আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বারাক ওবামা, “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ” বন্ধ করে নিজ দেশের গান-সন্ত্রাস (Gun violence) বন্ধ করুণ

যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য যুক্তরাষ্ট্র যতই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে অন্য দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করুক না কেন কানেটিকাটে বিদ্যালয়ে হত্যাযজ্ঞের পর যুক্তরাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস যে কত ভয়াবহ তা বিশ্ববাসীর কাছে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে। অ্যাডাম লানজা নামের ২০ বছর বয়সি এক তরুণ কানেটিকাটের স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ২০ শিশুসহ ২৬ জনকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন। হত্যাকারীর নাম যদি এডাম ল্যানজা না হয়ে মোহাম্মদ এডাম হতো, তাহলে সে হতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, আল-কায়েদা নেটওয়ার্কের হাজারতম সদস্য ইত্যাদি ইত্যাদি... আর এখন হয়তো তাকে দেখা হবে মানসিক বিকারগ্রস্থ কোন রোগী হিসেবে। নাফিসরাই শুধু জঙ্গি হয়ে উঠে না, যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাদী ভোগবাদী মডার্ন জীবনদর্শনও তৈরি করে হাজার হাজার উন্মত্ত জঙ্গি। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত অন্য দেশের কথিত জঙ্গিবাদ দমনের আগে নিজ দেশের জঙ্গিবাদ দমন করা।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান, তাদের সামজিক কাঠামো এবং তাদের কথিত অবাধ ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং উদারতাবাদ (Liberalism) সর্বোপরি তাদের পুঁজিবাদী সিস্টেম যে গান-কালচারের সংস্কৃতি তৈরি করেছে তাই সেদেশে তৈরি করে হাজার হাজার উন্মত্ত সন্ত্রাসী । স্কুলে, পাবে, রেস্তোরায় যাদের নির্বিচার সন্ত্রাসী/ জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ছাত্র, শিশু, শিক্ষক থেকে শুরু করে পার্লামেন্ট সদস্য, এমনকি সেনা কর্মকর্তা। প্রতিবছর বিভিন্ন গান ভায়োলেন্সে আমেরিকায় ৯০০০ এরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। গত বছরেই ১০৭২৮ জন আমেরিকান এই গান কিলিং এ প্রাণ হারান। কানেটিকাটে বিদ্যালয়ে হত্যাযজ্ঞকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের গান কিলিং অহরহ ঘটে চলেছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিপণীবিতানসহ বিভিন্ন বেসামরিক স্থাপনায় প্রায়ই এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা ঘটছে । নিচে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব মডার্ন জঙ্গিদের জঙ্গি হামলার খতিয়ান তুলে ধরলাম- সন্ত্রাসী হামলা ১ঃ ২০১২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনেয়াপলিস নগরীতে একটি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত বাণিজ্যিক ভবনে চারজনকে গুলি করে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছেন এক বন্দুকধারী। পুলিশ পৌঁছার আগেই বন্দুকধারী নিজের অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সন্ত্রাসী হামলা ২ঃ ১৪ অগাস্ট, ২০১২ যুক্তরাস্ট্রের টেক্সাসের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে গুলি চালিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা ও এক বেসামরিক লোককে হত্যা করে এক বন্দুকধারী। সন্ত্রাসী হামলা ৩ : ৫ অগাস্ট, ২০১২ সাবেক সেনা কর্মকর্তা ওয়েড মাইকেল পেজ উইসকনসিনের একটি শিখ মন্দিরে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ছয় জনকে হত্যা করে যাদের মধ্যে এক নারীও ছিলেন।

ওই ঘটনায় আরো তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়। হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর আত্মহত্যা করেন ওয়েড। সন্ত্রাসী হামলা ৪ঃ ২০১২ সালের ২০ জুলাই, কলোরাডোর অরোরায় ব্যাটম্যান সিনেমার প্রিমিয়ার শোতে বন্দুকধারীর হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছিল। সন্ত্রাসী হামলা ৫ঃ ৮ জানুয়ারি, ২০১১: অ্যারিজোনার একটি মুদি দোকানের বাইরে বন্দুকধারীর গুলিতে ছয় জন নিহত হয়। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য গ্যাব্রিয়েলে গিফোর্ডসসহ ১৩ জন আহত হন।

