আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ট্যাকা দেন, দুবাই যামু-২: রেমিট্যান্সের হিসাব নিকাশ

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া! ট্যাকা দেন, দুবাই যামু-১: স্বপ্নের দেশে যাওয়া বিশ্বব্যাংকের হিসাবে বর্তমানে পৃথিবীর ২১৫ মিলিয়ন লোক জন্মভূমিতে থাকে না। তবে, তারা উদ্বাস্তুও নয় সে অর্খে। ওরা অভিবাসী। আমেরিকা, রাশিয়া ফেডারেশন, জার্মানি, সৌদি আরব আর কানাডা হলো অভিবাসীদের পছন্দের দেশ।

তবে, জনসংখ্যার অনুপাতে অভিবাসী নির্ভর দেশ হলো – কাতার (৮৭%), মোনাকো (৭২%), আরব আমিরাত (৭০%) এবং কুয়েত (৬৯%)। ২০১০ সালে বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৪৪০ বিলিয়ন ডলার এর মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলো পেয়েছে ৩২৫ বিলিয়ন। যারা পেয়েছে তাদের মধ্যে শীর্ষে হল ভারত, চীন, মেক্সিকো, ফিলিপাইন এবং ফ্রান্স। আউটওয়ার্ড রেমিট্যান্সের শীর্ষ দেশগুলো হল আমেরিকা, সৌদি আরব, সুজারল্যান্ড ও রাশিয়া। বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির নানান চড়াই-উৎরাই, মন্দাভাব থাকা স্বত্তেও বিশ্বব্যাংকের হিসাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে বৈকি কমবেনা।

তাদের হিসাবে এই বাড়ার হার এই বছরে মানে ২০১২ সালে প্রায় ৭.৩%, ২০১৩ সালে হবে ৭.৯% এবং ২০১৪ সালে সেটা দাড়াবে ৮.৪%-এ। এর মানে হচ্ছে ২০১৪ সাল নাগাদ বাৎসরিক রেমিট্যান্সের পরিমাণ হবে ৫১৫ বিলিয়ন ডলার! সাম্প্রতিককালে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম আরো বেড়েছে। এখন এটা প্রায় ১০০ ডলার। তারমানে ওরা আরো বড়লোক হবে। তবে, গালফ কোঅপারেশভুক্ত দেশগুলো কিন্তু এখন আর বোকা নাই।

তারা তাদের নিজেদের লোকদের এপ্লয় করতে চাচ্ছে। তাদেরকে শিক্ষিত এবং দক্ষ করার জন্য চেষ্টা করছে। ফলে, এই দেশগুলোতে নানান ধরণের হিসাব-নিকাশ হচ্ছে এখন অভিবাসীকে কেন্দ্র করে। আশপাশের দেশগুলোর পরিস্থিতি দেখা যাক। প্রতিবেশী ভারত হলো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স প্রাপ্তির দেশ।

প্রতিবছর সেটা বাড়ছে। ২০১১ সালে ছিল ৫৮ বিলিয়ন। মজার বিষয় হচ্ছে ২০১১ সালে আরব দেশগুলো থেকে তাদের রেমিট্যান্স বেড়েছে। ফিলিপাইন- ২০১১ সালে ২৩ বিলিয়ন ডলার কামিয়েছে। ২০১১ সালে ওদের প্রবৃদ্ধ হলো ৭%।

মধ্যপ্রাচ্য ছাড়া ওরা আমাদের প্রতিদ্বন্দী হংকং, সিঙ্গাপুরেও। পাকিস্তান- ১২ বিলিয়ন ২০১১ সালে। ২০১১ সালের গ্রোথ হচ্ছে ৩১%!!! পাকিস্তান সরকারের একটি রেমিট্যান্স ইনিশিয়েটিভ আছে যা প্রবাসী পাকিস্তানীদের ফরম্যাল চ্যানেলে টাকা পাঠাতে উতসাহিত করে। সৌদিসরকারের নিটাকাত আইন আছে। এর মানে হলো কোন দেশ থেকে ২০% লোক এক কোম্পানিতে নেওয়া যায় না।

কিন্তু হাউসকীপারের বেলায় এটি প্রযোজ্য নয়। সৌদি আরবে হাউস কীপারদের মধ্যে ফিলিপিনো আর শ্রীলংকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে অভিবাসী প্রতি রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ – ফিলিপাইন ------------------------ ৫,৩৭৯ ডলার ভারত ----------------------------- ৫,১০৫ ডলার ভিয়েতনাম ------------------------ ৪,০৪২ ডলার পাকিস্তান -------------------------- ২,৫৬৪ ডলার বাংলাদেশ-------------------------- ২,২২৮ ডলার বোঝায় যাচ্ছে যে, আমাদের অভিবাসীদের মধ্যে দক্ষ লোকের সংখ্যা কম। আমরা কমমজুরীর কাজগুলো করছি। গতকাল প্রথম আলোতে আমার লেখা পড়ে মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান আমাকে ফোনে জানিয়েছেন যে, সৌদি আরবে উনি অনেক বাঙ্গালি অবিবাসীকে দেখেছেন যারা বাংলাদেশী টাকায় মাত্র ৩-৫০০০ টাকা বেতন পান! এই সামান্য কয়টি টাকার জন্য কত পরিশ্রম তারা করে এবং কতো টাকা খরচ করে গিয়েছেন তার খবর কে জানে! মাস কয়েক আগে সিঙ্গাপুর গিয়ে আমার একটা অভিজ্ঞতা হলো।

সেখানকার সবচেয়ে বড় শিপবিল্ডিং কোম্পানিতে একজন বাংলাদেশী ওয়েল্ডার মাসে ৮০০ ডলার পেলে ভারতীয়রা পান ২২০০ ডলার। কারণ তাদের একটা সার্টিফিকেশন আছে যেটা আমাদের ওয়েল্ডারের নাই। আজ পত্রিকায় দেখলাম আগামীতে বিদেশে কর্মসংষ্থানে যাওয়ার লোকের পরিমাণ ৫০০% বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের এখন থেকে কী কী করা উচিৎ যাতে কীনা আমাদের গড় রেমিট্যান্স বাড়ানো যায়? নেপালের মতো ছোট্ট দেশের রেমিট্যান্স ইনকাম তাদের ডিডিপির ২৪% এবং আমার ধারণা আমাদের দেশের বেলায়ও সেটি করা সম্ভব। প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে? উত্তর আমি জানি না।

খুজে বেড়াচ্ছি। বের করে ফেলবো ইনশা আল্লাহ! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.