গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গতকাল শনিবার বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী মান্না দে। তাঁর চিকিৎসকের বরাতে জিনিউজ জানিয়েছে, এ মুহূর্তে মান্না দের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন ৯৪ বছর বয়সী এই গুণী শিল্পী। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ সকালে তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে মান্না দে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে তাঁর শরীরে এ সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট বেশ কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় তাঁর অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। তবে হাসপাতালের একজন কর্মী জানিয়েছেন, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন মান্না দে।
ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে মৃত্যুবরণ করেন মান্না দের স্ত্রী সুলোচনা কুমারণ। মাত্র ২০ দিন আগে প্রয়াত স্ত্রীর স্মরণে নতুন একটি গান রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন মান্না দে।
কিন্তু হঠাৎ অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে।
কলকাতার ছেলে হলেও জীবনসায়াহ্নে নিজ ভিটায় আর ফেরার ইচ্ছা নেই বলেই জানিয়েছিলেন মান্না দে। বেঙ্গালুরুর কল্যাণনগরে তাঁর ছোট মেয়ে সুমিতার পরিবারের সঙ্গেই শেষ জীবনটা কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কয়েক দিন আগে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শুরুতে তাঁকে বাড়িতেই চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গতকাল আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯১৯ সালের ১ মে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবোধ চন্দ দে, যাঁর ডাকনাম মান্না দে। হিন্দি, বাংলা, মারাঠি, গুজরাটিসহ বিভিন্ন ভাষায় অসংখ্য গান গেয়ে অগণিত শ্রোতার হূদয় জয় করেন এই গুণী শিল্পী। হিন্দি ও বাংলা চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক গায়ক হিসেবেও দারুণ সুনাম অর্জন করেছেন। গত শতাব্দীর চল্লিশ থেকে সত্তরের দশক পর্যন্ত ‘জঞ্জির’, ‘মেরা নাম জোকার’, ‘আনন্দ’, ‘শোলে’সহ অসংখ্য ছবির গানে দাপটের সঙ্গে গান গেয়েছেন তিনি।
ষাট বছরের সংগীতজীবনে মান্না দে সাড়ে তিন হাজারের বেশি গান গেয়েছেন।
সংগীতভুবনে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭১ সালে পদ্মশ্রী, ২০০৫ সালে পদ্মবিভূষণ এবং ২০০৯ সালে দাদা সাহেব ফালকে সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি। রবীন্দ্রভারতী ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি. লিট সম্মাননাও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এগুলোর পাশাপাশি আরও অনেক পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে রয়েছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।