আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইন্ডিয়ার অন্তরালে: পবিত্র নবরাত্রি, ডান্ডিয়া খেলা এবং অবৈধ সেক্স - মাস্ট রিড!

মুভি ক্রিটিক ব্লগ (প্রথম বাংলা মুভি ব্লগ) ★★★★★ © ২০০৭ - ২০১৩ ওয়েবসাইট: www.saifsamir.com ১১ অক্টোবর আমার জার্নালিস্টআইডি মেম্বার প্রোফাইলে একটি ম্যাসেজ আসে। Mahendra Gavade নামে একজন ম্যাসেজটি পাঠিয়েছেন। ইংরেজিতে তিনি লেখেন: ইন্ডিয়ার একটি ইন্টারেস্টিং ইস্যু আমি আপনার নজরে আনতে চাই। আশা করি খবরটি আপনার দেশীয়দের জন্য গ্রেট এন্টারটেইনমেন্ট হবে। গুজরাট ও মুম্বাইয়ে হিন্দু ধর্ম অবলম্বীদের নয় রাতের বার্ষিক নবরাত্রি উৎসবে সেক্সুয়াল অ্যাক্টিভিটিস বৃদ্ধি পায়।

এই বিষয়ে গত কয়েক বছরে ইন্ডিয়ান মিডিয়ায় প্রচারিত খবর পড়তে ও ভিডিও দেখতে আমার ব্লগের লিংকগুলো দয়া করে দেখুন। আমি আপনাকে অনুরোধ করছি এই বছরের নবরাত্রিতে (১৬ অক্টোবর ২০১২ - ২৪ অক্টোবর ২০১২) বিষয়টি আপনাদের মিডিয়ায় তুলে ধরতে। আপনি প্রতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে নবরাত্রিকালীন বিষয়টি পুনরাবৃত্তি করতে পারেন। থ্যাংকস অ্যান্ড বেস্ট রিগার্ডস Mahendra Gavade আমার এই পাবলিক প্রোফাইলে মাঝে মাঝে বিশ্বের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণমূলক ম্যাসেজ আসে। ই-চিঠিগুলো পড়ে যাচাইয়ের পর উপযুক্ত স্থানে ফরওয়ার্ড করে দিই।

এবারের ম্যাসেজটি নিজেই আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম। এবার আসুন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যাক। পবিত্র নবরাত্রি উৎসব কি সেটা আমরা প্রায় সবাই জানি। শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব হলো নবরাত্রির বঙ্গদেশীয় সংস্করণ। তবে ইন্ডিয়ার নবরাত্রি পালন ও বঙ্গদেশের দুর্গাপূজা পালনে কিছু চারিত্রিক তফাৎ আছে।

ডান্ডিয়া খেলা কি? সংস্কৃত নবরাত্রির আক্ষরিক মানে হচ্ছে নয় রাত। দশ দিন ও নয় রাতব্যাপী নবরাত্রি উৎসবে মহাসমারোহে হিন্দুদের শক্তি দেবীর নয়টি রূপের পূজা করা হয়। ভারতের গুজরাট ও মুম্বাইয়ে নবরাত্রি সর্বাধিক জাঁকজমক ও গুরুত্বসহকারে পালন করা হয়। এই সময় গারবা (Garba) নামে ঐতিহ্যবাহী এক নৃত্য পরিবেশন ও উপভোগ করে হিন্দু ধর্মাম্বলীরা। আধুনিক যুগে গারবার সঙ্গে মিশ্রণ হয়েছে আরেক নৃত্য ঐতিহ্য 'ডান্ডিয়া রাস' (Dandiya Raas)।

এই দুই মিলে এখন হয়েছে রাস গারবা (Raas Garba)। অনেকে আবার শুধু ডান্ডিয়া বলেন, যা ডান্ডিয়া খেলা নামেও পরিচিত। এই রাস গারবা বা ডান্ডিয়া নৃত্য বা ডান্ডিয়া খেলায় ব্যবহৃত হয় প্রায় ১৮" লম্বা কারুকার্যময় একজোড়া রঙ্গিন কাঠি, ইংরেজিতে স্টিক, হিন্দিতে ডান্ডিয়া। নারী-পুরুষ দুই দলে বিভক্ত হয়ে এই ডান্ডিয়া খেলা বা নৃত্য করে। দুই হাতে দুটি ডান্ডিয়া ধরে একে অন্যের ডান্ডিয়াতে ছন্দের তালে তালে আঘাত করে।

ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজে উদ্দাম মিউজিক। ঢোল বাজে... ঢোল বাজে... বাজে ঢোল। অনেক সময় স্টিকের কমতি থাকলে ডান হাতে একটি ডান্ডিয়া নিয়েই চলে ড্যান্স। এই ডান্ডিয়া শক্তি দেবীর বা দুর্গার তলোয়ারকে উপস্থাপন করে। তাই অনেক স্থানে স্টিকের বদলে তলোয়ার দিয়ে ডান্ডিয়া খেলা হয়।

শুধু কাঠিতে কাঠিতে আঘাত করাই গারবা রাস না। এতে চক্রাকারে ঘূর্ণায়নের সঙ্গে আছে হাত ও পায়ের বহুমুখী সঞ্চালন বা নৃত্য ভঙ্গিমা। নারী-পুরুষের বিভক্ত দল দুটি সার্কেল তৈরি করে। একটি সার্কেল ঘোরে ক্লকওয়াইজ, অন্যটি অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ। এভাবেই চলে ডান্ডিয়া।

নবরাত্রিতে ডান্ডিয়া উৎসবের কথা তো জানলেন। এখন প্রশ্ন হলো এর সঙ্গে সেক্সের কি সম্পর্ক? নবরাত্রির নয় রাত জুড়েই চলে তুমুল নাচ-গান-মজা। সারারাত বাইরে থাকে ছেলে-মেয়েরা, তরুণ-তরুণীরা। বাবা মায়েরা টিনএজ ছেলে-মেয়েদেরকেও সারারাত উৎসব-ফুর্তিতে থাকার অনুমতি দিয়ে দেয়। ছেলে-মেয়েরা জুটি বেঁধে যায় ডান্ডিয়া ভেন্যুতে, ক্লাবে, ডিস্কো ডান্ডিয়াতে।

কেউবা উৎসবে গিয়েই পার্টনার খুঁজে নেয়। ডান্ডিয়া খেলতে খেলতে 'লীলাখেলার উত্তেজনা' চেপে বসে কোন কোন কাপলের মাঝে। ছুটে যায় হোটেলে, প্রাইভেট কারে বা একটু নিভৃতে। কেউ কেউ প্ল্যান করে রাখে আগে থেকেই, বুক করে রাখে হোটেলের রুম। আতঙ্কজনক হলো, গ্রুপ সেক্সের ঘটনাও নাকি ঘটে।

অ্যালকোহল ও ড্রাগের যথেচ্ছ ব্যবহারও ঘটে। সারা বছর বাধা-নিষেধ ও নজরদারিতে থাকার পর হঠাৎ পাওয়া এই স্বাধীনতার নাম তখন স্বেচ্ছাচারিতা। পবিত্র নবরাত্রি উৎসবে লেপন করা হয় অবৈধ ক্রিয়াকলাপের কালিমা। কুমারীত্ব বিসর্জন দেয়ার জন্য অনেকে ঠিক করে রাখে নবরাত্রির নিশিকে। নবরাত্রিকে ঘিরে কনডমের, ইমার্জেন্সি কনট্রাসেপ্টিভ পিলের বিক্রি যেমন বাড়ে তেমনি অনেক ক্ষেত্রে অনিরাপদ সেক্সের ফলশ্রুতিতে গর্ভবতী হওয়ার ঘটনা ঘটে।

পরবর্তীতে শরণাপন্ন হওয়া লাগে গর্ভপাতের। অনেক কনজারভেটিভ হিন্দু পরিবারে ছেলে-মেয়েদের ডান্ডিয়াতে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মডারেট পরিবারের পিতা-মাতারা নবরাত্রির এইসব নৈরাজ্যকর ঘটনায় অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। গোটা বছর ছেলে-মেয়েদেরকে চোখে চোখে রাখেন কিন্তু নবরাত্রিতে আর সম্ভব হয় না। উৎসবের আনন্দে বেরিয়ে পড়ে ছেলে-মেয়েরা। ওয়েস্টার্ন কালচারের উত্তাপে যে আগুন তাদের শরীরে জমা হয়, নবরাত্রির স্বাধীনতায় ও পার্টনারের সান্নিধ্যে তা স্ফুলিঙ্গের মতো বেরিয়ে আসে।

