আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“শ্বশুরবাড়ি যাই” পর্ব-০৩।

(নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত হইয়া গিয়াছিলাম, তাই আপডেট দিতে কিঞ্চিৎ দেরী হইয়া গিয়াছে)
গত পর্বের শেষাংশঃ
ঠিক কিছুক্ষণ পরই শ্যালিকা হইলেও একজন নারীর আগমন! মুরব্বী’দের মুখে সে শুনিয়াছে দিবা-স্বপ্ন নাকি কখনো-কখনো সত্যি হয়। এবং তাহার কিঞ্চিৎ আলামত পাওয়া যায়। ইজ্জত আলী ভাবিতেছে, “তাহা হইলে’কী আমার পঞ্চম বিবাহটাও হইয়া যাইবে!”

এই সব ভাবিতে থাকিয়া, আনমনে শ্যালিকার বদনে তাকাইয়া রহিয়াছে ইজ্জত আলী। শ্যালিকা সুলতানা ভাবিয়া পাইতেছেনা দুলাভাই কেনো একদৃষ্টিতে তাহার মুখপানে তাকাইয়া রহিয়াছেন! সুলতানা দুলাভাই ইজ্জত আলীকে কিঞ্চিৎ ধাক্কা মারিয়া বলিলো, “কী হইয়াছে দুলাভাই? এমন করিয়া তাকাইয়া রহিয়াছেন কেনো!” ইজ্জত আলী চমকিয়া উঠে। সে কিংকর্তব্যবিমুর হইয়া বলিয়া উঠে “না মানে তুমি ইদানীং খুব সুন্দর হইয়া গিয়াছো, অনেকদিন পরে দেখিলামতো তাই......” কথা শেষ করিতে না দিয়া চালাক সুলতানা কিঞ্চিৎ রস মিশ্রিত করিয়া বলিলো, “তাই তাকাইয়া দেখিতেছেন! শুনেন, তাকাইয়া লাভ হইবেনা, একজন দিয়াছি আর আশা করিয়া লাভ হইবেনা” ইজ্জত আলী লজ্জা পাইয়া যায়।

কিঞ্চিৎ হাসিমাখা বদনে বলে “আর আমার প্রয়োজন নাই, যাহা পাইয়াছি তাহাতেই আমি সন্তুষ্ট রহিয়াছি”

“সুন্দরী শ্যালিকা, যেমন তাহার রূপ, তেমন তাহার গুন। যাহা বলিবার সরলেই বলিয়া থাকে। খুব ঘনিষ্ঠ হইয়া চলাফেরা করে। তাহার হাসি দেখিলে অন্তরে দাগ পড়িয়া যায়। তাহার সাথে কথা বলিলে বক্ষের মধ্যখানে পিটপিট করিয়া শব্দ করে।

আহা! এমন শ্যালিকা পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার, আমার বউ আমেনা যদি এমন হইতো! আমেনার কেমন যেন নীরস নীরস ভাব। তাহার হাসি আজকাল আর সুন্দর লাগেনা” দুচোখের পাতা একত্র করিয়া, একটি বটবৃক্ষের তলায় বসিয়া তাহা মনে মনে ভাবিতেছে ইজ্জত আলী। ঠিক সেই সময় পাড়ার সেলিম আসিয়া ইজ্জত আলীর সংস্পর্শে বসিলো। ইজ্জত আলীকে মৃদু ধাক্কা দিয়া বলিলো,
“ ইজ্জত ভাই, কী ভাবিতেছেন?”
“না, তেমন কিছু না, তুমি এইখানে কেনো!!”
“না মানে আসিয়াছিলাম, মানে শুনিয়াছি আপনার শ্যালিকা সুলতানা নাকি আপনার বাড়িতে আসিয়াছে?”
“হ্যাঁ আসিয়াছে, তাহাতে তোমার কী হইয়াছে!!!”
“না মানে, পারাতো ভাইয়ের শ্যালিকা বলিয়া কথা, ভাবিতেছি তাহাকে ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করিবো, হাজার হইলেও তালতো বোন”
এইবার ইজ্জত আলী চিন্তায় পড়িয়া যায়। শ্যালিকার প্রতিও সেলিমের নজর পড়িয়াছে! এই সেলিম ছেলেটা বড়ই বে-শরম।

এইবার এই সেলিমের চোখ হইতে শ্যালিকাকে সরাইয়া রাখিবার পথ খুঁজিয়া পাইতেছেনা ইজ্জত আলী। ইজ্জত আলীর এমন ভাবনা দেখিয়া সেলিম বলিলো-
“ইজ্জত ভাই, আপনি খুব চিন্তায় পড়িয়া গিয়াছেন মনে হইলো! শ্যালিকা আসিয়াছে, অনেক খরচাপাতি করিতে হইবে, টাকার অভাবে পড়িয়াছেন নাকি? আপনার এতো চিন্তা দেখিলে আমার মন খারাপ হইয়া যায়। টাকা পয়সার চিন্তা করিবেননা, আমিতো আছিই”

সেলিমের কথা শুনিয়া ইজ্জত আলী নতুন ধান্দা খুঁজিয়া পায়। সে ভাবিতে থাকে “এইবার সেলিমের অর্থ সহায়তা গ্রহন করিতে হইবে। তাহার পরে যাহা হইবার তাহাই হইবে।

আপাতত কিঞ্চিৎ অর্থের প্রয়োজন” ভাবনা ভাঙিয়া দিয়া সেলিম বলিলো- “এতো ভাবিতেছেন কেনো! আমিকী আপনার পর? আপনার আত্মীয় যখন আমার আত্মীয় হয়, তখন আমার টাকাও আপনার টাকা হইতে পারে”
ইজ্জত আলী তাহা মানিয়া নেয়। এবং সেলিম নিজের পকেট হইতে কিছু নগদ অর্থ প্রদান করিয়া বলে-
“চলেন ইজ্জত ভাই, আপনার শ্যালিকাকে ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করিয়া আসি”
এইবার ইজ্জত আলী না করিতে পারেনা। এবং সেলিমকে লইয়া নিজগৃহে উপস্থিত হয়। সেলিম ইজ্জত আলীর শ্যালিকা সুলতানার সঙ্গে রসের আলাপ করিতেছে। দুজন হাসিয়া-রসিয়া আলাপ করিতে দেখিয়া ইজ্জত আলীর অন্তর জ্বলিয়া অঙ্গার হইয়া যাইতেছে।

বুকের মধ্যে কেহ যেন হাতুড়ির আঘাত করিতেছে!!!


>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>> চলিবে.........।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।