স্বাধীনতা, সে তো আমার প্রিয় মানুষের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে কেনা
আসলে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন না । ইলেক্টরাল কলেজের ভোট যিনি বেশি পাবেন তিনিই হবেন প্রেসিডেন্ট। এর আগে দেখা গেছে আল গোর বেশি ভোট পাওয়ার পরও প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি । এই নির্বাচনে আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে। কিন্তু মজার বিষয় হল আমেরকিার প্রধান দু’প্রার্থী বাদেও আরো প্রার্থী থাকে কিন্তু আমেরিকান মিডিয়া তাদের কোন কভারেজ দেয় না ।
তাই আমেরকিার প্রেসিডেন্ট যেই হোক তাদের বিশেষ করে পররাস্ট্রনীতিতে খুব একটা পরিবর্তন দেখা যায় না কারন মুল ক্ষমতা থাকে কোর্পোরেট, বেনিয়া , ইহুদিবাদী লবী ও পুজিপতিদের হাতে এই জন্য আমেরিকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে ডেমোক্রাসি না বলে প্লুটোক্রাসি বলাই শ্রেয় কিন্তু তারপরেও ওবামা নির্বাচিত হওয়ায় বিশ্ববাসী স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছে । ওবামা প্রথম মেয়োদে পররাস্ট্রনীতিতে কোন উল্লেখযোগ্য আশার আলো দেখাতে না পারলেও বা কায়রো ভাষনের অঙ্গীকারের কোন বাস্তবায়ন করতে না পারলেও বিশ্বকে তিনি নতুন কোন যুদ্ধ উপহার দেন নি । এটাই ওবামার সবচেয়ে বড় সফলতা ।
জায়নিস্ট ইসরায়েল অনেক চেষ্টা করেছে ইরান আক্রমন করার। ইরান আক্রমন করা ইসরায়েলের পক্ষে কোনক্রমেই সম্ভব না যদি সেখানে যুক্তরাস্ট্রের কোন সমর্থন না থাকে ।
ওবামার সম্মতি অর্জনের তারা কম চেষ্টা করেননি কিন্তু ওবামার সফলতা তিনি ইসরায়েলের রাশ তো টেনে ধরতে পারছিলেন এইটুকুই । অবশ্য ইরান আক্রমনের পরিণতি আমেরকিার জন্যও শুভ নয় ।
ফিলিস্তিনের জন্য ওবামা কিছু করতে পারেননি সত্য কিন্তু ওবামাই একমাত্র পেসিডেন্ট যিনি ইসরায়েলকে অবৈধ বসতি স্থাপন বন্ধ করার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন যদিও তাতে তেমন কোন কাজ হয় নি কিন্তু ইসরায়েল তত একটা বাড়াবাড়িও করতে পারেননি । ওবামা ইসরায়েলকে পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি সহায়তা দিয়ে অনেকটা কম আক্রমণাত্মক করেছেন যদি ওবামার এইসব কর্মকান্ড সমর্থনযোগ্য নয়। তারপরেও বলব রিপাবলিক্যান প্রেসিডেন্ট কেউ হলে তো আরো ভয়ংকর পরিস্থিতি হত।
সাম্প্রতিক আরব বসন্তে ওবামা সেইরাম কোন হস্তক্ষেপ করেননি বিশেষ করে তিউনেশিয়া ও মিশরে। লিবিয়ায় যা করেছেন তা মুলত ন্যাটো দ্বারা। তিনি যুক্তরাস্ট্রকে সরাসরি কোন যুদ্ধে জড়াননি। এ পর্যন্ত সিরিয়ায়ও সরাসরি হস্তক্ষেপ করেননি যদিও বিদ্রোহীদের প্রকাশ্যে সাহায্য ও সহযোগীতা দিচ্ছেন। আশা করি সিরিয়া নিয়ে সবাই একটা গ্রহনযোগ্য ফর্মুলায় প্যেছাতে পারবে।
প্রথম মেয়াদে ওবামার পিছুটান ছিল অনেক বিশেষ করে ইহুদি লবীর চাপ এবং তার দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার আকাঙ্খা কিন্তু এই শেষ মেয়াদে তার আর তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ারতো কোন বিধান নেই । তাই আশা করব এই মেয়াদে ওবামা যদি ইরানের পারমানবিক সংকট, সিরিয়া সমস্যা ও ফিলিস্তিন সমস্যার ( যদিও ফিলিস্তিন সমস্যা খুব কঠিন একটা বিষয়) সমাধানে প্যেছাতে পারেন তাহলে ওবামা স্মরণীয় হয়ে থাকবেন ইতিহাসের পাতায় ।
নিদেন পক্ষে হলেও বিশ্ববাসীর কামনা আর কোন যুদ্ধ নয় আর নয় কোন ইরাক। যদি রমনী নির্বাচিত হতেন তাহলে কি এই প্রত্যাশাটুকু করা সম্ভব হত ? অনেকেই হয়তো জানেন না ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই নির্বাচনে প্রকাশ্যে এই প্রথম ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মার্কিন কোন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে সাপোর্ট
করেছেন । রমনী হলেন নেতানিয়াহুর বন্ধু।
যদিও ইরান আক্রমন করা আমেরিকার জন্য মোটেই সুখকর নয় কারন ইরান আর যাইহোক ইরাক বা আফগানিস্থান নয় । সেটা আমেরিকা ভাল করেই জানে। সম্ভব হলে এতদিনে করেই ফেলত। কিন্তু ইসরায়েল তো মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র সামরিক ও অর্থনৈতিক পরাশক্তি হতে চায় । এর প্রধান বাধা হল ইরান ।
তাই ইসরায়েলের আকাঙ্খা যে কোন মুল্যেই হোক ইরান কে ধ্বংস করা এতে যদি আমেরিকা দেওলিয়াও হয় তারপরেও । এ্ই জন্য নেতানিয়াহু এবার প্রকাশ্যে রমনীকে সমর্থন করেছেন যা ইসরায়েলের ইতিহাসে বিরল । রমনী নির্বাচিত হলে ........????
তাই পরিশেষে ওবামা অবশ্যই মন্দের ভাল । দেখা যাক, ওবামা এই চার বছরে মন্দের ভাল কতটুকু থাকতে পারেন । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।