নব্বয়ই দশকের মধ্যবর্তী সময় থেকে পবিত্র নবরাত্রির এই অন্ধকার অধ্যায়ের ব্যাপ্তি। ইন্ডিয়াতে দ্রুতগতিতে চলমান সামাজিক পরিবর্তনের অংশ হিসেবে গত এক যুগে যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মিডিয়াও এখন আর এই বিষয়ে খুব একটা সরব না। আসলে দু-একটা ক্যাজুয়াল রিপোর্ট ছাড়া কখনও তেমন সরব ছিলই না। সংস্কৃতির এই বিবর্তনে মিডিয়ার দায়ও তো কম না।

আধুনিক মিডিয়ার নীতি পণ্য বিক্রেতার, সম্ভোগের। চলতি এই ঘটনাগুলোর প্রতিকার/প্রতিরোধে কিছুই কি করেন না মুম্বাই-গুজরাটের অভিভাবকরা? অবস্থাসম্পন্ন বাবা-মায়েরা একটি উপায় খুঁজে পেয়েছেন। সমস্যাটার মতো উপায়টাও আধুনিক। তারা তাদের সন্তানদের পেছনে প্রাইভেট ডিটেকটিভ লাগিয়েছেন। বেশ ভালো অংকের টাকার (১৫,০০০ - ৬০,০০০ রুপী) বিনিময়ে এই সব গোয়েন্দারা নয় রাতজুড়ে ক্লায়েন্টের সন্তানদের গতিবিধি নজরদারি করে।

টেকি গোয়েন্দারা আবার এককাঠি সরেস। তারা বিভিন্ন বাগ, মোবাইল ট্রেকার, মাইক্রো ক্যামেরা ব্যবহার করে অফিসে বসেই স্পাইয়িং করে। কোন কিছু ঘটতে যাচ্ছে টের পেলে এরা অভিভাবকদের খবর দেয়। অভিভাবকরা ত্বরিত এসে সন্তানদের রাঙ্গা হাতে ধরেন। অনেক ক্ষেত্রে নাকি চুপ থাকেন, পরে সামলাবেন বলেন।

কোন কোন গোয়েন্দা সংস্থা থ্রিজি টেকনোলজি ব্যবহার করে অভিভাবকদের জন্য লাইভ স্ট্রিমিংয়ের ব্যবস্থা করেন। তারা ঘরে বসেই দেখতে পারেন তাদের সন্তানরা কি করছে! সামাজিক রোগ প্রতিরোধের এই সব অভিনব উপায় দেখে কারও কারও হাসি পেতে পারে। সমস্যার গোঁড়ায় না গিয়ে সমস্যা সমাধানের এই চেষ্টা একটু হাস্যকর বৈকি! এই যে গার্ডিয়ানরা সন্তানদের বিশ্বাস করতে পারছেন না, তার কারণ কি? এই সব কিশোর-কিশোরী, উঠতি তরুণ-তরুণীরা জীবনের কতোটুকু দেখেছে? যতোটুকু দেখেনি উসুল করতে চায় তার চেয়ে বেশি। জীবন তো একটাই, তাই ড্রাগ-সেক্সের উন্মাদনাকে মনে করে জীবনের সেরা সুখ। এটা যে ভুল ও কী ভীষণ ক্ষতি বয়ে আনে সেই একমাত্র জীবনে একদিন তারা ঠিকই বুঝতে পারে, কিন্তু তখন অনেক বেশি দেরি হয়ে যায়।

শত ক্রন্দনেও আর ফিরে যাবার উপায় থাকে না আগের নিষ্পাপ জীবনে। এই সব আমরা জানি, জেনেও পা বাড়াই নিষিদ্ধ পথে। এখানে পশুর সঙ্গে মানুষের একটা বড় তফাৎ ধরা পড়ে। পশু এক বিপদে দুই বার পড়তে চায় না, এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করে। আর আমরা অসীম সাহসী মানুষেরা বারবার একই বিপদে জড়িয়ে পড়ি, পরিণতি জানা থাকলেও! এটা ঠিক গর্বের না লজ্জার, সেই উপসংহারে আমি যাব না।

আপনিই ভেবে দেখুন। এই যুগে সন্তান ও বাবা-মায়ের মাঝে সম্পর্কের দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছে। প্রত্যেকেই দাবি করেন কেউ কাউকে বুঝতে চায় না। সবাই সবার কথাটা বলতে চায়। সবাই নিজেকেই সঠিক মানেন।

