আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারী সমকামিতা: শেকড়ের সন্ধানে

বাংলা মোদের সোনার বাংলা/নুরের বাংলা হয়ে যায়/বাংলা ভাষা অজানা মোর/ দিলে কিছু কয়ে যায়। । বর্তমানে সারা বিশ্বে নারী-সমকামিতার হার দিনদিন বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি কয়েকটি দেশে নারী সমকামীদের মধ্যে বিয়ের বৈধতা দেয়া হয়েছে; আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বিয়ে করেছেন তার দীর্ঘদিনের লেখিকা সঙ্গীকে। আমি আজকে নারী সমকামিতার শেকড়ের দিকে আলোকপাত করার অভিপ্রায়ে এই পোস্টটি লিখছি।

নারী সমকামিতার ইংরেজি প্রতিশব্দ lesbianism, এবং নারী সমকামিদের বলা হয় lesbian. Lesbian শব্দটির উৎপত্তি হচ্ছে গ্রীক দ্বীপ lesboss থেকে। নারী সমকামিতার জন্য কেন এই শব্দটি ব্যবহার করা হয় তা নিয়ে মনে সংশয় জাগতেই পারে। এ সংশয় তাড়ানোর জন্য একটু পেছন দিকেই ফিরে যেতে হবে। আমাদের ফিরে যেতে হবে প্রাচীন গ্রীক সভ্যতায়। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ট শতকের প্রথম দিকে আবির্ভাব হয়েছিলো [৬১০-৫৭০] গীতিকবি সাফোর।

তিনি ছিলেন লেসবসবাসিনী। তার একটি বিশেষ গুণ হল, তিনিই প্রথম গোলাপকে পুষ্পের রাণী হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং গোলাপকে নিয়ে অনেক গীতিকবিতা লিখেন। গোলাপকে নিয়ে তার লেখা একটি কালজয়ী কবিতার ইংরেজি অনুবাদ না দিয়ে পারছি নাঃ Would jove appoint some flower to reign, It matches beuty on the plan, The rose (mankind will all agree) The rose the queen of flowers shoud be… [song of rose/translated by f.fawkes] সাফো ছিলেন ছিলেন বিত্তবান সারকাইলাসের স্ত্রী এবং জীবন যাপনে ছিলেন অত্যন্ত অভিজাত। তাই তিনি মনে যা আসতো তাই বলতেন এবং লিখতেন। তিনি ছিলেন সহজাত গীতিকবি এবং নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষয়ত্রী।

পরিচালনা করতেন লেসবসের প্রধান শহর মিতিলিনে নিজের প্রতিষ্ঠা করা অবিবাহিত মেয়েদের বিদ্যালয় ‘থিয়াসস’, যার অর্থ হল বিশেষ শ্রেণীর ট্রেনিং আকাদেমি। সেই সুবাদে নিত্যদিন তার দিন কাটতো কুমারি মেয়েদের সাথে, কবিতা লিখে, আবৃত্তি করে, আর নিত্য মিথষ্ক্রিয়াতে কাটতো তার দিন। প্রশিক্ষন কেন্দ্রটিতে তিনি মেয়েদের অত্যন্ত ছিমছাম এবং আকর্ষণীয় করে তুলতেন, সম্ভবত তাদের আসন্ন বিয়ের কথা ভেবে। সাফো তার মৃত্যুর প্রায় দুশ বছর সাফার করেন তথাকথিত সমকামিতার রটনা। তৎকালীন গ্রীকসমাজ তাকে সমকামিতার অপবাদ দিয়ে তার নয়টি গ্রন্থ পুড়ে ফেলে।

পরবর্তীতে এই ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকৃত কিছু অংশ থেকেই আমরা তার সম্পর্কে জানতে পারি। তার কবিতা গুলো বরাবরেই ছিল প্রেমকেন্দ্রিক। বলাইবাহুল্য, তার উৎস ছিল আকাদেমির ছাত্রীরা। তবে, তিনি যে সমকামি ছিলেন না তার সবচে বড় প্রমান হল তার স্বামী ছিল এবং তিনি এক কন্যা সন্তানের জননী যার নাম ছিল, ক্লিস। এতকিছুর পরও তথাকথিত ইতিহাস লেখকরা তাকে নারী সমকামিতার জনক হিসেবে চালিয়ে দিয়ে আসছে এবং লেসবস কে তারা নারী সমকামিতার অর্থে ব্যবহার করে আসছে।

এর ফাঁকে একটি কথা না বললেই নয়; সক্রেতিস ছিলেন সাফোর অনুজ, তিনি প্রায় সাফোর ১৪০ বছর পর জন্মেছিলেন। সাফো যেমনভাবে নারীদের জন্য আকাদেমি খুলেছিলেন, তিনি খুলেছিলেন বালকদের জন্য। এবং অনেকটা সাফোর মতই বালকদের নিয়েই সময় কাটাতেন। তার মৃত্যুদণ্ডের পিছনে যুবকদের কুপথে নিয়ে যাবার অভিযোগও ছিল(তবে এই অভিযোগের সত্যতা অনেকটাই নেই, যেমনটি ঘটেছিল সাফোর ক্ষেত্রেও)। তাছাড়া গ্রীকে তৎকালীন সময়ে বালকদের অনেক বেশি চাহিদা ছিল, বিশেষ করে সুন্দর বালকদের।

অই সময়ে সেখানে বালমেহন এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে, সেখানে এই বিষয়ে দেদারছে কবিতা লেখা হত, আলোচনা হত। এখন প্রশ্ন হল, সাফো যদি আসলেই নারী সমকামিতার জনক হয়ে থাকেন পুরুষ সমকামিতার জনক কি সক্রেটিস? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.