সুচতুর এই সুপারিশের মাধ্যমে।

সরকার বলছে, “দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রদের” বৃত্তির ব্যবস্থা করবে। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যে সব শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে তাদেরকে অনেক কঠিন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সেটি অর্জন করতে হয়। প্রায় ১০০ জনের মধ্যে একজন এই সুযোগ তৈরী করতে পারে। সঙ্গতই বলা যায় এরা দেশের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ। তাহলে রাষ্ট্রের সম্পদ এই মেধাবী শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব তো সরকারের নেয়া উচিত।

শিক্ষামন্ত্রনালয়ের তথ্য (২০১২) অনুযায়ী দেশে সব মিলিয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ কোটি ৩৫ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫০১ জন আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩ লক্ষ ১৬ হাজার ৩৩১ জন ( তথ্যের অসঙ্গতি ১৭৭৮৫৭ ইউজিসি, ২৯৭৫৮২ বেনবেইস)। তারমানে দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহন করছে বিভিন্ন পর্যায়ে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর ১ শতাংশের মত। যেখানে নিবন্ধনের সংখ্যা ৯০ শতাংশের মত হলেও ঝরে পড়ার সংখ্যা প্রায় অর্ধেক সেই হিসেবে উচ্চশিক্ষার্থীর সংখ্যা হবে প্রায় ০.৫ শতাংশেরও কম, আর ইউজিসি’র তথ্য সঠিক হলে এই হার হবে প্রায় এর অর্ধেক! এর সাথে কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যুক্ত করলে এই হার আরও কমবে। জনসংখ্যার তুলনায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়ে অতিক্ষুদ্র তরুণ নাগরিকদের দায়িত্ব রাষ্ট্রের না নেয়ার তো কোন কারণ দেখছি না।

সরকার বলছে বর্তমানে যে পরিমান বেতন-ফি নেয়া হয় তা খুবই কম, সে কারনে এই অংক বাড়াতে হবে।

কিন্তু এখানে পড়িয়ে সব শিক্ষার্থীদের সবার কি সেই সামর্থ আছে? অনেক উচ্চবিত্তের সন্তানেরা এখানে পড়ছে সেটা সত্য, কিন্তু সেটা কত শতাংশ? সরকারের কাছে কি সেই তথ্য আছে? তাহলে তাদের কাছ থেকে উচ্চহারে ট্যাক্স নেয়া হোক। পৃথিবীর অনেক দেশে পরিবারের উপার্জনের প্রমান সাপেক্ষে তাদের বেতন নির্ধারণ করা হয়। জাপান, জার্মান, ফ্রান্সের নরওয়েসহ বিভিন্ন দেশে এই পদ্ধতি কার্যকর। কিন্তু আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে যেখানে আয় বৈষম্য প্রবল এর সামাজিক ও মনস্তাত্তিক প্রভাব হবে নেতিবাচক। বিধায় রাষ্ট্র একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ধনী-গরীর নির্বিশেষে সবার জন্য এই সুযোগ সার্বজনীন করবে এটাই কাম্য।

তাতে রাষ্ট্র ও তরুণ নাগরিকদের মধ্যে পারস্পারিক আস্থা ও দায়বদ্ধতার ক্ষেত্র তৈরী হবে।


উপসংহার
উচ্চশিক্ষার বিনিয়োগে সমাজের চেয়ে ব্যক্তি অধিক লাভবান হয় এ কথা সত্য। একইসাথে গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার প্রবণতা হচ্ছে শিক্ষার ধারাবাহিকতা, তারসাথে ধ্রুপদি অর্থনৈতিক উন্নয়নের সংযোগ ঘটানো সম্ভব হয়নি। মূলত বিনিয়োগের ফল ও শ্রমশক্তির উৎপাদনশীলতা নির্ভর করে অনেক ধরণের নিয়ামকের উপর। বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারার অনেক কিছু অর্থনীতির স্বীকৃত সূত্র ও তত্ত্বের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

দেশে শিক্ষা নিয়ে সমন্বিত ও বড় কোন গবেষণা আমার চোখে পড়েনি, কিন্তু সম্প্রতি কেউ কেউ এই বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। অন্য দেশের উদাহরণ দিচ্ছেন। উদ্দেশ্যটা আমার কাছে পরিষ্কার না! যাইহোক, উচ্চশিক্ষায় ব্যক্তির অর্জনগুলো চুড়ান্ত বিচারে রাষ্ট্র ও সমাজেকে সমৃদ্ধ করে এগিয়ে নেয়। একজন উচ্চশিক্ষিত তরুণ উদ্যোক্তা যখন কোন শিল্প গড়ে তোলে তখন দক্ষ শ্রমশক্তি ও প্রশাসনের দরকার হয়। শিল্পের বহুমুখী সংশ্লিষ্ট শিল্প গড়ে ওঠে, একই সাথে দেশের আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।

সরকার, প্রশাসন, রাজনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, সেবাখাতসহ বিভিন্ন সেক্টরে উচ্চশিক্ষিত সৃজনশীল ব্যক্তিরা নানামাত্রিক ভূমিকা রাখে। উচ্চশিক্ষার অর্থায়নের বিপক্ষে যারা নানা ধরনের কথা বলছেন, তাদের কয়জনের পরিবারের সেই সামর্থ ছিল উচ্চমূল্যে তা গ্রহন করার? এক প্রজন্মেই তাদের চরিত্রের এত বিপরীতিমূখী অবস্থান সত্যিই বিস্ময়ের! মানুষকে বিভ্রান্ত না করে উচ্চশিক্ষার অর্থায়ন নিয়ে একটি যুক্তিপূর্ণ ও গ্রহনযোগ্য আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা জরুরী। সরকারকেই এই উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও মানবসম্পদ উন্নয়নের সাথে এই প্রশ্ন অবিচ্ছেদ্য।

ড. মঞ্জুরে খোদা টরিক, লেখক, গবেষক, ইনস্টিটিউট অব পলিসি সাইন্স, জাপান


দোহাইঃ
ড. মঞ্জুরে খোদা, মানবসম্পদ উন্নয়নে শিক্ষা, বিনিয়োগ ও সরকারের দায়, ফেব্রুয়ারী ১০, ২০১৪, বাংলানিউস (অনলাইন সংবাদপত্র)
অজয় দাস গুপ্ত, উচ্চশিক্ষার ব্যয় কে বহন করবে?, দৈনিক সমকাল
ব্যনবেইস, Click This Link
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (UGC), access on March 3, 2014 http://www.ugc.gov.bd/
চলচিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, তথ্যমন্ত্রনালয় মে, ২০০৭
বাংলাদেশ শিক্ষামন্ত্রনালয় access on March 3, 2014 Click This Link
জাতীয় শিক্ষানীতি (উচ্চশিক্ষা অধ্যায়) শিক্ষামন্ত্রনালয়, ২০১০
ড. সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম, স্নাতক রাষ্ট্র বিজ্ঞান, ঢাকা, বাংলাদেশ, ২০০৪
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশ লিফলেট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
Faisal Rahman, Fee hike move by public varsities irks ex-student leaders, UNB (report), February 14, 2014
বিশ্বব্যাংক, access on February 21, 2014 http://data.worldbank.org/country
Dr. Monjure Khoda, (2011). The Role of Education in the Socio-Economic Development of Bangladesh: Problem and Prospects (PhD thesis, unpublished), Graduate School of Policy Studies, Aichi Gakuin University, Japan.





অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.