আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘শান্তিপূর্ণ কারচুপির’ পরিকল্পনা?

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জেতার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। স্থানীয় সাংসদ এবং বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের বাড়ি হওয়ায় প্রকাশ্যে কিছু করলে তাঁর বদনাম হবে—এই বিবেচনায় ‘শান্তিপূর্ণ কারচুপির’ পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিএনপি-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফায়েজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দল ২০টি কেন্দ্রে তাদের প্রার্থীর পক্ষে সিল মারার পরিকল্পনা করছে। এ ছাড়া তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত একটি সূত্রও একই ধরনের আভাস দিয়েছে।

ওই সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ইতিমধ্যে জামালপুরের ছয় উপজেলার চারটিতে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন। তাই শেষ ধাপে মাদারগঞ্জে ‘যেকোনোভাবে’ হোক আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীকে জেতানোর চেষ্টা করা হবে।
অবশ্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জীবনকৃষ্ণ সাহা দাবি করেন, ‘সিল মেরে জেতার কোনো পরিকল্পনা আওয়ামী লীগের নেই। বরং মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা দেখে আশা করছি মোট কাস্টিং ভোটের ৭০ শতাংশ আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী পাবেন। ’ তিনি অভিযোগ করেন বিএনপি পরাজয়ের আশঙ্কায় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।


আজ সোমবার মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী থাকলেও মূলত আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ওবায়দুর রহমান ও বিএনপি-সমর্থিত ফায়েজুল ইসলামের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বলছেন ভোটাররা। আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় নির্বাচনে জয়-পরাজয়কে তাঁর সম্মান রক্ষার বিষয় হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। আর বিএনপি বলছে এটা তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।
গতকাল রোববার সরেজমিনে জানা গেছে, পুরো উপজেলায় কারচুপি, কেন্দ্র দখলসহ নানা আশঙ্কার কথা আলোচনা হচ্ছে।

শনিবার দুপুরে জামালপুরের মাদারগঞ্জ পৌর এলাকার গাবেরগ্রাম বাজারের একটি স্থানে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছিলেন কয়েকজন ব্যক্তি। পরিচয় দিয়ে নির্বাচন কেমন হবে জানতে চাইলে আবদুস সামাদ নামের এক ব্যক্তি বলছিলেন, বলা যাচ্ছে না, কেন্দ্র দখলের কথা বিভিন্ন জায়গায় বলাবলি হচ্ছে। এর কারণ কী, জবাবে আবদুস সামাদসহ উপস্থিত আরও দু-একজন বলছিলেন, ২০০৯ সালে মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগ ও আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ফল স্থগিত করা হয়েছিল। পরে এ নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয়।

এতে প্রায় ছয় মাস ফল আটকে ছিল। নানা ঘটনার শেষে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী ওবায়দুর রহমানই বিজয়ী হয়েছিলেন। এবারও তিনি প্রার্থী।
এ ছাড়া গত দুই ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও এখানকার ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের তৎপরতাও এই আশঙ্কাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে ওবায়দুর রহমান বলেন, এ ধরনের অভিযোগ সঠিক নয়।

আর উপজেলা নির্বাহী ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান আগের দিনের মতো বলেন, বিএনপির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ থেকে ছয়জনের মতো প্রিসাইডিং কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার তালিকা তিনি দিতে চাননি।
এদিকে বিএনপির বিরুদ্ধেও বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ করছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি-সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর নিজ এলাকায় তাঁর পক্ষে কারচুপি হতে পারে বলে তাদের অভিযোগ। বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্নজনকে টাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।


তবে ফায়েজুল ইসলাম বলেন, এটা সঠিক নয়। এটা ‘ব্লেইম গেম’।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.