স্ববিরোধিতা আমার পছন্দ নয়। সর্বদা স্রোতর পক্ষে চলা আমার স্বভাব নয়। সব পুরাতন বাতিল নয়। চলার পথে সহযাত্র্রীরা সম্পদ। পরামর্শের মত সাহায্য নেই।
সব চাইতে অসহায় সেই ব্যক্তি যার কোন ভ্রাতৃ-প্রতিম বন্ধু নেই। কিন্তু আরো অসহায় সেই ব্যক্তি যে এহেন বন্ধু পেয়ে হারায়
আসুন. আমরা পবিত্র আল-কোরআন এর নীচের আয়াতটির
অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট, এর প্রায়োগিক দিক
নিয়ে জানার উদ্যোগ গ্রহণ করি।
সূরা আল ইমরান:61 - "অতঃপর তোমার নিকট সত্য সংবাদ
এসে যাওয়ার পর যদি এই কাহিনী সম্পর্কে তোমার
সাথে কেউ বিবাদ করে, তাহলে বল-এসো,
আমরা ডেকে নেই আমাদের পুত্রদের এবং তোমাদের
পুত্রদের এবং আমাদের স্ত্রীদের ও তোমাদের স্ত্রীদের
এবং আমাদের নিজেদের ও তোমাদের নিজেদের আর
তারপর চল আমরা সবাই মিলে প্রার্থনা করি এবং তাদের
প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত করি যারা মিথ্যাবাদী। "
পবিত্র আল-কোরআনের এ আয়াতটিকে মোবাহালার আয়াত
বলে।
এর পটভূমি এই যে, মহানবী (সাঃ) নাজরানের খ্রীষ্টানদের
কাছে একটি ফরমান প্রেরণ করেন।
এতে ধারাবাহিকভাবে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়ঃ (১)
ইসলাম কবুল করো, (২) অথবা জিযিয়া কর দাও, (৩)
অথবা যুদ্ধের জন্য প্রস্ত্তত হও। খ্রীষ্টানরা পরস্পর পরামর্শ
করে শোরাহবিল, আব্দুল্লাহ ইবনে শোরাহবিল ও জিবার
ইবনে ফয়েজকে হুজুর (সাঃ) এর কাছে পাঠায়।
তারা এসে ধর্মীয় বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা শুরু করে। এক
পর্যায়ে তারা হযরত ঈসা (আঃ)কে উপাস্য প্রতিপন্ন করার
জন্য প্রবল বাদানুবাদের আশ্রয় গ্রহণ করে।
ইতিমধ্যে মুবাহালার উপরোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়।
এতে রসুলে খোদা (সাঃ) প্রতিনিধি দলকে মুবাহালার
আহবান জানান এবং নিজেও হযরত ফাতিমা, হযরত
আলী এবং ইমাম হাসান-
হোসাইনকে সঙ্গে নিয়ে মুবাহালার জন্য প্রস্ত্তত
হয়ে আসেন। এ আত্মবিশ্বাস দেখে শোরাহবিল ভীত
হয়ে যায় এবং সাথীদ্বয়কে বলতে থাকেঃ তোমরা জান যে,
ইনি আল্লাহর নবী। আল্লাহর নবীর
সাথে মুবাহালা করলে আমাদের ধ্বংস অনিবার্য। তাই
মুক্তির অন্য কোন পথ খোঁজ। সঙ্গীদ্বয় বললঃ তোমার
মতে মুক্তির উপায় কী? সে বললঃ আমার মতে নবীর
শর্তানুযায়ী সন্ধি করাই উত্তম উপায়।
অতঃপর এতেই
প্রতিনিধি দল সম্মত হয় এবং মহানবী (সাঃ) তাদের উপর
জিযিয়া কর ধার্য করে মিমাংসায় উপনীত হন।
খাদেমুল হারামাইন শরীফাইন বাদশাহ ফাহাদ কোরআন
মুদ্রণ প্রকল্প, পোঃ বক্স নং- ৩৫৬১,
মদীনা মোনাওয়ারা থেকে মুদ্রিত
এবং মাওলানা মুহিউদ্দিন খান কর্তৃক কৃত হযরত
মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী (রহঃ) এর ‘তফসীর
মাআরেফুল ক্বোরআন’ এর অনুবাদ ‘‘পবিত্র কোরআনুল
করীম’’ (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর) এর ১৮১
নং পৃষ্ঠা থেকে উদ্ধৃত।
এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছিঃ
মহানবী (সাঃ)কে অবিশ্বাস করা হচ্ছিল।
সত্যের পরিবর্তে হযরত ঈসা (আঃ) সম্পর্কে বানোয়াট/
মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হচ্ছিল।
কঠিন পরীক্ষার মাধ্যমে সত্য প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত করা হচ্ছিল।
রসুল (সাঃ) এর জন্য হযরত ফাতিমা (সা.আ.), হযরত
আলী (আ.) এবং হযরত হাসন-হুসাইন (আ.) সশরীরে সাক্ষ্য
দিতে পেরেছেন।
হযরত ফাতিমা (সা.আ.), হযরত আলী (আ.) এবং হযরত হাসন-
হুসাইন (আ.) পবিত্র কোরআনের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার
মাধ্যমে সত্যবাদিতার সার্টিফিকেট পেয়ে গেলেন যা আর
কারও ভাগ্যে জোটেনি। তাদের সমকক্ষ আর কেউই
হতে পারে না।
আহলি বাইয়েত (আ.)গণের শ্রেষ্ঠ মর্যাদার জন্য এ
একটা আয়াতই যথেষ্ট হতো।
তার পরও আহলি বাইয়েত
(আ.)গণের মর্যাদায় পবিত্র কোরআনে আরও বহু
বর্ণনা এসেছে।
মহান আল্লাহ সত্য অনুসরণে আমাদের সহায়তা করুন
এবং হিকমত দান করুন। আমীন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।