আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রেলওয়ের জলাশয়ে ভাগাড়

রাজশাহীতে রেলওয়ের জলাশয়ে আবর্জনার ভাগাড় (সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন) তৈরি করছে সিটি করপোরেশন। এ ব্যাপারে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কিছুই জানে না। আবার জলাশয়ে নির্মাণকাজ চালানোর জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরেরও কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন দাবি করেছে, এটা কোনো জলাশয় নয়। জায়গাটিও তাদের।

রাজশাহী নগরের কোর্ট স্টেশনের পাশে রেলওয়ের এই জলাশয়। এর অংশবিশেষ দখল করেই নির্মাণ করা হচ্ছে ভাগাড়।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, তারা আবর্জনার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য নগরের ছয়টি স্থানে যে ছয়টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণ করছে তার মধ্যে কোর্ট স্টেশনের পাশের এই জলাশয় একটি। এসব ভাগাড় নির্মাণে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিটি ভাগাড় নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় এক কোটি টাকা।

বাকি পাঁচটি ভাগাড় হচ্ছে নগরের কাজলায় একটি, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সীমানা প্রাচীরের মধ্যে একটি, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সীমানা প্রাচীরের মধ্যে একটি এবং তেরখাদিয়া এলাকায় দুটি।
গত সোমবার কোর্ট স্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রেলওয়ের জলাশয়ের একটা অংশ ইতিমধ্যে টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। সেখানে ফেলা হয়েছে বালির বস্তা। ঘিরে ফেলা জায়গায় কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছেন। ওই জায়গাতেই হবে ভাগাড়।


রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) আহসানুল হাবিব বলেন, এখানে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে আবর্জনার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা হবে। বাইরে থেকে বোঝা যাবে না যে এর ভেতরে আবর্জনা রাখা আছে। এর চারদিকে আট দশমিক ২৭ মিটার উঁচু দেয়াল থাকবে। ট্রাক সরাসরি ভেতরে ঢুকে ময়লা নিয়ে চূড়ান্ত ভাগাড়ে চলে যাবে। নগরের ভেতর থেকে যে ময়লার গাড়িগুলো আসবে সেগুলো কপিকলের মাধ্যমে সরাসরি ট্রাকে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।


পরিবেশবাদী সংগঠন হেরিটেজ রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও নদী গবেষক মাহাবুব সিদ্দিকী বলেন, প্রায় ১০০ বছর ধরে ওই জায়গাটি ঝিল হিসেবে পরিচিত। সেখানে মাছ চাষ হয়েছে, জলজ উদ্ভিদ রয়েছে। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএস থেকে প্রকাশিত তাঁর লেখা রাজশাহীর সেকাল একাল গ্রন্থে মহানগরের হারিয়ে যাওয়া দিঘি, পুকুর, জলায় প্রবন্ধে এই ঝিলের উল্লেখ রয়েছে।
রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মোস্তাক আহাম্মেদ বলেন, তিনি ঢাকায় আছেন। তাঁর জানামতে ওই জলাশয় রেলওয়ের সম্পত্তি।

ভাগাড় করার জন্য এটি সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হয়নি। তিনি বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাঁর দপ্তরের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, নগরের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য এর আগে ওই এলাকাটি সিটি করপোরেশন চেয়েছিল। বিষয়টি তাঁরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু মন্ত্রণালয় এতে সম্মত হয়নি। যা তখনই সিটি করপোরেশনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।


জলাশয়ের ভেতর এই নির্মাণকাজের মাধ্যমে পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজশাহীর পরিবেশ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, পরিবেশ আইন অনুযায়ী জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনোভাবে এর শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবে না। তবে অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণক্রমে শর্ত শিথিল করা যেতে পারে। তিনি বলেন, তাঁর জানামতে সিটি করপোরেশন এ ধরনের কোনো অনুমতির জন্য আবেদন করেনি।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, এই জায়গা সিটি করপোরেশনের।

রেলপথ নির্মাণের সময় মাটি ওঠানোর কারণে এখানে গর্ত হয়েছিল। এটা কোনো পুকুর বা জলাশয় নয়।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.