সন্তানকে নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর করার জন্য বাবা-মাকেই প্রথম পদক্ষেপটি নিতে হবে। সন্তানদের সঙ্গে শুরু থেকে শুধু অনুশাসনের নয় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। সন্তানদেরকেও বুঝতে হবে বাবা-মায়ের উদ্দেশ্যই হচ্ছে ছেলে-মেয়ের মঙ্গলসাধন। মা-বাবাকে তাদের টিনএজ ও তারুণ্যে পা দেয়া সন্তানদের মনোজগৎ বুঝতে চেষ্টা করতে হবে। তারা এই সময়টা পার করে এসেছেন, তাই সন্তানের স্থলে নিজেকে কল্পনা করে পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হবে।

সন্তানদেরও উচিত বাবা-মাকে ট্রিট করার সময় যেন চিন্তা করে নেয়, নিজেরা একদিন যখন বাবা/মা হবে তখন কিভাবে ট্রিট হতে চাইবে। নবরাত্রিতে সন্তানদের নিয়ে এই যে অনিশ্চয়তা, এটা যে আসলে শুধু নবরাত্রি বা ইন্ডিয়ার সমস্যা না, তা আমরা বুঝতে পারি। সন্তানদের পেছনে টিকটিকি (গোয়েন্দা) লাগানোটা কোন স্থায়ী সমাধান না। অবৈধ সেক্স ও মরণঘাতী ড্রাগ সম্পর্কে টিনএজার ও উঠতি তরুণদের সরাসরি সাবধান করতে হবে। কিন্তু আগেই যেটা বলেছি, ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের সঙ্গে অভিভাবকদের সম্পর্ক সহজ হতে হবে।

নয়তো কোন সতর্কবাণীই ছেলে-মেয়েদের মর্মে পৌঁছবে না। একদম ছোটবেলাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানদের সম্পর্ক মধুর থাকে। কিন্তু বড় হতে হতে সম্পর্কের দূরত্ব বাড়ে। সৃষ্টি হয় আড়ষ্টতা, সংকোচ। ভেবে দেখেছেন, কেন? কারণটা কমিউনিকেশন গ্যাপ বা যোগাযোগের দূরত্ব।

এই কমিউনিকেশন গ্যাপটা আসলে কি? একটা ছেলে বা মেয়ে যখন বড় হয়, বাবা-মায়েরা যেন সেই বড় হওয়াটা ঠিক মতো দেখতে পাই না বা দেখতে চান না। তারা তাদের সন্তানদের সেই ছোট্টটি ভাবেন। এটা করবে না, ওটা করবে না - শাসনের এই চিরাচরিত পথ থেকে বের হতে পারে না। ফলে যা হয়, নিষেধে আকর্ষণ। এই বয়সে ছেলে-মেয়েরা শুধু 'না' শুনতে চায় না, তারা কারণটাও জানতে চায়।

তাই পরিণাম নির্দেশ ছাড়া শুধু নিষেধ কার্যকরী হয় না। সন্তানদের শরীর ও মনোজগতে যে একটা বিশাল পরিবর্তন হচ্ছে, এই পরিবর্তনটা অভিভাবকরা এড়িয়ে যান। আশ্চর্য লাগে, কেন এমনটা হয়? এক সময় তারাও তো ছোট ছিলেন, এসব তো তাদের বুঝতে পারার কথা। কেউ কেউ বুঝেন, কিন্তু এই বুঝনেওয়ালাদের অনেকে নিজেদের সঙ্গে পরিস্থিতি পুরোপুরি মিলাতে গিয়ে হোঁচট খান, ভুল করেন। এটা বুঝতে পারেন না যে তাদের সময় আর এই সময়ের মধ্যে বিশাল ফারাক।

আসলে বেশিরভাগ অভিভাবক এইসব নিয়ে খুব একটা চিন্তাও করেন না, যেমনটা করেননি তাদের অভিভাবকরা। কিন্তু এই সময়টা তাদের সময়ের চেয়ে অধিক সংকটাপন্ন। ফলে পরিণতি, দুশ্চিন্তা এড়াতে পারেন না। কিন্তু এভাবে কি চলতে দেয়া যায়? শুধু সন্তানদের আর্থিক নিশ্চয়তা দেয়াটা প্রথম ও শেষ দায়িত্ব নয়। সন্তানদের সাইকোলজিও বুঝতে হবে, সে অনুযায়ী সম্পর্কের ভিত দাঁড় করাতে হবে।

