দেখতে দেখতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৩ বছর পেরিয়ে এলাম। এই স্বাধীনতা অসংখ্য জীবন, অঢেল রক্ত এবং আরও বহু ত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত। পাকিস্তানের মতো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে অাঁতাত করে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অর্জিত তথাকথিত স্বাধীনতা নয়। রীতিমতো রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে কেন স্বাধীনতা। আর এত যে ত্যাগ-তিতিক্ষা, তা হাতেগোনা কয়েকজনের নয়।
মুষ্টিমেয় কতিপয় দালাল ছাড়া কোটি কোটি দেশবাসী সবারই সম্মিলিত ত্যাগ ও লড়াইয়ের পটভূমিতেই দেশের স্বাধীনতা সূর্যের উদয় ঘটে। আজ সে ইতিহাসের অনেকটাই আমরা বিস্মৃতির অতলে ঠেলে দিয়েছি। অথচ ওই ইতিহাস বাঙালি জাতির জন্য কতই না গৌরবের, কতই না তাৎপর্যবাহী। সেই বিস্মৃতির মাশুলও জাতিকে কম দিতে হচ্ছে না।
বাঙালি জাতির গর্বের, সম্মানের এবং শ্রদ্ধার দাবিদার যে কয়জন মহান নেতা তারা হলেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ।
মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী শেষ জীবনে চীন পন্থায় ঝুঁকে গিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে যে বিশাল ভুল করেছিলেন- সে কারণে তার সীমাহীন অবদান ইতিহাসে ততটা উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারল না। অথচ তার মতো নির্লোভ, নিঃস্বার্থ ও সংগ্রামী নেতৃত্ব আমাদের দেশের ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল।
প্রথম জীবনে ইংরেজ আমলে পাশ্চাত্যের অনুসারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মতো একজন দক্ষিণপন্থি নেতার অনুসারী হলেও পরবর্তীতে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর হাত ধরে বঙ্গবন্ধু এ দেশের রাজনীতিতে সুদৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেন। ষাটের দশকে বৈরুত রহস্যজনকভাবে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের একক নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত হয়ে বাঙালির অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক স্বার্থ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন। অসীম সাহস ও দুর্লভ নেতৃত্বের গুণে বঙ্গবন্ধু সমগ্র বাঙালি জাতিকে ধর্ম-সম্প্রদায়-লিঙ্গ নির্বিশেষে লৌহদৃঢ় একতার বন্ধনে আবদ্ধ করতে সক্ষম হন।
১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয় দফা ও ১১ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে। জাতীয়তাবাদী উদার গণতন্ত্রী ও বাম শক্তিসমূহসহ সব বাঙালিকে অপূর্ব দক্ষতায় স্বাধীনতার দাবিতে প্রতিষ্ঠিত হয় ওই ঐক্য।
বঙ্গবন্ধু ধারাবাহিক ও নিরবচ্ছিন্ন লড়াই-আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি জাতির মনের মণিকোঠায় স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। ফলে শুধু তার নামকে কেন্দ্র করেই তার অনুপস্থিতিতে তারই সহকর্মী তাজউদ্দীন আহমদের দূরদর্শী নেতৃত্বে নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ সাফল্যের সঙ্গে পরিচালিত হয়েছিল। আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, নেতৃত্বের মোহ, সংগঠনগুলোর মধ্যে ডান-বামের সংঘাত মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসেও নগ্নভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