এই হতাহতের ঘটনায় অভিযুক্ত জ্যারেড লি লাফনার সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। সিরিজ সন্ত্রাসী হামলা ৬ঃ ২০১১ সালে গান কিলিং এ মারা যায় হাজার হাজার নিরীহ আমেরিকান। এফ বি আই;র রিপোর্ট অনুযায়ী ওয়াশিংটন এ প্রতি লাখে গান কিলিং এ প্রাণ হারান ১২.৫ জন, মিসৌরিতে ৪.৬ জন, টেনিসে ৩.৮ জন, সাউথ ক্যারোলিনায় ৪.৮ জন, মেরিল্যান্ডে ৪.৭ জন, কানেটিকাটে ২.৬ জন, মিশিগানে ৪.৬ জন, জর্জিয়ায় ৩.৮ জন, লুইজিয়ানায় ৮.৮ জন, আরাকানস এ ৩.৭ জন। সন্ত্রাসী হামলা ৭ঃ ৫ নভেম্বর, ২০০৯: টেক্সাসের ফোর্টহুডে একটি সেনা প্রস্তুতি কেন্দ্রে এক বন্দুকধারীর গুলিতে ১৩ জন নিহত এবং ২৪ জনের বেশি আহত হয়। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর সাইকিয়াট্রিস্ট মেজর নিদাল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

সন্ত্রাসী হামলা ৮ঃ ১০ মার্চ, ২০০৯: আলবামা অঙ্গরাজ্যে মাইকেল ম্যাকলেন্ডন (২৮) নামের এক যুবক গুলি চালিয়ে মা ও চার আত্মীয়সহ ১০ জনকে হত্যার পর আত্মহত্যা করে। সন্ত্রাসী হামলা ৯ঃ ১৬ এপ্রিল, ২০০৭: সেউং-হুই চো (২৩) নামের এক যুবক ভার্জিনিয়ার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে গুলিবর্ষণ করে ৩২ জনকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন। সন্ত্রাসী হামলা ১০ ঃ ২০০৬ সালের ২ অক্টোবর পেনসেলভেনিয়ার নিকের মাইন্সে আমিশ স্কুলে চার্লস কার্ল রবার্টস নামে ৩২ বছরের এক যুবক গুলি করে ৫ ছাত্রীকে মেরে ফেলার পর সে নিজেকেও গুলি করে হত্যা করে। সন্ত্রাসী হামলা ১১ ঃ ২০০৫ সালের ২১ মার্চ রেড লেকের মিনেসোটায় রেড লেক হাইস্কুলে এক বন্দুকধারীর গুলিতে ৯ জন মারা যায়। জেফরি ওয়েইজ নামে ১৭ বছরের এক যুবক এসময় গুলি করে তার দাদাসহ ৯ জনকে হত্যার পর নিজেও গুলি করে আত্মহত্যা করে।

সন্ত্রাসী হামলা ১২ ঃ ২০০২ সালের ২৮ অক্টোবর আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ে রবার্ট ফ্লোরেস নামে ৪০ বছরের এক নার্সিং ছাত্র গুলি করে প্রতিষ্ঠানটির ৩ শিক্ষককে হত্যা করার পর সে আত্মহত্যা করে। কেন এতো গান কিলিং ঃ কোটি কোটি অস্ত্র মার্কিন জনগণের কাছে সহলভ্য হয়ে উঠার পেছেনে যুগপৎ দায়ী যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবসায়ি মুনাফা খোর , এই মুনাফাখোরদের সহযোগী প্রশাসন এবং সেখানকার কালচার। ১। মিলিটারি পুঁজিবাদ ও বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ব্যবসাঃ বিপজ্জনক মারণাস্ত্রের সহজ লভ্যতাই যুক্তরাষ্ট্রে গান কিলিং এর মূল কারণ আর তার জন্য দায়ী মিলিটারি পুঁজিবাদ। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আয়ের উৎস তাদের ওয়ার ইন্ডাস্ট্রি, বিশ্বব্যাপী উত্তেজনা, অস্থিরতা এবং যুদ্ধের মাধ্যমে বিলিয়ন বিলিয়ন অস্ত্র বিক্রি করে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবসায়িরা।

