একটা শব্দই বারবার মনে এল—আত্মবিশ্বাস। মনের মধ্যে যেটির থাকা না-থাকায় বিস্তর ব্যবধান। থাকলে চেহারায় স্বচ্ছ প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠবে। না থাকলেও বোঝা যাবে বুকের ভেতর ঝোড়ো হাওয়া বইছে। আপনি কাঁপছেন।
মহেন্দ্র সিং ধোনি প্রথম অংশেই পড়েন। চেহারায় অদ্ভুত দ্যুতি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারত জিততেই এসেছে—ফাইনালের আগের দিন পর্যন্ত ভালোভাবেই তা বোঝাতে পারলেন। কথায় দারুণ আত্মবিশ্বাস। যা অনুবাদ করলে একটা সম্ভাবনারই ছবি তৈরি হয়—ভারতের হাতে শিরোপা।
ধোনিও জানেন, ১২০ কোটি ভারতবাসী ভাসছে আশার তরিতে। পাহাড়সম প্রত্যাশার চাপ মাথার ওপর। কিন্তু আত্মবিশ্বাসের আলোকছটা ভেদ করে চিন্তার রেখা খুঁজে বের করা কঠিন। ফাইনাল-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় দলের আত্মবিশ্বাসের বিজ্ঞাপন হয়ে উঠল অধিনায়কের সপ্রতিভ হাসিমুখ। কেউ একজন ২০০৭ বিশ্বকাপের কথা মনে করিয়ে দিতে চাইলেও ধোনি পেছনে তাকাতে রাজি নন, ‘চার দিন আগের কথাই মনে থাকে না।
আপনি সাত বছর আগের কথা বলছেন! ২০০৭ বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে আমাদের কেমন লাগছিল সেটি এখন মনে করা কঠিন। ’
২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফি ধোনির নেতৃত্বে উঁচিয়ে ধরেছিল ভারতই। কিন্তু শিরোপার ক্ষুধা কি আর যায়! ভারতীয়দের আশার পেছনে আছে আরেকটা কারণ। ২০১১ বিশ্বকাপ, ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটাও জিতলে যে আইসিসির তিনটি বড় টুর্নামেন্টেরই চ্যাম্পিয়ন হবে ভারত!
তবে ধোনি মনোযোগ রাখতে চান শুধুই ম্যাচের ওপর, ‘ফাইনালে ভালো খেলাই আসল। অন্য ব্যাপারগুলো নিয়ে আমরা আসলেই ভাবছি না।
দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ’
শ্রীলঙ্কানরা নিশ্চয়ই বিশ্বকাপ জেতার মন্ত্র আরও বেশি জপছে। গতবার ঘরের মাঠে এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালেই হার। শিরোপার সুবাস পেতে পেতেও পাওয়া হয়নি। সেই আক্ষেপ দূর করার লক্ষ্য তো আছেই, লঙ্কানদের কাছে আরও একটা কারণেও আজকের ফাইনালটা গুরুত্বপূর্ণ।
এই ম্যাচ দিয়েই টি-টোয়েন্টি থেকে তারা বিদায় দেবে মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারাকে। দুই তারকাকে বিদায়ী উপহার হিসেবে টি-টোয়েন্টির শিরোপার উপহার দেওয়ার চেয়ে বড় আর কি হতে পারে!
ধোনির কাছে শ্রীলঙ্কা শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মর্যাদাই পাচ্ছে। মিরপুরের উইকেটের উপযোগী স্পিনার আছে লঙ্কানদের, আছেন সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনে। এই দুজনের প্রসঙ্গ এলে অবশ্য সুরটা একটু বদলে ফেললেন ভারত অধিনায়ক, ‘যে দল ভালো খেলবে তাদেরই জেতা উচিত। আমরা শুধু এই দিকটাতেই দৃষ্টি দিচ্ছি।
ওই দুজন সব ধরনের ক্রিকেটেই দীর্ঘদিন থেকে শ্রীলঙ্কা দলে আছে। ড্রেসিংরুমে তাদের উপস্থিতির অভাব নিশ্চয়ই অনুভব করবে ওরা। ’
ফাইনালের আগে প্রতিপক্ষকে প্রাপ্য সম্মান দিলেন। কিন্তু চাতক পাখির মতো সীমান্তের ওপারে তাকিয়ে থাকা দেশবাসীর জন্য কী বলবেন ভারত অধিনায়ক? ‘জাতির জন্য কোনো বার্তার কথা যদি বলেন, শুধু ফাইনালের আগেই তা আমরা দিতে চাই না। আমাদের হূদয়ে যা আছে, সারা বছর সেটিই থাকে।
এ নিয়ে আর কথা না বলি’—বললেন ধোনি।
না বলেও অনেক কিছুই যেন বলে দিলেন ভারত অধিনায়ক। আকাশছোঁয়া আত্মবিশ্বাস থাকলে যা হয় আরকি!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।