Shams
স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটির জনপ্রিয় ইভেন্টগুলোর অন্যতম হল বিতর্ক প্রতিযোগিতা। ডিবেট চ্যাম্পিয়নের গায়ে সহজেই জুটে যায় 'ক্যাম্পাস হিরো'র তকমা। আর জুটবেই না কেন, ভয়ংকর স্যারদের সামনে যেখানে কারও মুখ দিয়ে কথা ফোটে না সেখানে ডয়েসে দাঁড়িয়ে কথা বলে যাচ্ছে, যুক্তি উপস্থাপন করছে, পাল্টা যুক্তি তুলে ধরছে নির্দ্বিধায়, অনেক দ্যোলীয়মার বিষয় তুলে ধরছে নিজের শক্ত অবস্থান, নিজের সুচিন্তিত মতামত। যুক্তির তোড়ে বদলে দিচ্ছে যুক্তিহীন ধারণাগুলো।
শুধু ক্যাম্পাসে নয়, যুক্তিতর্কের প্রয়োজন ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্রের সবখানে।
সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট জায়গা যুক্তিতর্কে ব্যস্ত থাকে_ যেমন বিচারকার্য, সংসদ, মিটিং, টকশো, প্রেজেন্টেশন। তাই শুধু ক্যাম্পাসের জনপ্রিয়তা কিছু ক্রেস্ট-সার্টিফিকেটের জন্য নয় যুক্তিতর্কে সাবলীল হওয়ার প্রয়োজন জীবিকা ও জীবনের জন্যও।
বিতর্ক মানেই বাচনিক লড়াই। নিজের মত প্রতিষ্ঠার জন্য বিবাদ, বিতর্ক, আলোচনা। শিক্ষামূলক এবং বিনোদনের স্বাদ মেটাতেও বিতর্ক আয়োজিত হয়।
যদিও শিক্ষাসংক্রান্ত বিষয়ই বেশি পরিমাণে থাকে। এটাই এমন এক জায়গা যেখানে কথোপকথন এবং নিজস্ব যুক্তি মেলে ধরা উভয়ই সম্ভব। আলোচনায় নিজের জায়গা ধরে রাখতে হলে যুক্তিপূর্ণ হওয়া দরকার, যা তথ্য দেয়া হবে তা সঠিক রাখতে হবে। এসব গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোকে মাথায় রাখলে তবেই বিতর্কের সফলতার দিকে এগুনো যাবে। যুক্তিতর্কের নির্যাস নির্ভর করে অংশগ্রহণকারীদের একমত হওয়ার উপর বা কিছু প্রথাগত উপায়ে সমাধানের যাওয়ার পথে।
নিয়মমাফিক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীদের জন্য নিয়মকানুন থাকে। তা হল_ আলোচনা এবং চিন্তাভাবনা হবে ভিন্ন প্রকৃতির। এমনকি একটা বাঁধাধরা সংজ্ঞা ব্যাখ্যা করবে প্রতিযোগীরা কীভাবে তাদের কথোপকথন চালাবে। নিয়ম না মানা বিতর্ক সাধারণভাবে হয়ে থাকে_ এক্ষেত্রে যুক্তিতর্কের গুণাগুণ এবং গভীরতা উন্নতিসহায়ক হয় অংশগ্রহণকারীদের জ্ঞান এবং দক্ষতার উপর। প্রতিযোগিতার ফলাফল ঠিক হতে পারে দর্শকদের ভোটের দ্বারা, বিচারকদের দ্বারা বা উভয়ের সমন্বয়ের দ্বারা।
অংশগ্রহণকারীদের দুটি দল থাকে। এক একটি দলে দুই বা তিনজন বক্তা থাকে।
টেলিভিশনের পর্দায় এরকম যুক্তিতর্কের অনুষ্ঠান এখন রীতিমতো জনপ্রিয়। অনুষ্ঠানে একটা নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর আলোচনা হয়। আলোচনার বিষয়ের এ-টু-জেড তুলে ধরা হয়।
'যুক্তিতর্ক' সফল হয় যুক্তি-তর্কের উপর এবং অন্যকে রাজি করানোর মাধ্যমে, যে তোমার চিন্তাভাবনা সঠিক। তুমি যা বলবে, তা-ই অপরপক্ষকে ঠিক মেনে নিতে হবে।
বিতর্কে ভালো করার জন্য কিছু পরামর্শ দেয়া হল_
যে বিষয় নিয়ে কথা বলছ তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে। কারণ কথা বলার সময় নিজের বক্তব্যকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে।
তোমার গলার স্বরের দিকে নজর রাখবে।
নিজের বক্তব্য তৈরির ক্ষেত্রে এবং তাকে আরও সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলতে 'যুক্তি'কে সবল করে তোলে।
অপর পক্ষের যুক্তি কী হবে তা চিন্তা করে তার পাল্টা যুক্তি তৈরি করে রাখতে হবে।
আলোচনায় ব্যক্তিসম্পর্ক, আক্রমণাত্মক প্রসঙ্গ টেনে আনবে না।
যে বিষয়ের উপর বিতর্ক চলছে সেই বিষয়েই থাকবে।
বানান এবং ব্যাকরণে উপর মনোযোগ দিলে তোমার কাজকে শক্তিশালী করবে।
'সর্বদা' ও 'কখনও নয়' ব্যবহার বর্জন করতে হবে।
তুমি ভুল_ এ কথা বলা থেকে নিজেকে সংবরণ করতে হবে।
সত্যকে অস্বীকার কর না।
ব্যক্তিকে নয়, চিন্তাধারাকে আক্রমণ কর।
'সর্বাপেক্ষা' ও 'কিছু'র থেকে 'অনেক' শব্দ ব্যবহার কর।
অতিরঞ্জন চলবে না।
ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে 'প্রায়শই' ও 'সাধারণত' ব্যবহৃত হয়।
বিশ্বস্ত উৎস এবং সঠিক সংখ্যা উল্লেখ কর।
যদি শুধু মতামত হয়, স্বীকার করে নাও।
অস্বীকার করলে হাসিমুখে থাকবে।
ইতিবাচকের উপর জোর দেবে।
খোলা মনের হও অর্থাৎ মনে কোনও জড়তা থাকবে না। তোমার মতামত পরিবর্তনেও তৈরি থাক।
সামান্য বিষয়কেও গুরুত্ব দেবে।
ঝগড়া, বিবাদ এসবের মধ্যে আসবে না।
সবশেষে বলি, তুমি যখন কারও সঙ্গে একমত হবে না তখন তোমার খুব নম্র হওয়ার দরকার। আর তা যদি হয় ইংরেজিতে।
এমনকি তুমি কাউকে ভাল চেনো সেক্ষেত্রেও। তুমি অস্বীকার করতে পার প্রত্যক্ষভাবে যদি তাকে তুমি খুবই ভালোভাবে চেনো-জান। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।