গত পর্বের শেষাংশঃ
"থাকে। “স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত” তাহার হাত তুলিবার অধিকার আছে। এই ভাবিয়া আমেনা সব সহে নেয়। পুরুষ মানুষের কতো চিন্তা, মন-মর্জি সব সময় ভালো থাকেনা, তাই আমেনা পাল্টা কিছু বলেনা। স্বামীতো তাহাকে ভালবাসেই!"
কয়েকদিন হইতেছে ইজ্জত আলীর মন খুব খারাপ।
তাই কিঞ্চিৎ কারনে বউ আমেনা’কে উত্তম-মধ্যম প্রদান করিয়া থাকে। ইজ্জত আলী শহরে কাজে যাইতে চাইলেও যাইতে পারেনা। পারার সেলিম ছেলেটা তাহার বউ আমেনার দিকে কেমন করিয়া যেন তাকায়! সেলিম ইদানীং অকারনে পুকুরপাড়ের পথ ধরিয়া হাঁটাচলা শুরু করিয়াছে । বউ আমেনা ঘাটে জল আনিতে গেলে সে আড়ালে থাকিয়া কেমন করিয়া তাকাইয়া থাকে। পথে ঘাটে দেখা হইলে সে ইজ্জত আলীকে জিজ্ঞেস করিয়া থাকে “ভাবী কেমন আছেন ইজ্জত ভাই?, শরীর ভালতো?” সে ইদানীং আমেনার শরীর ভালো আছে কী-না তাহাও জানিতে চায়! ইজ্জত আলীর খুব রাগ হয়, কিন্তু কাহোকে কিছু কহিতে পারেনা।
পাছে বউয়ের নামে দুর্নাম ছড়াইয়া যায়। এই ব্যাপারটা লইয়া ইজ্জত আলী খুবই চিন্তিত হইয়া পড়িয়াছে। তাই বউকে একেলা রাখিয়া শহরে যাইতে পারিতেছেনা। ইতিমধ্যে সংসার পড়িয়াছে অভাবের যাঁতাকলে। ইজ্জত আলী ভাবিয়া থাকে “বউকে নির্যাতন করিলেও বউ স্বামীর কাছে থাকে, পর-পুরুষের দিকে তাকাইবেনা, কিন্তু অনাহারে রাখিলে নিশ্চয়ই পরপুরুষের হাত ধরিয়া পলায়ন করিবার বাসনা করিবে” এইসব ভাবিয়া ইজ্জত আলীর রক্তচাপ আজ অনেকগুনে বাড়িয়া গিয়াছে।
রূপবতী বউ বিবাহ করিয়া সে পড়িয়াছে বিষম ঝামেলায়। আমেনা মাথায় জল ঢালিতেছে। পায়ের তলায় সরিষার তেলের সঙ্গে কিঞ্চিৎ জল মেশাইয়া মর্দন করিতেছে। আহা! গাঁয়ের স্ত্রী’রা বুঝি এমনই মায়াবিনী হয়। আমেনা সব সময়ই স্বামীকে অনন্য যত্ন করিয়া থাকে।
কিছুক্ষণের মধ্যে ইজ্জত আলী নিদ্রায় মগ্ন হইয়া পরে। উদর ফুলাইয়া, নাক গড়গড় ডাকাইয়া শ্বাস নিতেছে। পাশে বসিয়া পদ-মর্দন করিতেছে আমেনা। হঠাৎ লম্ফ দিয়া ঘুম হইতে জাগিলো ইজ্জত আলী। বউকে বলল “কী অলক্ষুণে স্বপ্ন দেখিলাম বউ!! দেখিলাম আমি নতুন আরেকখানা বিবাহ করিতেছি!” তাহা শুনিয়া আমেনা চোখের জল ছাড়িয়া দেয়।
ইজ্জত আলী তাহাকে আদর করে। সান্ত্বনা প্রদান করিয়া আমেনার মনে আনন্দ সঞ্চার করে। আমেনা আনন্দিত হয়। স্বামী-স্ত্রী মিলিয়া রসের আলাপ করিতেছে। ঠিক এই সময় সদর দরজায় ধাক্কার শব্দ আসিলো।
আমেনা ইজ্জত আলীর কাছ হইতে সরিয়া যায়। কেননা স্বামী ইজ্জত আলীর কাছে পাড়াপড়শি মুরব্বীগণও আসিয়া থাকেন পরামর্শ নিতে। ইজ্জত আলী দরজা খুলিয়া দেয়। একরাশ হাসি উপহার প্রদান করিয়া তাহার রূপবতী শ্যালিকা প্রবেশ করিলো। ইজ্জত আলী এইবার চিন্তায় পড়িয়া যায়।
কিছুক্ষণ আগে দিবা-নিদ্রায় স্বপ্ন দেখিলো সে আরেকখানা বিবাহ করিয়াছে। ঠিক কিছুক্ষণ পরই শ্যালিকা হইলেও একজন নারীর আগমন! মুরব্বী’দের মুখে সে শুনিয়াছে দিবা-স্বপ্ন নাকি কখনো-কখনো সত্যি হয়। এবং তাহার কিঞ্চিৎ আলামত পাওয়া যায়। ইজ্জত আলী ভাবিতেছে, “তাহা হইলে’কী আমার পঞ্চম বিবাহটাও হইয়া যাইবে!”
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>> চলিবে.........।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।