দফায় দফায় তাজউদ্দীন আহমদকে বিদেশের মাটিতেও অনাস্থা ও অপসারণের অপচেষ্টায় উদ্যোগী হতে দেখা গেছে। তা সফল হলে ওই সশস্ত্র যুদ্ধে আমাদের বিজয় অনিশ্চিত হয়ে পড়ত। কিন্তু বিরল ধৈর্য ও অসীম দক্ষতার সঙ্গে তাজউদ্দীন সব অপচেষ্টাকে সাফল্যের সঙ্গে ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম হন। শুধু তাই নয়, তার ওই সাফল্যই আমাদের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধকে পরিপূর্ণ সাফল্য অর্জনে নিয়ামক ভূমিকা রেখেছিল।
আওয়ামী লীগের ভেতরকার ওই অভ্যন্তরীণ মতবিরোধে রীতিমতো বাতাস দিচ্ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী নানা আন্তর্জাতিক শক্তির লবি।
তারা হাত মেলিয়েছিল দেশদ্রোহী খোন্দকার মোশতাকের সঙ্গে। এমন কি মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যেও বিভেদ ঘটানোর লক্ষ্যে মুজিবনগর সরকার-স্বীকৃত মুক্তিবাহিনীর পাল্টা বাহিনী গঠন করা হলো। শহীদ তাজউদ্দীন ব্যতিরেকে তৎকালীন আওয়ামী লীগের অপর কোনো নেতার পক্ষে তা সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল বলে মনে হয় না। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকার বা শহীদ তাজউদ্দীনের অবদান আজও যথাযথভাবে জাতীয় স্বীকৃতি পায়নি- এ বিষয়টি গভীর বেদনার সঙ্গেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
যা হোক, পাকিস্তান যেমন কোনো কর্মসূচির ভিত্তিতে গঠিত হয়নি- জাতির কাছে, দেশের মানুষের কাছে কোনো অঙ্গীকারের ভিত্তিতে পাকিস্তান অর্জিত হয়নি_ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণ বিপরীত।
দেশের মানুষের কাছে, জনগণের কাছে, বাঙালি জাতির কাছে বঙ্গবন্ধুর সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ছিল ছয় দফা-এগার দফা কর্মসূচির বাস্তবায়ন। আর এর ভিত্তিতেই মুজিবনগর সরকার তার কর্মকাণ্ড ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় দেশবাসীর কাছে সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ঘোষণা করেছিলেন এবং পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানেও সেই অঙ্গীকারসমূহ নানা অনুচ্ছেদে, নানা ধারায়-উপধারায় বর্ণিত হয়েছে। সবারই জানা আছে কি-না জানি না, বিশেষ করে এ প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের কাছে। আমাদের বাহাত্তরের সংবিধানে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করেছে। ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি অনুযায়ী ধর্মভিত্তিক সব রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
দেশের নাগরিকদের মধ্যে ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়, অঞ্চল, ভাষা বা লিঙ্গ প্রভৃতি কোনো কারণে রাষ্ট্র কোনো প্রকার বৈষম্য মেনে নেবে না বরং বিরাজমান বৈষম্যসমূহ দূর করবে বলে ঘোষণা করা আছে।
অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান- এই পাঁচটি বিষয়কে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হিসেবে ওই সংবিধানে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রতিটি নাগরিকের নিজ নিজ ধর্ম পালন ও প্রার্থনালয়ের নিরাপত্তা বিধানের অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্র কোনো ধর্মবিশেষের প্রতি কোনো প্রকার বৈষম্যমূলক আচরণ দেখাবে না- এমন কথাও সুস্পষ্টভাবে উলি্লখিত আছে। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো যে, বৈদেশিক নীতিতে বাংলাদেশ 'সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারোর সঙ্গেই শত্রুতা নয়'।
