টস জিতে ফিল্ডিং নেয়ার সময়ই অধিনায়ক লাসিথ মালিঙ্গা বলেছিলেন, মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারার বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখতে চান তারা। কথা রেখেছে শ্রীলঙ্কা দল। দুই ব্যাটিং কিংবদন্তির অবদানও কম নয়। মাহেলা ইনিংসের শুরুর দিকে নির্ভরতা যুগিয়েছেন। আর অর্ধশতক করে সাঙ্গাকারা দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের বন্দরে।
বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ চারটি অর্ধশতকের রেকর্ড স্পর্শ করা বিরাট কোহলির ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের পুঁজি গড়ার পথেই ছিল ভারত। কিন্তু শুরুর পাওয়ার প্লের মতো শেষ দিকে ‘ডেথ ওভারে’ শ্রীলঙ্কার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়েই আসলে হেরে যায় প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়নরা। প্রথম ৪ ওভারে ১৫ রান নেয়া ভারত শেষ ৪ ওভারে যোগ করে মাত্র ১৯ রান। ৪ উইকেট হারিয়ে তোলা ১৩০ রানের এই মোটামুটি সংগ্রহ শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা টপকে যায় ১৩ বল বাকি থাকতেই।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান ফিরে পাওয়া ও টি-টোয়েন্টির শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি মধুর একটি প্রতিশোধও নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
২০১১ সালে সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের কাছেই হেরেছিল তারা। ২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ২০০৯ ও সর্বশেষ ২০১২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালেও পরাজিত দল ছিল শ্রীলঙ্কা।
মোটামুটি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫.৫ ওভারে ৪১ রানেই দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের বিদায়ে শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি শ্রীলঙ্কার।
দশম ওভারে সুরেশ রায়নার বলে মিডউইকেটে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অসাধারণ ক্যাচে পরিণত হয়ে বিদায় নেন অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ জয়াবর্ধনে।
এরপর লাহিরু থিরিমান্নের দ্রুত বিদায় কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলে শ্রীলঙ্কাকে।
অমিত মিশ্রর বলে থিরিমান্নের বিদায় নেয়ার সময় শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৭৮/৪।
তবে এরপরও সাঙ্গাকারা-থিসারা পেরেরার সৌজন্যে সহজ জয়ই পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। পঞ্চম উইকেটে ৩২ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫৬ রানের জুটি গড়েন তারা। ৫২ রানে অপরাজিত সাঙ্গাকারার ৩৫ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ১টি ছক্কা।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে বড় সংগ্রহ গড়তে না পেরেই আসলে ম্যাচটা অর্ধেক হাতছাড়া হয়ে যায় ভারতের।
দ্বিতীয় ওভারেই অজিঙ্কা রাহানের বিদায়ে শুরুটা ভালো হয়নি তাদের। দ্বিতীয় উইকেটে রোহিত শর্মার সঙ্গে কোহলির ৬০ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় ভারত।
ব্যক্তিগত ১১ রানে মিডউইকেটে অধিনায়ক লাসিথ মালিঙ্গার হাতে জীবন পান কোহলি। রোহিতকে রান-আউটের সহজ সুযোগও হাতছাড়া করেন মালিঙ্গা। সে সময় ১১ রানে ব্যাট করছিলেন তিনিও।
রোহিতকে সচিত্রা সেনানায়েকের ক্যাচে পরিণত করে ৯ ওভার স্থায়ী জুটি ভাঙেন রঙ্গনা হেরাথ। এরপরই পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক কোহলি।
যুবরাজের সঙ্গে ৭.৪ ওভারে ৫৫ রানের জুটি গড়েন কোহলি। ব্যাটে বলে সংযোগে যুবরাজের অস্বাভাবিক ব্যর্থতা কোহলির কাজ অনেক কঠিন করে তুলেছিল। ৪৬ বলের জুটিতে যুবরাজের অবদান ২১ বলে ১১ রান।
শেষ দিকে অফস্ট্যাম্পের বাইরে টানা ইয়র্কার দিয়ে ব্যাটসম্যানদের কাজটা অনেক কঠিন করে তুলেছিলেন মালিঙ্গা ও নুয়ান কুলাসেকারারা। এমনকি কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানও তখন সহজে রান পাননি।
শেষ বলে রান-আউট হওয়ার আগে ৭৭ রান করেন কোহলি। তার ৫৮ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ৪টি ছক্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১৩০/৪ (রোহিত ২৯, রাহানে ৩, কোহলি ৭৭, যুবরাজ ১১, ধোনি ৪*; হেরাথ ১/২৩, ম্যাথিউস ১/২৫, কুলাসেকারা ১/২৯)।
শ্রীলঙ্কা: ১৭.৫ ওভারে ১৩৪/৪ (কৌশল ৫, দিলশান ১৮, জয়াবর্ধনে ২৪, সাঙ্গাকারা ৫২*, থিরিমান্নে ৭, থিসারা ২১*; রায়না ১/১৮, রায়না ১/২৭, মিশ্র ১/৩২, অশ্বিন ১/২৯)।
ম্যাচ সেরা: কুমার সাঙ্গাকারা।
টুর্নামেন্ট সেরা: বিরাট কোহলি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।