আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বাধীনতার পর ১৭ বার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

ভালবাসি শুধু আবাসন খাত নয়, পুঁজিবাজারসহ যে কোনো খাতে ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করা যাবে। শুক্রবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন এ বিষয়টি স্পষ্ট করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তিনি বলেন, আবাসন খাতে গত বছরের ‘বিপর্যয়’ মোকাবেলায় প্লট ও ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার ‘বিশেষ সুযোগ’ দেয়া হয়েছে। বর্তমান আইন অনুযায়ী, অপ্রদর্শিত আয়ে যে করহার প্রযোজ্য তার সঙ্গে ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে তা বিনিয়োগ বা বৈধ করা যায়। এক্ষেত্রে টাকার কোনো উৎস জানা হবে না বলে অর্থ আইন-২০১৩ তে বলা হয়েছে।

আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ (ই) ধারা সংশোধন করে এই সুযোগ দেয়া হয়েছে। ‘বিশেষ সুযোগ’ হিসেবে এবার এলাকাভেদে ফ্ল্যাট অথবা প্লট কিনতে নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে টাকা সাদা করা যাবে বলে বাজেট প্রস্তাবে জানান অর্থমনত্রী। তবে বাজেট বক্তৃতায় পুঁজিবাজারের বিষয়টি উল্লেখ না থাকায় এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়, এবার আবাসন ছাড়া অন্য খাতে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ রাখা হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, শুধু আবাসন নয়, যে কোনো খাতে ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করা যাবে।

সরকারের শেষ বছরের জন্য ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী, যাতে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। চলমান ‘মন্দা’ কাটিয়ে পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে এই বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য একগুচ্ছ প্রণোদনারও প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এর মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের শেয়ার লেনদেন থেকে অর্জিত আয়কে করমুক্ত রাখার সুবিধা বহাল রাখার পাশাপাশি বিনিয়োগে কর রেয়াত বাড়ানো ও শেয়ার প্রিমিয়ামের ওপর কর প্রত্যাহারের ঘোষণাও রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক হিসাব অনুযায়ী, দেশের জিডিপির ৪০ থেকে ৬০ শতাংশই কালো টাকা। আর চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরে জিডিপির আকার ধরা হয়েছে ১০ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা।

এ হিসাবে দেশে মোট অপ্রদর্শিত সম্পদের পরিমাণ ৪ লাখ ১৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা থেকে ৬ লাখ ২২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বা সমমূল্যের সম্পদ। এই বিশাল সম্পদ অর্থনীতির মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার নামে বারবার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলেও বছর শেষে অল্প পরিমাণ অর্থই সাদা হতে দেখা যায়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৭ বার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলেও গত অর্থবছর পর্যন্ত সাদা হয়েছে মাত্র ১২ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা। ফলে এখান থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে মাত্র ১ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১১-১২ অর্থবছরে সাদা হয়েছে ৯২২ কোটি টাকা।

শুধু পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের শর্তে এ পরিমাণ অর্থ সাদা করার সুযোগ দিয়ে সরকার রাজস্ব পেয়েছে মাত্র ৯২ কোটি ২০ লাখ টাকা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে ১ হাজার ১০০ কোটি কালো টাকা সাদা হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ১২১ কোটি টাকা। ৩ হাজার ৭৭৫ কোটি কালো টাকা সাদা হয়েছে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। ওই অর্থবছরে সরকার এখান থেকে রাজস্ব পেয়েছে ৬৮৭ কোটি টাকা।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদের শেষ প্রান্তে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ৪ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা সাদা করেছিলেন কালো টাকার মালিকরা। সরকার রাজস্ব পেয়েছিল ৩৪৫ কোটি টাকা।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.