আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাকাস্থ মালদ্বীপ হাইকমিশন টাকার অভাবে বনú

বাংলাদেশে থাকা মালদ্বীপের হাইকমিশন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালদ্বীপ। কৃচ্ছ্র সাধনের জন্য মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে হিসেবে আগামী ১ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশে কোনো মিশন থাকছে না সার্কের এই ক্ষুদ্র দেশটির। ২০০৮ সালের ১ এপ্রিল ঢাকায় স্থাপিত মালদ্বীপের হাইকমিশন পাঁচ বছর পূর্তিতে মিশনটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এত দিন দায়িত্ব পালন করা ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার আহমেদ আদিল ইতোমধ্যে মিশন গুটিয়ে নেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। ঢাকার বিদেশি কূটনৈতিক মহলে জনপ্রিয় আদিল সবার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করছেন। আগামী সপ্তাহে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে বিদায় নেবেন।

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় অর্থ সাশ্রয়ের অংশ হিসেবে মালদ্বীপ সরকার বেশ কিছুদিন আগেই বাংলাদেশে থাকা মিশন বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু মালদ্বীপে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সেলিনা মহসিনের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ নাশিদ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন স্থগিত করেছিলেন। তবে মালদ্বীপের পরিবর্তিত সরকার মিশন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়। জানা যায়, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ঐতিহাসিক সম্পর্ককে বিবেচনা করে মিশন হোস্ট করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে সে প্রস্তাবও বিনয়ের সঙ্গে ফিরিয়ে দিয়েছে মালদ্বীপ। ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার আহমেদ আদিল গতকাল তার মিশনে বসে জানালেন, আসলে মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাজেট ৪০ শতাংশ কাটছাঁট করা হয়েছে। এমতাবস্থায় মিশন বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোনো উপায় ছিল না মন্ত্রণালয়ের সামনে। সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর কূটনৈতিক জোন বারিধারায় সীমিত পরিসরে মালদ্বীপের মিশন পরিচালনা করা হচ্ছিল। দুই কূটনীতিক ও পাঁচ স্টাফ মিলে চলেছে এ মিশন। অর্থ সংকটের প্রমাণ পাওয়া যায় মিশনের আসবাবপত্র ও সাজসজ্জায়। জানা যায়, বাংলাদেশ-মালদ্বীপের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রায় ৩৫ বছরের। ১৯৭৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। প্রথমে দুই দেশের মধ্যে কলম্বোভিত্তিক অনাবাসিক কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল। পরে মালদ্বীপে বাংলাদেশের মিশন চালু হয় ১৯৮৮ এবং ঢাকায় ২০০৮ সালে। ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার আহমেদ আদিল বলেন, দুই দেশের ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে। মালদ্বীপের লোকগল্পে চট্টগ্রামের কথা রয়েছে। এ ছাড়া মধ্যযুগে বাংলায় মুদ্রা হিসেবে যে কড়ি ব্যবহৃত হতো, তা আসত মালদ্বীপ থেকে। এ থেকে বোঝা যায় দুই দেশের সম্পর্ক প্রাচীন। হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশি পণ্যের একটি ভালো বাজার হতে পারে মালদ্বীপ। কারণ ছোট এই দ্বীপরাষ্ট্রে প্রায় ১০ লাখ পর্যটক নিয়মিত ভ্রমণ করেন। কিন্তু তেমন কোনো পণ্যই এখানে উৎপাদিত হয় না, সবই আমদানি করা হয়। বাংলাদেশের পণ্যের গুণগত মান ও মূল্যের কারণে খুব সহজেই তা মালদ্বীপের বাজার দখলে নিতে পারে। তিনি বলেন, এত দিন ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের অগ্রগতি হয়নি। কিন্তু গত নভেম্বর থেকে মালদ্বীপ-বাংলাদেশ সরাসরি ফ্লাইট চালু হয়েছে। ফলে বাণিজ্যিক সম্পর্কে অগ্রগতি ঘটবে বলে আশা করা যায়। এ ছাড়া ভাবা হচ্ছে সমুদ্রপথে সরাসরি যোগাযোগের কথাও। মালদ্বীপে বাংলাদেশ হাইকমিশনের তথ্যমতে, ১০ বছর আগে থেকে বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে জনশক্তি নেওয়া শুরু হয়। এখন প্রায় ৭০ হাজারের মতো বাংলাদেশি মালদ্বীপে কর্মরত আছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য পেশাজীবী রয়েছেন। অন্যদিকে মালদ্বীপে এখন মোট যত সংখ্যক বিদেশি কর্মরত আছেন, এর ৬০ শতাংশই বাংলাদেশি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.