এটা সবাই জানে। কিন্তু এই মিলিটারি পুঁজিবাদ যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিপতিদের এতোই মুনাফা লোভী করে তুলেছে যে তারা নিজ দেশের জনগনের কাছেও সিভিলিয়ান অস্ত্র বিক্রি করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করে। সিভিলিয়ান অস্ত্র ব্যবসা বিলিয়ন-ডলার ব্যবসা। আমেরিকার প্রতি ১০০ জনে ৮৯ টি অস্ত্র আছে তথা আমেরিকার নাগরিকদের কাছে প্রায় ২৭ কোটি অস্ত্র আছে। বিশ্বের বিভিন্ন সেনাবাহিনী এমনকি বিশেষ বাহিনীর ব্যবহার্য রাইফেল, কার্বাইন (যেমন M16, M82, G3, G36, HK416, AK47, AK101 কিংবা FT2000) কিংবা পিস্তলের (যেমন M9) এর সমমানের তথাকথিত সিভিলিয়ান আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র আমেরিকায় খোলা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় যা অনেক ক্ষেত্রেই অনেক দেশের সেনাবাহিনী কর্তৃক ব্যবহার্য অস্ত্র থেকেও অনেক আধুনিক।

খোলাবাজারে অস্ত্র বিক্রি করে কোটি কোটি ডলার আয় করছে মার্কিন পুঁজিপতিরা আর সেই অস্ত্রই আবার কেড়ে নিচ্ছে মার্কিনীদের জীবন, পুঁজিবাদ এমনই হয়, পুঁজিবাদী সমাজে মুনাফাই শেষ কথা, নিজ দেশের জনগনের হত্যাযজ্ঞও পুঁজিপতিদের অস্ত্র ব্যবসার রাশ টেনে ধরতে পারে না, এই বীভৎস পুঁজিবাদী কাঠামো থেকে বেরিয়ে না আসলে এসব উন্মত্ত সন্ত্রাসী হামলা থেকে মার্কিনীদের রেহাই নেই। ২। যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকারের নামে মিলিটারি জীবন দর্শনঃ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাক্তিগত ভাবে অস্ত্র রাখাটাকে নাগরিক অধিকার মনে করা হয় । যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীতে সাধারণ জনগণকে অস্ত্র বহনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সেই ১৭৯১ সালে সংসদে পাস করা বিলে বলা হয়েছে, “ একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিকদের হতে হবে আধা সামরিক বাহিনীর সুশৃঙ্খল সদস্যদের মতো, সেখানে নাগরিকদের অস্ত্র সঙ্গে রাখার অধিকারে হস্তক্ষেপ করা যাবে না৷” পরে সেই আইনেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছিল৷ বিপদজনক অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি সবাইকে না দেয়ার ঐ আইন হয়েছিল ১৯৯৪ সালে৷ কিন্তু আইনটির কার্যকারীতা ছিল ২০০৪ সাল পর্যন্ত৷ তারপর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও কংগ্রেসে তা নবায়ন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি৷মুনাফাখোর পুঁজিবাদী অস্ত্র বাবসায়িদের কারনেই যে অস্ত্র নিয়ন্ত্রন আইন পাস করা যাচ্ছে না তা বলাই বাহুল্য।

ফলে সমাজে অস্ত্রের যথেচ্ছ ব্যবহারের সুযোগ বেড়েছে৷ আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী মিডিয়া যতই যুক্তরাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক সমাজ বলে প্রচার করুক না কেন যুক্তরাষ্ট্রকে মূলত মিলিটারি সোসাইটি বলাই ভাল। যে দেশের প্রতি ১০০ জনে ৮৯ টি বৈধ অস্ত্র থাকে, যে দেশে সিভিলিয়ান অস্ত্র বাণিজ্যের হাতিয়ার, সে দেশে উন্মত্ত সন্ত্রাসী জঙ্গি থাকবেনা তো কোন দেশে থাকবে? ৩। আমেরিকায় গান-কালচারের সংস্কৃতিঃ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের একটি বড় অংশ মনে করে,ব্যক্তিগত অস্ত্র সম্মানের কারণ। এটা বহু মানুষের অবসর কাটানোর সঙ্গী। তারা শিকার করে এবং বিভিন্ন খেলাধুলায় অশ নেয় অস্ত্র নিয়ে।

বেশিরভাগ মানুষই ব্যাক্তিগত অস্ত্রই আত্মরক্ষার মূল মাধ্যম হিসেবে দেখে। আসলে এটা বংশ পরম্পরায় চলে এসেছে। এক সময় এমন অস্ত্র রাখা তাদের প্রয়োজন হলেও এখন এটা মানুষের পারিবারিক ঐতিহ্য এবং সামাজিক স্ট্যাটাসও বটে। আমেরিকায় গান কালচার এত বেশি শক্তিশালী যে গান ভয়োলেন্সের পর সেখানে অস্ত্র বিক্রি যেখানে কমার কথা তা আরও বেড়ে যায়। ২০১২ সালের ২০ জুলাই, কলোরাডো হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পরেই অস্ত্রের বিক্রি রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে গেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

