দুর্নীতির মামলায় বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন ও পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশপ্রাপ্ত রেলওয়ে পুলিশের এসপি মোস্তফা কামালকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের আদেশ বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। এর আগে ২২ জানুয়ারি মোস্তফা কামালকে জামিন দিয়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় সাময়িকভাবে স্থগিত করেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।

গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর রেলওয়ে পুলিশের এসপি মোস্তফা কামালকে একটি দুর্নীতির মামলায় যাবজ্জীবন ও পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালত। তিনি সর্বমোট ৩৫ বছরের কারাদণ্ড পান। এসএ পরিবহনের স্বত্বাধিকারী সালাহ উদ্দিন আহমদকে অবৈধভাবে আটক করে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে করা মামলার রায়ে মোস্তফা কামালকে এ দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। হবিগঞ্জের তৎকালীন এসপি মোস্তফা কামালকে আদালত ৩৫ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। জরিমানার টাকার মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ও বাকি ২৫ লাখ টাকা মামলার বাদীকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার অবসরপ্রাপ্ত এসআই ওয়াহেদ মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। ২০০৩ সালের ২০ নভেম্বর এসএ পরিবহনের স্বত্বাধিকারী সালাহ উদ্দিন আহমদ পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল ও হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার এসআই ওয়াহেদ মিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০০২ সালের ২২ ডিসেম্বর সালাহ উদ্দিন আহমেদ নিজ গাড়িতে ২০ লাখ টাকা নিয়ে সিলেট যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে হবিগঞ্জের মাধবপুরে তল্লাশির নাম করে পুলিশ গাড়িটি আটক করে। সালাহ উদ্দিন পরিচয় দিলে রাতে টাকা নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে থানায় জিডি করতে বলে পুলিশ।

জিডি করতে থানায় গেলে হবিগঞ্জের তৎকালীন এসপি মোস্তফা কামাল এসএ পরিবহনের স্বত্বাধিকারী সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ অন্যদের হাজতে ঢোকাতে ওয়্যারলেসে থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, এরপর তাকে আটক করে তার নামে মানিলন্ডারিং, মাদক, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে পৃথক তিনটি মামলা করে পুলিশ। বাদী আরও উল্লেখ করেন, পরবর্তীতে আসামিরা বাদীর হেড অফিসে খবর পাঠান, আটককৃত ২০ লাখ টাকাসহ ৫০ লাখ টাকা দিলে সবাইকে ম্যানেজ করে মামলাগুলো থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।

 

।