এমন নীতি পালন করবে, একই সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ এবং যুদ্ধের বিরোধিতা ও শান্তির সপক্ষে কাজ করে যাবে বলেও স্পষ্টভাবে লিখিত আছে। এ ছাড়া আইনের শাসন এবং আইনের সুযোগ দেশের সব নাগরিক সমভাবে গ্রহণে অধিকারী হবেন বলেও উল্লেখ করা আছে।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২৩ বছরব্যাপী যে ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন এ দেশে চলেছে এবং যার ধারাবাহিকতায় ১৯৭১-এ দেশের মানুষ অস্ত্র হাতে পাকিস্তানি শত্রুবাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছে- তার প্রধান প্রধান দাবিগুলো পরিপূরণের সুস্পষ্ট অঙ্গীকারই ১৯৭২-এর সংবিধানে উপরোক্তভাবে স্বীকৃত হয়েছে।
আজ যখন আমরা স্বাধীনতার ৪৩ বছরে পদার্পণ করছি বা ৪৩ বছর অতিক্রম করছি তখন আমাদের ভাবতেই হবে এই দীর্ঘ সময়ে আমরা আমাদের অঙ্গীকারগুলো কতটা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হলাম। আবার কোনটি কোনটি বাস্তবায়ন করতে পারলাম না- কেনই বা পারলাম না, কীভাবে এবং কতদিনে তা আমরা পূরণ করব।
বস্তুত বিগত ৪৩ বছরে যদি আমরা অত্যন্ত বাস্তবানুগ, নিস্পৃহ দৃষ্টিতে দেখতে চাই, তবে নিঃসন্দেহে দেখব বেশকিছু প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর চেয়েও বেশি।
দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে ৪৪ বছরে বিপুল এবং ঈর্ষণীয় অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বিপুল জনসংখ্যা অধ্যুষিত যেমন আমাদের দেশ- তেমনই অনেকটা যেন তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই বিপুলসংখ্যক প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ স্থাপিত হয়েছে প্রধানত বেসরকারি উদ্যোগে সমগ্র দেশে। আর তেমনি চলছে জাতীয়করণ বা সরকারিকরণ, এ নিয়ে ওইসব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষাক্ষেত্রে বেশি লক্ষণীয় হলো নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রগতি। আমাদের দেশে মুসলিম পরিবারের মেয়েদের আগে ঘরের বাইরে আসতে দেওয়া হতো না।
এখন তারা হাজারে হাজারে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাইরে নানা স্কুল-কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে, চাকরি ক্ষেত্রে এবং বিপণিবিতানগুলোতে কাজ করছে। স্বভাবতই রাস্তাঘাটে, নানা যানবাহনেও তাদের সংখ্যা লক্ষণীয় এবং সহশিক্ষার প্রচলন হয়েছে ব্যাপকভাবে। এগুলো ইতিবাচক। তবে নেতিবাচক দিকও কম নয়। শিক্ষার মান এখনো অত্যন্ত নিম্নস্তরে।
দ্রুত পরিকল্পনামাফিক এই সমস্যা দূর করতে হবে- প্রয়োজনে শিক্ষা বিভাগের চাকরি বিধির পরিবর্তনও আনা যেতে পারে। শিক্ষকদের দ্রুততার ভিত্তিতে উপযুক্ত প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করতে হবে। জিপিএ-৫, গোল্ডেন-জিপিএ প্রভৃতির হার উপযুক্ত সংখ্যায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে যে উদার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে তা ছেলেমেয়েদের কার্যত মারাত্দক ক্ষতি সাধন করা হচ্ছে।
তদুপরি বাংলা, ইংরেজি ও আরবির মাধ্যমে স্কুল, কিন্ডার গার্টেন ও মাদ্রাসা_ এই তিন ধরনের শিক্ষার অস্তিত্ব না রেখে সর্বত্র মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা অবিলম্বে চালু করতে হবে।
ইংরেজি, আরবি, উর্দু, ফরাসি, চৈনিক, জাপানি প্রভৃতি বিদেশি ভাষা শিক্ষার জন্য Foreign Languages Institute চালু করে আগ্রহী ছেলেমেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা করাও অত্যন্ত জরুরি।
আমরা দেশটাকে এখনো নারীর জন্য নিরাপদ করে তুলতে পারিনি। এটি চরম অগৌরবের ও অসভ্য আচরণপূর্ণ। পৃথিবীতে যখন নারী-পুরুষের সমতা স্বীকৃতি অর্জন করছে আমরা তখনো ধর্মের নামে তাদের ঘরের কোণে আবদ্ধ রেখে আত্দতৃপ্তি পেতে চাইছি। এতে নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসবে না- নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদাও বাড়বে না।
