বাঙালী মুসলমানের জীবন সংস্কৃতিশূণ্য। এর কারন বাঙালী মুসলমানের আত্মপরিচয়ের সংকট – ধর্মে সে আরবীয় আর সংস্কৃতিতে ভারতীয়, এই দুইয়ের সমন্বয় করতে গিয়ে সে যে সংকটে পতিত হয় – তা বাঙলাদেশ রাষ্ট্রের রাজনিতীতেও প্রতিফলিত হচ্ছে। এই দুই সংস্কৃতির কেন্দ্রিয় কাঠামো সম্পর্কে যাঁরা বিশেষজ্ঞ, তাঁরা হয়ত বলতে পারবেন, কিন্তু হাতুড়ে ডাক্তারের মত লক্ষনবিচারে মনে হয়: সন্দেহ এই দুই সংস্কৃতির মধ্যে কোনদিন পরিপূর্ণ শুভ বিবাহ হবে কিনা এবং অতঃপর এই দম্পত্তি রূপকথার গল্পের মত অন্তহীনভাবে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে থাকবে কীনা। এই দুই সংস্কৃতির সংসারে অমিলের খুটখাট অবিরাম লেগেই থাকবে মনে হয়। হিন্দু/পৌত্তলিক ধর্মের উৎসবে/জীবনাচারে প্রত্যক্ষ করি ফূর্তি আছে, রূপ আছে, রঙ আছে – রূপে-রঙে-ফূর্তিতে ইসলাম ধর্মের মনে হয় জন্মগত ভয়। এই ভয় নিয়া মাটির যে সংস্কৃতিকে বাঙালী মুসলমান জন্মসূত্রে লাভ করেছে – তাকে পরিপূর্ণভাবে আপন করতে পারে না, চিরকালই এক ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে; ফলে এই ভয় থেকে তার জীবন সংস্কৃতিশূণ্য হয়ে পড়ে, অথবা দ্বিধাদ্বন্দ্বের কারনে “আরবী অক্ষরে বাঙলা লেখার” মত আজগুবি সব খাপ খাওয়ানোর খেয়াল তার মাথায় চাপে, অথবা কোরাণ তেলোয়াত করা বা নাতে রাসুল গাওয়াকেই মনে করে একমাত্র বৈধ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড; ভেতরে ভেতরে নিজের সাথেই তার একধরনের বিচ্ছেদের জন্ম হয় – যা তাকে রসশূণ্য করে তোলে উন্মূল আগাছার মত নিজের সংস্কৃতিতে ভর করতে না পারার কারনে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।