নড়াইলে পৃথক ঘটনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩ জন নিহত হয়েছে। জানা যায়, আটদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সরিদ মোল্লা (৫৫) মারা গেছেন। গতকাল রবিবার রাত ৮টায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সরিদ মোল্লার লাশ ঢাকা থেকে আজ সোমবার বিকেলে গ্রামের বাড়ি কালিয়া উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে আনা হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় রবিবার রাত ১০টার দিকে কৃষ্ণপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের ১০টি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে।
আগুন দেয়া হয়েছে ওই গ্রামের সাবু মোল্লার বাড়িতে। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিশু অপহরণ ঘটনার প্রতিবাদ করায় গত ১৫ মার্চ বেলা ১১টার দিকে নড়াইল সদরের সিঙ্গাশোলপুর বাজারের দক্ষিণ এলাকায় সরিদ মোল্লার দু'হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয় সন্ত্রাসীরা। তাকে প্রথমে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পুলিশ আরও জানায়, চাঁচুড়ি ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের আবু বাদ্যকারের মেয়েকে (১৩) স্কুলে যাবার পথে একই গ্রামের পলাশ (১৮), সাইফুল (১৯) ও কাসেম (১৮) তাকে উত্যক্ত করতো।
এক পর্যায়ে গত ১৩ মার্চ সকালে স্কুলে যাবার পথে ওই গ্রাম (কৃষ্ণপুর) থেকে মেয়েটিকে ওই তিন যুবক অপহরণ করে। পরেরদিন (১৪ মার্চ) আবু বাদ্যকারের স্ত্রী রেবেকা বেগম কালিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অপহরণকারী ও তাদের লোকজন ১৫ মার্চ সকালে আবু বাদ্যকারের বাড়িতে হামলা চালায়। এ ঘটনায় আবু বাদ্যকার ও তার স্ত্রী রেবেকা বেগম আহত হন। আহতদের নসিমনে করে যশোর নোয়াপাড়ায় নেয়ার পথে সিঙ্গাশোলপুর বাজারের দক্ষিণ পাশে পৌঁছালে ওঁৎ পেতে থাকা কৃষ্ণপুর গ্রামের কয়েক সন্ত্রাসী নসিমন ঠেকিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সরিদ মোল্লার দুই হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়।
এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করে। কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুভাষ বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কৃষ্ণপুর গ্রামের একটি মেয়েকে অপহরণ ঘটনার প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা সরিদ মোল্লার হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এছাড়া নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের কাইজদাহ গ্রাম থেকে গলাকাটা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে কাইজদাহ গ্রামের একটি রাস্তার পাশে লাশটি পড়ে ছিল।
নিহত যুবকের নাম সাহেদ আলী (২০)। সাহেদ যশোরের অভয়নগর উপজেলার হিদিয়া গ্রামের হাসান শেখের ছেলে। শেখহাটি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আজিজ বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের নখখালী গ্রামে আব্দুর রাজ্জাক মোল্লাকে (৫০) পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিবেশিরা। গতকাল রবিবার ভোরে তিনি মারা যান।
গ্রামবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গম মাড়াইকে কেন্দ্র করে শনিবার দুপুরে রাজ্জাক মোল্লার স্ত্রীর সঙ্গে প্রতিবেশিদের ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে প্রতিবেশিরা আব্দুর রাজ্জাককে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিঠ করে। প্রথমে তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে এবং অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। লোহাগড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নয়ন জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।