সুমিকে যখন ইবনে সীনা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাবার ব্যাপারে সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক আমাকে পরামর্শ দিচ্ছিলেন তখন আমি দারুণ উৎকন্ঠার মধ্যে ছিলাম। আমার ভাবতে কষ্ট হয় একজন রোগীর ব্যাপারে ডাক্তারের অবহেলা ও উপেক্ষার কথা ভাবতে। Patient যদি ডাক্তারের কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হন তবে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণকারী ব্যক্তির মানসিক অবস্থা তখন খুব খারাপ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। একজন রোগী অসুস্থতাজনিত, আঘাতজনিত কিংবা অন্য কোন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শের জন্য ডাক্তার, নিবন্ধনকৃত নার্স, পশু ডাক্তার অথবা স্বাস্থ্য সেবায় জড়িত ব্যক্তির শরণাপন্ন হন। যিনি রোগে ভুগছেন তার মানসিক শক্তি বৃদ্ধি, ইতিবাচক মনোভাব বাড়ানো সন্দেহাতীতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
সুমি হচ্ছেন রোগী আর আমিসহ আরো অনেক শুভাকাংখী তার জন্যে চিন্তিত। অজানা শংকায় দারুণভাবে উদ্বিগ্ন, চিকিৎসকের এসংক্রান্ত মন্তব্য-বিশ্লেষণ-বক্তব্য শুনার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান।
বর্তমান সময়ে মর্যাদা, মানব অধিকার এবং রাজনৈতিক সচেতনতার কারণে রোগী শব্দটি স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণের সময় অনেকক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় না। বিকল্প পারিভাষিক শব্দ হিসেবেস্বাস্থ্য গ্রহীতা, স্বাস্থ্য সেবা গ্রহীতা বা ক্লায়েন্ট শব্দের প্রয়োগ ঘটে থাকে। ল্যাটিন শব্দ প্যাশিয়েন্স থেকে ইংরেজি প্যাশেন্ট শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে।
সুমি কল্যাণপুরের ইবনে সীনায় পরবর্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভর্তিকৃত রোগী ইন-পেশেন্ট বা অন্তঃরোগী ছিল। তাকে পূর্বে মগবাজারের আদ দ্বীন হাসপাতালে, মিরপুরের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো হয়েছিল। উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে ভর্তি করে যখন সেখানকার ডাক্তার রাত ১০টার দিকে ইন-পেশেন্ট রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন তখন রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক। প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিক টাকা কামানোর জন্য আর সরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকেও চিকিৎসা পদ্ধতির ধরণ এমন যে ইন-পেশেন্ট কেয়ার শুধুমাত্র কোন বিশিষ্টজনের সুপারিশে প্রাপ্য। যাহোক পরিচিত কিছু ডাক্তারদের আন্তরিকতার ফলে ডিএমসি হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর জন্য যথেষ্ট যত্নের সাথে সেবা পাওয়া গেছে।
কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র নিয়ে ডিসচার্জকালিন আনন্দ ছিল , রিলিজ অর্ডার বা ছাড়পত্র পাওয়ায় বেশ সুখ অনুভব করছিলাম।
ভুল চিকিৎসা ও অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ভর্তিবিহীন বা বাইরের রোগীরা উপলদ্ধি করেন। মিরপুরের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের আউটপ্যাশেন্ট বা বহিঃরোগী হিসাবে সুমি ভুল চিকিৎসা পেয়েছিল বলে আন্দাজ হয়। অস্থায়ী সেবা যে স্থায়ী মন:কষ্টের কারণ হতে পারে তার উজ্জল দৃষ্টান্ত এখানে স্পষ্ট হয়েছে। চিকিৎসকগণের কাছে যদি মানুষের জীবনের দামের চেয়ে নিজের সময় ও আয় রোজগারের ব্যাপারটা বেশি মূল্যবান হয় তবে তা নি:সন্দেহে দু:খজনক।
