আলোয় আলোকিত হোক ভূবন সামুতে বেশ কয়েকদিন আগে ধর্মবিরোধী কিছু পোস্ট নিয়ে বহুত ঝামেলা গেছে, এবং সেই সূত্র ধরে কিছু ব্লগারকে ব্লক করে দেওয়াও হয়েছে। ব্লগ অবশ্যই মুক্ত চিন্তা চর্চার জায়গা, তথাপি অন্যের অনুভূতিকে আঘাত করে এমন কোনও পোস্ট, তা সে মুক্ত চিন্তাই হোক বা ধর্মীয় ফতোয়া বিষয়কই হোক, ব্লগে কাম্য নয়। মুক্ত চিন্তার নামে তথাকথিত কিছু নাস্তিকের ধর্ম বিদ্বেষ যেমন একজন বিবেকবান মানুষের কাছে ঘৃণার যোগ্য ঠিক তেমনি ধর্মের ধ্বজাধারীদের উল্টা-পাল্টা ফতোয়া জারিও সমান ভাবেই ঘৃণার যোগ্য হওয়া উচিত।
গত দুইদিন সামুতে ঢুকলেই দেখতাম আকিয়াব মসজিদ পুড়ে যাওয়া বিষয়ক পোস্ট, একটা নয় একাধিক। একটাকে রিপোর্ট করার পর সেটা মুছে দেওয়ার পরপরই দেখা গেছে আরেক নিক নিয়ে আবার একই পোস্ট এসেছে।
ধর্মবিরোধী কথা বলে ধার্মিকদের চটানো যেমন উদ্দেশ্য পূর্ণ, ঠিক তেমনি ধর্মকে কাজে লাগিয়ে তথাকথিত ধার্মিকদের এইসব গুজব ছড়ানোর পেছনেও আছে বিরাট কোন উদ্দেশ্য। সামু যেমন নাস্তিক বলদদের বিচরণের জায়গা নয় ঠিক তেমনি এটা তথাকথিত ধার্মিক ছাগলদেরও ন্যদানোর ক্ষেত্র হওয়া উচিৎ না।
এইবার মূল কথায় আসি, মুহাম্মদ রাসেল নামক একজন ব্লগারের সাম্প্রতিক কিছু পোস্ট এর প্রতিবাদ স্বরূপ এই লেখাটি পোস্ট করছি। তার পোস্টে আমি মন্তব্য করতে পারছিনা, সেটা করা গেলে হয়তো আমাকে এই পোস্ট দিতে হতনা। এই ভদ্রলোক তার পোস্ট গুলোতে বিভিন্ন ফতোয়া দিয়ে থাকেন, এই যেমন আইডি কার্ডের জন্য ছবি তোলা জায়েজ কিনা? মক্কায় সিসি ক্যমেরা রাখা জায়েজ কিনা ইত্যাদি সহ নানা কথা বার্তা।
উনি একেবারে খাঁটি ইমানদার, কোরান হাদিসের বাইরে উনি একপাও নড়তে নারাজ। উনার ভাবমতে চলতে গেলে আমাদের ১৪০০ বছর পেছনে যেতে হবে এতে কোনও সন্দেহ নাই। কোরান হাদিসে এমন অনেক বিষয়ই আছে যা সম্পর্কে সেখানে সরাসরি হয়তো কোনও অনুমতি দেওয়া হয় নাই, অথবা সে সম্পর্কে নিষেধ করা আছে। কিন্তু আমাদের একথা ভুলে গেলে চলবে না যে কোরান হাদিসে অনেক কিছুই এসেছে তৎকালীন নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। কাজেই কোরান হাদিসের অনেক কিছুকেই আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করাটা অনেক সময় মূর্খতা।
যেমন উদাহরণ স্বরূপ নীচের আয়াতগুলো দেখতে পারি-
"তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না। সুরা বাকারা ২১৬"
"তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও।
অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং সাহায্যকারী বানিও না। সুরা নিসা ৮৯"
এখন আমরা যদি এর আক্ষরিক অর্থ করি তাহলে এখনই আমাদের মুসলমানদের উচিৎ হবে ইহুদি, নাসারা, কাফের, মুনাফেক এদের সাথে যুদ্ধ শুরু করে দেওয়া এবং যেখানেই এদেরকে পাওয়া যাবে ধরে ধরে হত্যা করা। সেমতে রামুতে যা কিছু ঘটেছে তা জায়েজ।
মুহাম্মদ রাসেল টাইপের লোকজনের জন্যই আজকে ইসলামের/মুসলমানদের এই অবস্থা, নাস্তিকদের জন্য না। উনার মত ব্লগার শুধু ইসলাম ধর্মের জন্যই নয় বরং গোটা মানবতা ও সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর। সামু কর্তৃপক্ষের কাছে, উনাকে ব্যান করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
মুহাম্মদ রাসেলের ব্লগ লিঙ্ক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।