দায়িত্বে অবহেলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থতা এবং জামায়াত প্রীতির অভিযোগে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তিনি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরীর কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন।
খুলনা বিভাগের পুলিশের ডিআইজি মনিরুজ্জামান জানান, বুধবার বিকেলে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেনের প্রত্যাহার আদেশ পুলিশ হেড কোয়াটার থেকে ফ্যাক্স বার্তায় পাঠানো হয়। তাকে পুলিশ হেড কোয়াটারে ক্লোজ করে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেনকে পুলিশ হেড কোয়াটারে রিপোর্ট করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থতার অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে তার স্থলে এখনও কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
চলতি বছর জুন মাসে পুলিশ সুপার হিসেবে সাতক্ষীরায় যোগদানের পর থেকে মোল্লা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে জামায়াত প্রীতির অভিযোগ ওঠে। দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে গত ৫ মাসে জেলার বিভিন্ন স্থানে একজন মুক্তিযোদ্ধাসহ আওয়ামী লীগের ১৪ জন নেতা-কর্মী খুন হয়েছেন। জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের হাতে তারা খুন হয়েছেন বলে জেলা আওয়ামীলীগ দাবী করেছে।
এ সময়ের মধ্যে শতাধিক নেতা-কর্মী জামায়াত-শিবির কর্মীদের দ্বারা হামলা ও নির্যাতনের শিকার হন এবং তাদের বাড়ী-ঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে মিছিল, অবরোধে নেতৃত্ব দিলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন যোগদানের পর থেকে জেলায় এক সাংবাদিক নিহত সহ ২২ জন সাংবাদিক জামায়াত-শিবিরের হাতে হামলা ও নির্যাতনের শিকার হন। ১৮ দলের অবরোধে সাতক্ষীরা জেলা শহরের সাথে অন্যান্য উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। জেলার মানুষ অনেকটা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
সম্প্রতি সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেনকে জামায়াত-শিবিরের দোসর আখ্যা দিয়ে তার প্রত্যাহারের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে কর্মরত সাংবাদিকরা। এ ছাড়া গত ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার দেবহাটায় আবু রায়হান নামের এক সাংবাদিককে জামায়াত-শিবির শত শত মানুষের সামনে কুপিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়। গত ৩০ নভেম্বর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক ইয়ারব হোসেনকে জামায়াত-শিবির কর্মীরা কুপিয়ে মারাত্বক জখম করে। এ ছাড়া আরও কমপক্ষে ১৮ জন সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
একের পর এক সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব গতকাল বুধবার সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেনকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী , তথ্য মন্ত্রী ও প্রধান নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দেয়। স্মারকলিপি প্রদানের পর ওই দিন বিকেলে পুলিশ হেড কোয়াটার থেকে তার প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।