পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বরেণ্য সাংবাদিক ও কলামিস্ট এবিএম মূসা (৮৩)। বুধবার দুপুর পৌণে ২টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে... রাজেউন)। এবিএম মূসার মেয়ে পারভীন সুলতানা ঝুমা তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খ্যাতিমান এ সাংবাদিক অনেক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গত ২৯ মার্চ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর মধ্যে কয়েকবার হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে নেওয়া হয় তাকে। সর্বশেষ সোমবার রাত আড়াইটা থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার এবিএম মূসার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ল্যাব এইডে হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. বরেণ চক্রবর্তী বলেছিলেন, 'হিজ কন্ডিশন ইজ ভেরি ক্রিটিক্যাল। ' আজ বুধবার বিকেলে প্রথিতযশা এ সাংবাদিকের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে মেডিকেল বোর্ড বসার কখা ছিল।
এ ব্যাপারে বুধবার সকালে এবিএম মূসার ছেলে নাসিম মূসা মুঠোফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'বাবার অবস্থা আগের চেয়ে একটু ভালো।
বিকেলে একটি মেডিকেল বোর্ড বসবে। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে চিকিৎসার পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে। ' কিন্তু সেই সুযোগ আর কাউকে দিলেণ না দেশের প্রবীনতম এ সাংবাদিক। সবাইকে কাঁদিয়ে জীবনের ইতি টানলেন তিনি।
এবিএম মূসা একাধারে একজন সাংবাদিক, সম্পাদক ও কলাম লেখক।
তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ক্লাবের আজীবন সদস্য। জাতীয় প্রেস ক্লাবের চারবার সভাপতি ও তিনবার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন।
১৯৫০ সালে দৈনিক ইনসাফের মাধ্যমে তার সাংবাদিকতার শুরু। ওই বছরেই ইংরেজি দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারে যোগ দেন।
১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান অবজারভারে রিপোর্টার, স্পোর্টস রিপোর্টার ও বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে সংবাদে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিবিসি, সানডে টাইমসসহ বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদদাতা হিসেবে রণাঙ্গন থেকে সংবাদ প্রেরণ করতেন। স্বাধীনতার পর বিটিভির মহাব্যবস্থাপক, মর্নিং নিউজের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৮ সালে ব্যাংককে অবস্থিত জাতিসংঘের পরিবেশ কার্যক্রমের (এসকাপ) এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক পদে যোগ দেন।
১৯৮১ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে তিনি কিছুদিন দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে আলোচক ও সংবাদ বিশ্লেষক হিসেবে অংশ নিয়ে সাধারণের মাঝে জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
এবিএম মুসা ১৯৩১ সালে ফেনীর ফুলগাজী থানার ধর্মপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।