দেশের অগ্রগতির কথা বলছিলাম। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও তুলনামূলকভাবে বেশ ভালোই অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। কৃষিতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। গার্মেন্টের আমরা রপ্তানিকারক। ওষুধ শিল্পেও তাই।
আরও অনেক সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে- যেমন বস্ত্রশিল্প, ফলের রস প্রক্রিয়াজাতকরণ, জাহাজ নির্মাণ শিল্প প্রভৃতি। কিন্তু প্রায় সব শিল্পক্ষেত্রেই অগ্রগতির যে প্রাথমিক শর্ত তা হলো অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এখানে আমরা এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের চেয়েও বহু ক্ষেত্রে পিছিয়ে। এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যায় রেলপথের কথা। পশ্চিমাঞ্চল রেলপথ বিভাগ-পূর্বকালে যতটা উন্নত ছিল আজ তার চেয়ে বহুগুণ পিছিয়ে পড়েছে।
রেলপথ নতুন তৈরি হচ্ছে না, পুরনোগুলোর ধ্বংসপ্রাপ্ত চেহারা থেকে উদ্ধার পাওয়া যাচ্ছে না। রেলপথের আকার বহুলাংশে কমেছে। যাত্রী বৃদ্ধি সত্ত্বেও কমানো হয়েছে বগির সংখ্যা, আসন সংখ্যা, ইঞ্জিনের সংখ্যা, ট্রেনের সময়মতো চলাচল না করার বিরক্তি তো রয়েছেই। বেড়েছে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি। ফলে সড়কপথে চলাচল করছে মানুষ।
যদিও তা কষ্টকর ও ব্যয়সাধ্য। সুতরাং পশ্চিমাঞ্চল রেলপথের ব্যাপক উন্নয়ন আজ অগ্রাধিকার পাওয়ার দাবি রাখে। যাত্রী চলাচলের জন্য যেমন, তেমনই আবার পণ্য চলাচলের জন্যও বটে।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ জাতীয় অস্তিত্বের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন সময় এসেছে এক দম্পতি এক সন্তান নীতি গ্রহণের।
এখনই যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে গৃহীত হয়, তবুও তার সুফল পেতে আরও ২০ বছর লেগে যেতে পারে। বেকারত্ব ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের জন্য এক সন্তান গ্রহণের নীতি অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। অপরদিকে কাজের সুযোগ বাড়ানোর জন্য শিল্প-কারখানার প্রসার ও কৃষির বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
জনসংখ্যা এবং নানা অবকাঠামো নির্মাণকল্পে প্রয়োজনীয় জমির স্বল্পতা অপর এক দুস্তর বাধা। এই বাধা দূরীকরণে জমির ব্যবহার বিশেষত কৃষিজমি অন্য কাজে ব্যবহার নিষিদ্ধ করে তা কার্যকর করা এবং অপরাপর জমিও সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন অত্যন্ত জরুরি।
এতকিছুর অভাব সত্ত্বেও জাতীয় আয়ের যে অগ্রগতি বা তার হার দেখানো হয় তা বিস্ময়কর। কিন্তু পূর্বোক্ত চাহিদাগুলো পূরণ করলে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে আমাদের খুব বেশি সময় লাগার কোনোই সঙ্গত কারণ নেই। এর সঙ্গে যদি আমাদের তেল, গ্যাস, কয়লা প্রভৃতি লুকায়িত সম্পদ আহরণ করতে এবং তা জনজীবনে ব্যবহার করা সম্ভব হলে পরবর্তী আর একটি দশকের মধ্যে উন্নত দেশের পর্যায়ে চলে যাওয়াও বোধ করি সম্ভব।
আর এগুলো নিশ্চিত করতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অবশ্য প্রয়োজন। স্থিতিশীলতার অর্থ এই নয় যে, দলবিশেষ যে কোনো প্রকারে অনাদিকাল ধরে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকবে।
বরং অর্থ হলো গণতন্ত্র ও তার নীতিমালার সঠিক প্রয়োগ। এ প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দলের সমঝোতা আজ সময়ের দাবি।
লেখক : রাজনীতিক
ই-মেইল : raneshmaitra@gmail.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।