টপটেনে বাংলাদেশের ম্যাচগুলো ঢাকাতেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবু ঢাকার দর্শকদের আক্ষেপের শেষ ছিল না। মুশফিকরা কোনো ম্যাচে দাঁড়াতেই পারেননি। তারপর আবার অন্য ম্যাচেও জয়-পরাজয় নির্ধারণ হয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে। গ্যালারি ভরা থাকলেও ম্যাচগুলো দেখে দর্শকরা তেমনভাবে উত্তেজনায় কাঁপেনি।
তবে ঢাকার দর্শকদের কষ্টটা আজ থেকেই দূর হতে পারে। শেষ চার অর্থাৎ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে গেইলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও সাঙ্গাকারার শ্রীলঙ্কা। কাল লড়বে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর আবার ৬ এপ্রিল ফাইনাল। হারলেই বিদায়, এ কারণে আশা করছি তিনটি ম্যাচই দর্শকরা প্রাণভরে উপভোগ করবেন।
আসা যাক আজকের ম্যাচ প্রসঙ্গে। পাঠকরা নিশ্চয় অপেক্ষায় আছেন সম্ভাব্য বিজয়ী দল হিসেবে কার নাম উল্লেখ করব। দেখেন ক্রিকেট এমনিতেই অনিশ্চয়তার খেলা। এখানে কারো ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলা যাবে না কে জিতবে কে হারবে। তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগে শ্রীলঙ্কাকে অপ্রতিরোধ্য মনে হয়েছিল।
বাংলাদেশ সিরিজ ও এশিয়া কাপ খেলে নিজেদের যোগ্যতার শতভাগ প্রমাণ দিয়েছে। অনেকের মতো আমিও ভেবেছিলাম এবার টি-২০ শিরোপা শ্রীলঙ্কার ঘরে যেতে পারে। যদিও তারা গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডের কাছে ম্যাচ হেরে গেছে। তবু তারা শিরোপা জেতার প্রধান দাবিদার। তাহলে কি, আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে শ্রীলঙ্কা ফাইনালে চলে যাবে।
না, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বলেই হিসাব-নিকাশটা জটিল হয়ে পড়েছে। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে গেইল, স্যামিরা ভারতের কাছে যেভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে তাতে অনেকের মতো আমিও ধরে নিয়েছিলাম এদের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু সব ধারণাকে তারা পাল্টে দিয়েছে বাকি তিন ম্যাচ জিতে। শ্রীলঙ্কা ব্যাট বলে অবশ্যই শক্তিশালী। কিন্তু টুর্নামেন্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেনশনহীন মনে হচ্ছে।
যে কোনো পরিস্থিতিতে তারা প্রতিপক্ষকে ঠাণ্ডা মাথায় মোকাবিলা করতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ তাদের হাত ছাড়া হয়েই গিয়েছিল। অথচ শেষ ওভারে অধিনায়ক স্যামির দুর্দান্ত ব্যাটিং শুধু জয় এনে দেয়নি, প্রমাণ দিয়েছেন বিপদের সময় অধিনায়কের ভূমিকা কী হতে পারে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে চরম ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন গেইলদের পরাজয় শুধু সময়ের ব্যাপার। এখানেও ব্যাটিং ক্যারিশমা দেখিয়ে ১৬৭ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পেরেছিল। ম্যাচ জিততে এ টার্গেটও যথেষ্ট নয়।
অথচ দুর্দান্ত বোলিং করে পাকিস্তানকে চুরমার করে দেয়। সুতরাং এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ আজ পারবে না এ কথা বলার কারোর সাহস নেই। শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুদলই আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামবে। এখানে কে জিতবে সত্যিই আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তাছাড়া গত বিশ্বকাপে দুইদল ফাইনাল খেলে।
নিজেদের দেশেও শ্রীলঙ্কাকে কাঁদতে হয়েছিল। এই জেদটা অবশ্যই সাঙ্গাকারাদের ভেতর কাজ করবে। গ্রুপ আলাদা হলেও এবার প্রস্তুতি ম্যাচেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতে যায়। সুতরাং শ্রীলঙ্কা আজ মরণকামড় দেবেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ কি বসে থাকবে? অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানকে হারানোর পর তাদেরও আত্দবিশ্বাস তুঙ্গে রয়েছে।
সবচেয়ে বড় কথা ক্যারিবীয়রা এন্জয় করতে পারে। জিতুক বা হারুক মাঠে তারা সাধারণত টেনশনে থাকে না। এটা একটি দলের বড় গুণ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।