আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পারমাণবিক শক্তির ভারসাম্যে ভারতের চোখ চীনের দিকে

পারমাণবিক শক্তিতে বিশ্বের শীর্ষ চার দেশ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স গত বছর নতুন অস্ত্র বানানো বন্ধ করলেও চীন, ভারত ও পাকিস্তান তাদের শক্তি বাড়িয়ে চলেছে। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শক্তি ভারত প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে পাল্লা দিলেও তার লক্ষ্য বিশ্বশক্তি চীনের সমান সামর্থ্য অর্জন।
সুইডেনের অস্ত্র পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিপরির বরাত দিয়ে ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক শক্তিধর শীর্ষ রাষ্ট্রগুলো গত বছর নতুন কোনো অস্ত্র তৈরি করেনি। তবে স্বল্প অস্ত্রের দেশগুলো মহাসমারোহে নতুন নতুন অস্ত্র বানিয়ে চলেছে।
সিপরির ২০১৩ হ্যান্ডবুকে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে ভারতের পারমাণবিক ওয়্যারহেড ছিল ৮০-১০০টি।

এ বছর সংখ্যা বাড়িয়ে ৯০-১১০টি ওয়্যারহেড বানানোর পরিকল্পনা আছে ভারতের। পাকিস্তানের ওয়্যারহেড ছিল ৯০-১১০টি। এবার সেটিকে বাড়িয়ে ১১০-১২০টি করার পরিকল্পনা আছে দেশটির। অন্যদিকে, ২০১২ সালে চীনের ২৪০টি ওয়্যারহেড থাকলেও এ বছর তা ২৫০-এ উন্নীত করার পরিকল্পনা আছে। বর্তমানে ফ্রান্সের ৩০০ ও যুক্তরাজ্যের হাতে ২২৫টি ওয়্যারহেড আছে।

মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ইসরায়েলের আছে ৮০টি পারমাণবিক অস্ত্র।
পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে মাত্র দুটি দেশ—রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র, ট্রিটি অন মেজারস ফর দ্য ফারদার রিডাকশন অ্যান্ড লিমিটেশন অব স্ট্র্যাটেজিক অফেনসিভ আর্মস (নিউ স্টার্ট) চুক্তি অনুযায়ী অস্ত্র সংখ্যা কমিয়েছে। এ দেশ দুটি ইতিমধ্যে তাদের পুরোনো ও অচল অস্ত্রগুলোও ধ্বংস করেছে।
তবে সিপরি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া অপর তিনটি রাষ্ট্র ফ্রান্স, ব্রিটেন ও চীনের সঙ্গে মিলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার-ব্যবস্থা গড়ে তুলছে বা এ ধরনের কর্মসূচি জারি রেখেছে।
সিপরির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের শুরুতে বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার এবং ২০১৩ সালে তা কমে ১৭ হাজার ২৬৫টিতে নেমে এসেছে।

তবে এ থেকে খুব আশান্বিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো অস্ত্রের উত্পাদন ও ব্যবহার বন্ধ করবে, এমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
সিপরির জ্যেষ্ঠ গবেষক শানোন কিলে বলেন, ‘এসব দেশে এখনো পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ ও ব্যবহার ঘিরে যেভাবে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি জারি আছে, তাতে এটা বোঝা যায়, পারমাণবিক অস্ত্র এখনো আন্তর্জাতিক মর্যাদা ও ক্ষমতার পরিমাপক। ’
সিপরি তার প্রতিবেদনে সূত্রের বরাত না দিলেও, এ সংস্থাটিকে বিশ্বের অন্যতম সেরা গবেষণাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য করা হয়। যুদ্ধ, সংঘাত, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির গবেষণাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়।


ধারণা করা হয়, পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ভারতের চেয়ে বেশি। কারণ দেশটির কল্পিত শত্রু ভারতের আয়তন অনেক বড়। অন্যদিকে ভারতের লক্ষ্য হলো আয়তনে অপেক্ষাকৃত ছোট পাকিস্তান। তবে ভারতের লক্ষ্য ভিন্ন বলে মনে করছেন সিপরির গবেষকেরা।
সিপরির গবেষক শানোন কিলে বলেন, ‘ভারত যেভাবে তার আন্তমহাদেশীয় অস্ত্রের পাল্লা বাড়াচ্ছে, তাতে এটা পরিষ্কার বোঝা যায় যে, ভারতের লক্ষ্য পাকিস্তান নয় বরং চীন।


সিপরি তার প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করেনি, যদিও উত্তর কোরিয়া দাবি করে আসছে যে তার কাছে কমপক্ষে আটটি অস্ত্র আছে। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.