স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মঘন্টার সময়সীমা, সেবা প্রদানে সক্ষমতা, দক্ষতা ও সুনামের উপর রোগীর সন্তুষ্টতা নির্ভরশীল। পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা, আন্তরিকতা এবং রোগীর প্রতি তারা কতটুকু দায়িত্বশীল ও যত্নবান তার উপরও এ সন্তুষ্টি অনেকাংশে নির্ভর করে। এ সন্তুষ্টির অধিকাংশই চমৎকার ডাক্তার-রোগীর সম্পর্ককে ঘিরে গড়ে উঠে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা, আর্থিক সক্ষমতা, সময়সীমা ইত্যাদি বিষয়গুলোসহ ধৈর্য্য সহকারে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করা - অর্থাৎ সবকিছু ছাঁপিয়ে যায় রোগী-ডাক্তারের চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উপর। অথচ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে যখন রক্ত পরীক্ষার জন্যে স্যাম্পল নিয়ে পিজিতে যেতে হয়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, নোংরা টয়লেট দম বন্ধ হয়ে আসে তখন কতৃপক্ষের অসচেতনতায় অবাক হই।
চিকিৎসা পেশার প্রতি সামাজিক আকর্ষণটা চিকিৎসকদের মর্যাদাকে বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে। স্বাস্থ্যখাতটা সেবামূলক খাত হিসাবে বিবেচিত হলেও এর বাণিজ্যিকীকরণ এমনভাবে সম্পন্ন হয়েছে যে, এর সাথে সংশ্লিষ্টরা অর্থনৈতিক অবস্থানকে আরো বেশী শক্তিশালীকরণ কিংবা জীবন যাপনের মানকে উন্নতকরণেই বেশি নজর দিয়েছে। নিজ ও অন্যের পরিবার, বন্ধু-বান্ধব বা প্রচার মাধ্যমে এই খাতের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রভাব বিস্তার করলেও সেবার মানটাকে গুরুত্ব দেয়াটা উপেক্ষিত থেকেছে। রোগীর দুর্দশা লাঘবের যে পেশাগত দায়বদ্ধতার অঙ্গীকার তা বাস্তবে কমই দেখা যায়। ধর্মীয়, দার্শনিক বা জীবনে ঔষধের প্রভাব ও বিশ্বাসবোধ রয়েছে ফলে একে কেন্দ্র করে বহু ধরনের রুটি রুজির পথ বের হয়েছে।
বেশি সুযোগ-সুবিধা লাভের আশায় মানবিক দিককে বিবেচনায় না এনে আর্থিক দিকটাকে একমাত্র গুরুত্ব দিয়ে অধিক মুনাফার লোভী ব্যবসায়ীরা ফুলে ফেঁপে উঠেছে।
নিত্য-নতুন বৈজ্ঞানিক জ্ঞান উপযোগী দ্রব্য ব্যবহার করায় দক্ষ মানুষের স্বল্পতা, আধুনিক যন্ত্রপাতির সরবরাহের অপযাপ্ততা মানুষের দুর্দশা বাড়িয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভতি রোগীর ব্লাড টেস্ট করার জন্যেও চিকিৎসকরা যখন কোন প্রাইভেট ক্লিনিকে রেফার করেন তখন বিস্মিত হতে হয়। ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলো যেখানে রোগ জীবাণু দূরীকরণে সহায়তা করার কথা সেখানে নোংরা-অপরিস্কার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ যেন জীবাণুর বসত বাড়ি । ডাক্তারের ভুমিকা রোগীর স্বাস্থ্যে প্রভাব বিস্তার করাটা স্বাভাবিক।
ডাক্তার যদি রোগীর সাথে খারাপ আচরণ করে, হতাশাজনক কথা বলে তবে রোগীর মানসিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। রোগীর মনোযোগ আকর্ষণপূর্বক নিবিড় পর্যবেক্ষণ, সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের তৎপরতা বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় গবেষণা বাড়ানোর মাধ্যমে উন্নততর উদ্ভাবনী প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণে সক্ষমদের আন্তরিকতা ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি খুব বেশি দরকার। চিকিৎসা বিজ্ঞানের যতই উন্নয়ন ঘটুক চিকিৎসা প্রদানে নিয়োজিতদের মন মানসিকতা উন্নত না হলে সংকট থেকে উত্তরণ অসম্ভব। ক্রমাগত রোগীর চাহিদা নিবারণের লক্ষ্যে সেবার মান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা চিকিৎসক কিংবা চিকিৎসা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্তদের অন্যতম দায়িত্ব।