জর্জিয়ার অস্ত্র ব্যবসায়ী জ্যা ওয়ালেস জানিয়েছেন, তার অস্ত্র বিক্রি গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৩০০ শতাংশ। এদিন তিনি তার জীবনে সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, কলোরাডো বিয়োগান্ত ঘটনার পর আইনপ্রণেতারা আগ্নেয়াস্ত্রবিরোধী আইন করতে পারেন এই আশঙ্কায় ক্রেতারা আগে ভাগেই অস্ত্র কিনে রাখতে চাচ্ছেন। এর আগে ২০১১ সালে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি কক্ষের সদস্য গ্যাব্রিয়েল গিফোর্ডকে গুলি করে হত্যা করার পর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের কথা উঠায় এফবিআইর হিসাবে, ওই সময়েও অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে অস্ত্রের বিক্রি হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছিল। ৪।

সামাজিক নৈরাজ্য এবং নিরাপত্তাহীনতার বোধ ঃ যুক্তরাষ্ট্রের জনগন মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতার ফোবিয়ায় আক্রান্ত। শুধু সংবিধানে অস্ত্র রাখার অধিকার দিলে আর খোলাবাজারে তা সহজলভ্য হলেই গণহারে মানুষ অস্ত্র কিনবে না, মূলত যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ তাদের নিরাপত্তাহীন মনে করে বলেই এতো বেশি অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে। গণমাধ্যমে অনেক নিউজ ই পরিবেশিত হয়না, যা প্রকাশিত হয় তাতে দেখা যায় সেখানে অপরাধের মাত্রা অনেক বেশি এবং অ্যামেরিকাতেই সবচেয়ে বেশি অপরাধী কারাগারে বন্দী। নিরাপত্তাহীনতা এবং অপরাধীদের কাছ থেকে আত্মরক্ষার জন্যও অনেকেই অস্ত্র কেনার পক্ষপাতী। ৫।

যুক্তরাষ্ট্রের শাসক গোষ্ঠী অস্ত্র বাবসায়িদের স্বার্থের সুরক্ষা দানে মশগুল , মার্কিনীরা মারা গেলেও অস্ত্র আইন বজায় রাখে তারাঃ যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটে বিদ্যালয়ে হত্যাযজ্ঞের পর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। দাবি উঠেছে অস্ত্র আইন কঠোর করার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিপণীবিতানসহ বিভিন্ন বেসামরিক স্থাপনায় প্রায়ই সন্ত্রাসী হামলা ঘটলেও প্রশাসন অস্ত্র ব্যবসায়িদের সার্থকে বড় করে দেখে। তাই অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবি আসলেও এ ব্যাপারে তাদের কোন কর্ণপাত নেই। হোয়াইট হাউস এ ধরনের দুঃখজনক সহিংসতা দমনে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিকে ‘জটিল’ সমস্যা বলে উল্লেখ করেছে।

জটিল সমস্যা তো হবেই আমেরিকার সংবিধান, তাদের জীবন চেতনা, সর্বক্ষেত্রে অবাধ স্বাধীনতা লাভের বাসনা, পুঁজিপতিদের লাগামহীন অস্ত্র ব্যবসা , সেই পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষার জন্য দুই শত বছর ধরে রাষ্ট্রের অস্ত্র আইনের প্রনয়ন এবং বাস্তবায়ন সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যে গান কালচার তৈরি হয়েছে তা থেকে বের হওয়ার জন্য দরকার বিপ্লবী পরিবর্তন । আমেরিকার প্রশাসনের কাছে অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবি জানানো বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। মার্কিন পুঁজিবাদী প্রশাসনই তো অস্ত্র বাবসায়িদের স্বার্থে এই আইন প্রনয়ন এবং বাস্তবায়ন করেছে। বারাক ওবামা অস্ত্র আইন কঠোর করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি বাধার সম্মুখীন হবেন এই অস্ত্র ব্যবসায়িদের কাছে থেকেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে দেশে দেশে সামরিক হামলা করে লক্ষ লক্ষ লোকদের না মেরে নিজের দেশের গান সন্ত্রাস মোকাবিলা করা এবং নিজ দেশের সন্ত্রাসী জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করা।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।