ধসে পড়া ভবনে আটকে পড়াদের
উদ্ধার কাজ চলছে। এর মধ্যেই
কপাল কুচকে, চোখ-নাক লাল
করে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছেন এক
সেনা কর্মকর্তা। প্রথমে মনে হল
তিনি বিরক্ত। এরপর মনে হল কাজের চাপে ও
পরিশ্রমে চেহারা এমন হয়েছে।
কিন্তু কিছুক্ষণ
তাকিয়ে বোঝা গেল
প্রাণপণে কান্না চেপে আছেন
তিনি।
যেদিকেই তাকাচ্ছেন মানুষের
কান্না, আর্তনাদ, আহাজারি,
দৃষ্টি বাঁচানোর কোনো সুযোগই
পাচ্ছেন না যেন তিনি।
মায়াচোখে প্রতিটি মানুষের
আহাজারি দেখছেন, সেই সঙ্গে কেঁপে উঠছে তার ঠোঁট,
নাকের ডগা আরো লাল হচ্ছে।
চোখে অশ্রুর ছোঁয়া লুকানোর
চেষ্টাও স্পষ্ট বোঝা যায়। চোখের সামনে সাহায্যপ্রার্থী
-মানুষ, কিন্তু বাঁচাতে পারছেন
না একসঙ্গে সবাইকে- এই কষ্টেই
যেন আরও ক্ষয় হচ্ছেন তিনি। “আপনি একজন আর্মি কর্মকর্তা,
আপনিও কাঁদছেন!” জবাবে নিরুত্তর তিনি।
অনুভূতি প্রকাশে যেন তার বাধা।
কিছুক্ষণ নীরব থেকে বলেন, “
‘আর্মিরা কি মানুষ না?’ ” এই কর্মকর্তাই শুধু নন।
সাভারে ধসে পড়া ভবন
রানা প্লাজায় উদ্ধার
কাজে ব্যস্ত অনেক সেনাসদস্যকেই
এভাবে কষ্ট লুকাতে দেখা গেছে।
নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যস্ততার
পাশাপাশি সবটুকু মায়াই যেন
ঢেলে দিচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তদের
প্রতি। আপনজনের খোঁজে আসা স্বজনদের
সঙ্গে তাদের ব্যবহারেও
ঝরছে মিষ্টতা।
সান্ত্বনা দিচ্ছেন মুখেও। এই
ব্যস্ততায়ও নারীদের
নিরাপত্তায় দিচ্ছেন বিশেষ মনোযোগ। ক্ষতিগ্রস্ত স্বজনদের
ধসে পড়া ভবন থেকে দূরে সরানোর
চেষ্টা করছেন
সেনাসদস্যরা কোমল ভাষায়। ‘বাচ্চাটারে দূরে নিয়া যানতো’ বছর দশেক বয়সের একটি শিশু
ধসে পড়া ভবনের পাশের
ভবনে খেলার উপযোগী কিছু
খোঁজাখুঁজি করছিল। নিরাপত্তার
কারণে এক সেনাসদস্য
তাকে বারবার সরে যেতে বললেও শিশুটি তার নিজের কাজেই
মনোযোগী।
সেনাসদস্যটি আর
ধৈর্য্য রাখতে পারলেন না,
এদিকে শিশু বলে তাকে ধমকাতেও
যেন পারছিলেন না। তাই অন্য
একজন সদস্যকে বললেন, “বাচ্চাটারে দূরে নিয়ে যানতো। বলে নিজেই হাত
ধরে শিশুটিকে দূরে নিয়ে যান
তিনি। “ওনাকে একটু সান্ত্বনা দিন” ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি ও মানুষের
আহাজারিতে যেন কিছুটা বাকরুদ্ধ
দেখা গেল অন্য এক
সেনা কর্মকর্তাকে। কাজের
মধ্যেই সবার দিকে লক্ষ্য
রাখছিলেন তিনি।
মাটিতে বসে হাউমাউ
কান্না করছেন এক তরুণী বধূ
স্বামীকে হারিয়ে।
-সংগৃহীত ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।