যাদুর কাঠি যাদুর কাঠি
জীয়ন কাঠি জীয়ন কাঠি
সোনার কাঠি রুপার কাঠি
একটু তোমার আদর মাগি
সামাদ আমার জীয়নকাঠি
নিয়ে আসনা সোনার কাঠি
ছুয়ে দাওনা রুপার কাঠি
তার সাথে আদর ভরে
চুম দিয়ে দাও একটু খানি
দুচোখ কপাল ভরে।
সোনার কাঠি রুপার কাঠি
একটু তোমার আদর চাহি।
অনেকক্ষন ধরে মজার ছড়া বলে বলে সামাদের রাগ কমানোর চেষ্টা করছে শ্যামলী। সামাদ অনেক রেগে আছে আজকে। সে সচরাচর রাগেনা।
খুব হাসিখুশী প্রানবন্ত মানুষ হিসাবে সবাই তাকে জানে।
কালকে থেকে তার মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে আছে। মন ও ভাল করতে পারছেনা । হামিদার এই ভাইটিকে সে দুই চোখে দেখতে পারেনা। ব্যাটা বাইরে থাকে বলে দেশের সব ভদ্রতা নিয়ম ভূলে বসেছে নাকি?তার সামনে দুইবার হামিদাকে জড়িয়ে ধরেছে।
হামিদার জন্য ডায়মন্ডের নেকলেস এনেছে ফুটানী দেখানোর জন্য। সেটা হামিদার হাতে দিলেই হয়। পরিয়ে দিতে হবে?হামিদা অস্বস্তিভরে একবার স্বামী একবার ভাইয়ের দিকে তাকাচ্ছে। কিন্তু হামিদা হাত থেকে নিয়ে নিলে তো হত। কেন সুযোগ দিল জিনিস পরানোর।
সারারাত অস্থিরতায় এপাশ ওপাশ করে ঠিকমত ঘুমাতে পারলনা। সে বুঝতে পারলনা আসলে এটা তার পুরুষের অহংবোধ। বস্তুত পুরুষ এভাবে ভাবে। আমি এভাবে কেন ভাবছি। আমি বাহিরে সঙ্গ করছি অথচ স্ত্রীর সামান্য ত্রুটি মেনে নিতে পারছিনা।
আজকে দুইবার ঝগড়া হল অফিসে। পারচেজ অফিসার লোকটা এত কুটনা। অযথা পিছনে লেগে থাকে। মেজাজ খারাপ থেকে কাজে ভূল করেছে বার বার। খেতে হয়েছে বসের ঝাড়ি।
মেজাজ খারাপ হামিদার উপর। মন ভাল করার জন্য তাড়াতাড়ি চলে এসেছে শ্যামলীর কাছে। শ্যামলী ও আজকে বসে আছে খেজুরী গল্পের খালারে নিয়ে। গল্প আর ফুরায় না। প্রায় আধাঘন্টা শ্যামলী কি পারতনা কিছু একটা বলে খালাকে বিদায় করতে।
কি যে হল মনে মনে সবার উপরে রেগে আছে। মনে হচ্ছে তার জন্য আজকে কার ও সময় নাই। সারা পৃথিবী কি মুহূর্তে হয়ে গেল তার পর?এত ভালবাসার স্ত্রী শ্যামলী তার জন্য সবসময় এত পাগলের মত করে। পা ধুয়ে দেয়। খাইয়ে দেয় আজকে কি শ্যামলীর চোখে পড়ছেনা তার ক্লান্তি?
বাসায় যতবার ফোন করছে এনগেজ টোন।
হামিদা কার সাথে এত কথা বলে?সে ভূলে গিয়েছে তার ছেলে এসেছে বোর্ডিং থেকে। তার অভ্যাস বাসায় থাকলে অনবরত ফোনে কথা বলে। হতাশার সময় আমরা এভাবে বিশ্লেষন করি প্রিয়জনকে। যাতে ভূল বোঝাবোঝি বেড়ে যায় আর ও বেশী। পরক্ষনে সচেতন হয় সামাদ।
কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে মুখের ভাবটাকে স্বাভাবিক করতে পারলনা হতাশার কারনে। আসলে সে নিজেই অনৈতিক সম্পর্কের ভারে বিপর্যস্ত হয়ে আছে। যেহেতু দোষী সে নিজে বেশী আরেকজনের দোষ খূজে মনে সান্তনা পেতে চাচ্ছে।
শ্যামলী বুঝতে পারছে আজকে ওনার মন খারাপ। খালাকে অনেকদিন পরে ডেকে এনেছে রাতের খাওয়ার খাইয়ে দিবে বলে।
খালার সামনে ওনার সামনে ঠিকমত কথা ও বলতে পারছিলনা। অবশেষে খালা কি বুঝে বলল আমি পাশের মিতার ঘর থেকে ঘুরে আসি। তখন থেকে শ্যামলী চেষ্টা করছে সামাদের মন ভাল করতে।
আজকে সে অনেকটা উন্মত্তের মত শ্যামলীর উপরে ঝাপিয়ে পড়ল। ভালবাসা বা শারীরিক কামনা থেকে যতটা না তার চেয়ে তার অন্যায় হতাশা বোধ বের করে দিতে চাইল যেন এই শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে।
কি হইছে তোমার?শ্যামলী যেন এতক্ষনে সামাদের যন্ত্রনাকাতর ক্ষতবিক্ষত হৃদয়টাকে দেখতে পেল। খুব যত্ন করে সামাদের মাথা মুছিয়ে দিল । ভালবেসে মাথার চুলে আঙ্গুল বুলিয়ে দিতে লাগল। কিছুক্ষনের মধ্যে সামাদ গভীর ঘুমে তলিয়ে পড়ল।
শ্যামলী অতন্দ্র প্রহরীর মত সারারাত তার শিয়রে বসে রইল।
মুগ্ধ হয়ে সামাদের জোৎস্না প্লাবিত মুখটা দেখতে লাগল।
আহ মানুষটা এত সুন্দর। সে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে।
স্বামীর ভার্সিটি লাইফের একটা ছবি পেল হামিদা পুরানো কাগজের বাক্সে।
মনে মনে ভাবে আমার স্বামী টা দেখতে অনেক সুন্দর।
ফোন বেজে উঠল। ধরতে শোনা গেল শহীদ ভাইয়ের গলা।
কিরে আমার উপর কি বিরক্ত?ফোন দিসনা ফোন ধরিসনা। সে আসলে বিরক্ত হয়ে আছে শহীদ ভাইয়ের কান্ডে।
স্বামীর সামনে এত উদ্ভট আচরন না করলে পারতে বলে ফেলল বিরক্ত হয়ে।
বোকা মেয়ে তোর হাসবেন্ডকে জেলাস করতে চেয়েছিরে। দেখবি তোর জন্য এখন পাগল হয়ে যাবে। বলে হাহা করে হাসতে থাকল।
রেগে সে ফোন রেখে দিল।
বারান্দায় দাড়িয়ে স্বামীর প্রতীক্ষা করতে লাগল।
সেই রাতে সামাদ ঘরে ফিরে এলনা।
(পরবর্তীতে)।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।