ভিত মজবুত হলে এড়ানো যাবে সম্পর্কের অনাকাঙ্ক্ষিত মোড়, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সমাজের কি কোন দায়িত্ব আছে? থার্ড পার্টি সেক্স এডুকেশন ও ড্রাগ এডুকেশন বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, যেন এসবই আবার ইরোটিক ও আকর্ষণ-উদ্দীপক হয়ে না যায়। কেন বলছি এ কথা? এমনটা হচ্ছে আসলে। এ বছর মুম্বাই ভিত্তিক এনজিও সিটিজেন অ্যাকশন ফোরাম এবং লাইফ স্টাইল ও ফ্যাশন ব্লগ IndiGlam একটি ক্যাম্পেইন আয়োজন করেছে। ক্যাম্পেইনের শিরোনাম, “Play Safe” – Safe Sex during Navratri”।

মডেল/অভিনেত্রী লায়লা এন. খানের উন্মুক্ত পিঠে Play Safe (সাবধানে খেল!) লেখা ছবি দিয়ে এই ক্যাম্পেইন! যা আদতে ইরোটিকা। এই অদ্ভুত ক্যাম্পেইনে কিন্তু বলা হয়নি অবৈধ সেক্স করো না। বরং বলা হয়েছে, খেল তবে সাবধানে খেল! যেন ডান্ডিয়া বা নবরাত্রি মানেই সেক্সের খেলা! উদ্ভট! আমাদের মনে আছে ১৫ মার্চ ২০০৭ সালে এইডস বিষয়ক সচেতনতার এক প্রচারণায় হলিউড স্টার রিচার্ড গিয়ার বলিউড স্টার শিল্পা শেঠীকে জনসম্মুখে গভীর চুম্বনে কর্ষণ করে আমাদেরকে শিক্ষা দিতে চেয়েছেন যে, দেখ, এভাবে চুমু খেলে এইডস হয় না! বটে, এ থেকে আমরা শিখলাম জনসম্মুখে এভাবে কিস করাটা আধুনিক সভ্যতার অঙ্গ এবং এভাবে কিসিংয়ে এইডসের কোন ভয় নেই। এই সব ক্যাম্পেইন/প্রচারণা আসলে এক প্রকার স্টান্টবাজি ছাড়া আর কিছু না। এমন প্রলুব্ধকরণ 'সচেতনতার' তো দরকার নেই।

নির্মোহ ও ক্ষতিনির্দেশক সচেতনতার খুব প্রয়োজন। একটি অশনি সংকেত! পাঠক হয়তো ভাবছেন, আমি ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে নেমেছি কেন? বনটা আমাদের বাড়ির অতি নিকটে, মোষটা এখনই না তাড়ালে আঙ্গিনায় চলে আসতে পারে। গতকাল ইন্ডিয়ার কালচারে যা হয়েছে, আজ আমাদের এখানে তা নকল হচ্ছে। বাজারে গেলে যেমন দেখবেন জিসম-২ পোশাক, বাগানে গেলে দেখবেন অমাদের সচেতন ও সভ্যকরণে গভীরভাবে নিয়োজিত রিচার্ড ও শিল্পার দেশীয় সংস্করণ। নাহ্, মুখ ঢেকে লাভ নেই।

মোষটা আসলে আঙ্গিনায় ঢুকেই পড়েছে। আমাদের সংস্কৃতির শরীরের রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে গেছে আরও আগেই। এখনই গজ-ব্যান্ডেজ নিয়ে নেমে না পড়লে রক্ত শূন্য হতে আর দেরি নেই। আমরা বাঙালি, আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে, রীতি-নীতি আছে। এই সংস্কৃতিকে রক্তাত করে তো আমরা নিজেদের বাঙালি দাবি করতে পারি না, পহেলা বৈশাখেও না।

একদিন পান্তা-ইলিশ খাওয়াটাই বাঙালিপনা না। সারা বছরের চলন-বলনের হিসেবও কষতে হবে। অশনি সংকেত বাজছে অনেক আগে থেকেই। আমরা কি শুনতে পাচ্ছি না?  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.