সামাজিক জীব হিসাবে প্রত্যেকটি মানুষেরই দায়বদ্ধতা রয়েছে।
সমাজের উচ্চ পর্যায়ে যারা অবস্থান করেন তারা নিজস্ব ভাবমূর্তি রক্ষার্থেই হোক কিংবা মানবপ্রেমের কারণেই হোক তারা সাধারণত অসহায়-বঞ্চিত-পশ্চাদপদ-দুর্বলদের বিপদে আপদে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে রোগ জীবাণু নির্মূলে অনেকেই মূল্যবান ভূমিকা রাখতে পারে। সমাজে অবস্থানকারী ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য ও স্বাধীনতা রক্ষায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে স্বেচ্ছায় দাঁড়ানোটাই মানবিক। সামাজিক অবক্ষয়, ভারসাম্যহীনতা রক্ষার্থে ও সমতাবিধানে ডাক্তারগণ ছাড়াও অন্য প্রতিষ্ঠিত মানুষেরা বেশি শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। এটা সবাই জানে যে, চিকিৎসকের পারিশ্রমিক সম্মানজনক।
একজন চিকিৎসকের অর্থ উপার্জন কিংবা গড়পড়তা আয় অন্য যে-কোন পেশার চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশী, যা তাঁকে উন্নত জীবনধারণে সর্বাত্মক সহায়তা করে। এরফলে তিনি চাইলে সৎ ও স্বচ্ছলভাবে সুন্দর পারিবারিক পরিবেশে জীবনযাপন করতে পারেন। এরপরও তারা ঔষধ কম্পানির গিফট, ক্লিনিক বা হাসপাতালের কমিশনের জন্যে নিজ দায়িত্বে অবহেলা করেন। বহুমূখী, বিচিত্র ও জীবনমূখী পেশা হিসেবে একজন সৎ ও ভাল মনের চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিভিন্ন স্থানে গমন করেন এবং সময়কে যথেষ্ট মূল্যায়ণে নিবেদিতপ্রাণ থাকেন।
ল্যাটিন ভাষায় মেডিকাস শব্দ থেকে ("আরোগ্য লাভে সক্ষম," "যিনি যত্ন নেন, আরোগ্য") চিকিৎসক শব্দের উৎপত্তি হয়েছে।
পারিভাষিক শব্দ হিসেবে এটি ফরাসী ভাষায়আরবি طبيب (তাবিব) শব্দের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ ঘটেছে। চিকিৎসক বা ডাক্তার এর ইংরেজি হচ্ছে Physician বা Doctor। এরা স্বাস্থ্য সেবা প্রদায়ক তথা হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার। চিকিৎসাবিদ্যা বা ডাক্তারী হল শারিরীক বা মানসিক রোগ, আঘাত বা বিকারের নীরিক্ষণ, নির্ণয় ও নিরাময়ের দ্বারা মানুষের স্বাস্থ্য বজায় রাখা বা পুনর্বহাল করা। যাঁরা ব্যক্তিকেন্দ্রিক, পরিবারকেন্দ্রিক, জনগোষ্ঠীকেন্দ্রিক ইত্যাদি বিভিন্ন ভিত্তিতে, বয়স রোগ নির্বিশেষে, ক্রমান্বয়ে বা সর্বোতভাবে সাধারণ মানুষের নানারকম রোগবিকারাদির সাধারণ চিকিৎসা করে থাকেন তাঁদের জেনারাল প্রাক্টিসনার বলা হয়।
চিকিৎসার সঠিক ব্যবহার শুধু চিকিৎসাবিজ্ঞানের বুনিয়াদি পঠনভিত্তিক জ্ঞানের উপরেই নির্ভর করে না, আরো নির্ভর করে এই বিজ্ঞানকে পরিশীলিতভাবে প্রয়োগ করবার ফলিত কলাবিদ্যায় পারদর্শীতার উপর। । চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য সেবার অন্যান্য পেশাদারী ব্যক্তিদের (যথাঃ ঔষধশিল্পের সাথে জড়িত ফার্মাসিস্ট, নার্স, দন্তবিশারদ ইত্যাদি) সাথে নিবিঢ়ভাবে জড়িত।
স্বাস্থ্য চিরকাল একই থাকেনা, জন্মিলেই মরিতে হয়। তবে কিছু রোগ থেকে রক্ষা পেতে,রোগে আক্রান্ত হলে তা থেকে বাঁচতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় রোগাক্রান্ত মানুষ।
পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই চিকিৎসককে তাঁর চিকিৎসা কার্য পরিচালনার জন্য সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। জনগণ তথা রোগীর নিরাপত্তা ও রক্ষা করার লক্ষ্যেই স্বাস্থ্য সেবায় সরকারের এ ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসক তাঁর শিক্ষাগতযোগ্যতা প্রদর্শনের লক্ষ্যে ডক্টর পদবী পত্র যোগাযোগ কিংবা নেমকার্ডে তুলে ধরতে পারেন। এমনকি তিনি যদি স্নাতক পর্যায়েও ডাক্তারী বিদ্যায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন তাহলেও তিনি এ যোগ্যতার অধিকারী হবেন। জার্মানিতে ডক্টরেট পদবীধারীরাই কেবলমাত্র নিজেদেরকে ডাক্তার বা চিকিৎসক হিসেবে নিজের পরিচয় দিতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাকে পেশা হিসেবে নেয়ার জন্য বিশেষ অনুমতিপত্র গ্রহণ করতে হয়। এছাড়া ইংরেজি ভাষাভাষী অন্যান্য দেশ বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যা ন্ডসহ কমনওয়েলথভূক্ত দেশে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পাদন করা আবশ্যক। লাইসেন্স কিংবা রেজিস্ট্রেশনের সমার্থক শব্দ হিসেবে স্পেনে colegiación, জাপানে ishi menkyo, নরওয়েতে autorisasjon, জার্মানিতে Approbation এবং গ্রীসে "άδεια εργασίας" শব্দ ব্যবহার করা হয়। ফ্রান্স, ইতালি এবং পর্তুগালে একজন সাধারণ চিকিৎসককে অবশ্যই ঔষধ প্রয়োগের লক্ষ্যে চিকিৎসার জন্য অর্ডার অব ফিজিশিয়ানের সদস্য হতে হয়।
দেশেজুড়ে ব্যাঙের ছাতার মত যে পরিমান বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক গড়ে উঠেছে তার শতকরা ৯০ ভাগ চিকিৎসকের ডিগ্রীই অপ্রয়োজনীয় এবং ভূয়া।
সাধারণ রোগীরা এতো এতো ডিগ্রি দেখে সরল মনে এসব ডাক্তারদের দেখানোর জন্য ভিড় জমায়। এ সুযোগে তারা রোগী প্রতি ফি নেন নিম্নে ৩শ’ থেকে ৬শ’ টাকা পর্যন্ত। এর সাথে প্যাথলজি টেস্টের নামেও চলে কমিশন বাণিজ্য। তারা রোগীকে প্যাথলজি পরীক্ষার জন্য লম্বা সি¬প দিয়ে মনোনীত ক্লিনিক কিংবা ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করার জন্য বলে দেন। নির্দিষ্ট প্যাথলজি ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা না করালে তারা রোগী দেখেন না।
এতে প্রতিটি টেস্টের জন্য প্যাথলজি ল্যাবরেটরি থেকে ওসব চিকিৎসক ৫০ থেকে ৬০ ভাগ কমিশন পেয়ে থাকে। মূলত এসব ডাক্তাররা রোগীদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করছে। এতে রোগীরা বিভ্রান্ত এবং শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আমি মনে করি ডাক্তারি শুধু একটি পেশা নয়, দায়িত্বও। যদি এই মন্ত্রে বিশ্বাসী করে ডাক্তারদের প্রতন্ত্য অঞ্চলে পাঠানো না যায় তবে কোনভাবেই এইসব মানুষদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা যাবে না।
গ্রাম্য অনেক হাতুরি ডাক্তার রয়েছে। যাদের দ্বারা অনেক সময় উপকারও হয়ে থাকে । এরাই কোন কোন সময় গ্রাম্য মানুষের ভরসা। এদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে যদি কোন রকম মানে আনা যায় তবে ভালো ফলাফল আসতে পারে । সকল সরকারি হাসপাতালের জন্য ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া থাকলেও কেউ প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেতে চায় না ।
একদিন গিয়ে সারা মাসের উপস্থিতি দিয়ে আসে । সারা মাস ঐ অঞ্চলের জনসাধারন চিকিৎসা সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয় । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শহুরে জীবন ছেড়ে যাওয়ার মানুষিকতা সৃষ্টি না হওয়া এবং বাড়তি আয় না করতে পারার কারনে ডাক্তাররা গ্রামে গিয়ে থাকতে চাননা । এই অপেশাদারিত্বের কারনে গ্রামের মানুষ এবং অস্বচ্ছল মানুষগুলো চিকিৎসা সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয় । যার ফলাফল স্বরূপ মাতৃ মৃত্যুসহ জরুরি স্বাস্থ্য সেবায় আমাদের জনসাধারন এখনও ১০০ বছর পিছিয়ে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।