আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দীক (রাঃ) পাঁচ শত হাদীসের এক সংকলন বিনষ্ট করে ফেলেন পর্ব-৩

হযরত ওসমান হযরত ওসমান (রাঃ) নিজে হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু খুব অল্প সংখ্যক হাদীসই তার নিকট হইতে বর্ণিত হয়েছে। এর কারণ প্রদর্শন সম্বন্ধে তিনি নিজেই বলেছেন: ‘রাসুলের সাহাবীদের মধ্যে রাসুলের অধিক হাদীস সংরক্ষণকারী আমি নই; এই কারণটি আমাকে রাসুলের হাদীস বর্ণনা করা হতে বিরত রাখেনি বরং হাদীস বর্ণনা হতে বিরত থাকার কারণ এই যে, আমি নিজেই রাসুল করীমকে (সাঃ) এই কথা বলতে শুনেছি বলে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রাসুল যা বলেননি তা যদি কেউ তার উপরে আরোপ করে তবে সে যেন জাহান্নামে তাঁর আশ্রয় খুঁজে নেয়। ’ হযরত ওসমান অল্প কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করা ছাড়া অপর কোনো বৃহত্তর খিদমত করেছেন বলে কোথাও উল্লেখ পাওয়া যায় না। (সূত্র-হাদিছ সংকলনের ইতিহাস; মু: আ: রহিম; ১ম সংস্করণ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন; ৬ষ্ঠ প্রকাশ, পৃ: ২৯০-৩০০, খায়রূন প্রকাশনী;, পৃ: ২৯০ কিছু লোক ছিলো যারা এইভাবে চিন্তা করতো,আমার কথা বা ধারনা যদি সত্য ও ভালো হয়,তবে সেই কথা বা ধারণা আরও বিস্তারিত ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য একটা মিত্যা হাদীস বানানোর অসুবিধা কি? যেমনঃ ''আকীলি, মোহাম্মদ এবনে ছইদ হইতে রেওয়ায়েত করিয়াছেন বাক্যটি যদি সৎ হয়, তবে তজ্জন্য একটা সূত্র-পরম্পরা গড়িয়া লওয়াতে, অর্থাৎ মিত্যা করিয়া তাহাকে হাদীসে পরিণত করাতে কোন দোষ নাই।

তিমমিজি বলেন, আবু মোকাতেল খোরাছানী লোকমান হাকিমের উপদেশ সম্বন্ধে আওন-এবনে-শাদ্দাদ হইতে বহু সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করেন। ইহাতে তাঁহার ভ্রাতুস্পুত্র তাঁহাকে বলিলেন, আপনি আওন আমাকে বলিয়াছেন এরুপ কথা বলিবেন না। কারণ আওনের নিকট হইতে আপনি ঐ সকল হাদীস শ্রবণ করেন নাই। ভ্রাতুস্পুত্ত্রের কথা শ্রবণ করিয়া আবু মোকাতেল বলিলেন, ইহাতে দোষ কি বাবা? এই কথাগুলি তো খুবই ভালো। ----চরকাশী-আমাদের গুরু ও 'মাফহুম' রচয়ীতা আব আব্বাহ্ যাহা বলিয়াছেন, তাহা আরও বিস্ময়জনক।

তাঁহারা বলেন,কিয়াছবাদী ফেকাওয়ালাদিগের মধ্যে কেহ কেহ বলেন যে, কিয়াছের দ্বারা কোন কথা প্রমাণিত হইয়া গেলে, সেই কথাকে হাদীসে পরিণত করার জন্য, হজরতের নামে অর্থাৎ হজরত বলিয়াছেন বা করিয়াছেন এইরুপ বলিয়া একটা মিথ্যা সনদ গড়িয়া লওয়া জায়েজ। ---(মোস্তফা চরিত, পৃষ্ঠা ৯১-৯২) উপরের উদ্ধৃতি থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, অনেক লোকের ধারণা অনুযায়ী, কোন ভালো বা যুক্তিসংগত বিষয় মানব সমাজের মধ্যে উপস্থাপন করতে গেরে সেই বিষয় সম্পর্কে মিথ্যা সনদসহ জাল হাদীস করার কোন অসুবিধা নেই বরং জায়েজ। লোকেরা ইচ্ছাকৃতভাবে হাজার হাজার নয় বরং লক্ষ লক্ষ জাল হাদীস তৈরী করিয়াছে। হাম্মাদ বিন যায়েদের বর্ণনামতে একমাত্র যানাদুকারাই চৌদ্দ হাজার জাল হাদীস রচনা করিয়াছিল। ইহাদের মধ্যে আব্দুল করিম অজ্জা নিজেই স্বীকার করিয়াছে যে, সে চার হাজার জাল হাদীস রচনা কারিয়াছিল।

অনেক নির্ভরযোগ্য দরবেশ শ্রেণীর লোকও মানুষকে ধর্মের প্রতি উৎসাহিত করিবার সৎ উদ্দেশ্য নিয়া ফাযায়েল মূলক হাদীস তৈরী করিয়াছিল। হাফেজ যয়নুদ্দীন ইরাকী লিখিয়াছেন- এই সমস্ত দরবেশের তৈরী হাদীসই সব চাইেতে বেশী ক্ষতিকর হইয়া দাঁড়াইয়াছিল। কারণ সাধারন্যে তাহাদের লেবাছ, পোশাক ও চাল চলন দেখিয়া মনে করার উপায় ছিল না যে, এই সমস্ত লোকও ভূয়া হাদীস তৈরী করিতে পারে। সুতরাং সাধারণ লোক তাহাদের তৈরী হাদীস গুলিকেই সহীহ্ হাদীস বলিয়াই ধরিয়া লইয়াছিল। ''-----(আবু হানিফা, পৃষ্ঠা ২১৮) খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দীক (রাঃ) পাঁচ শত হাদীসের এক সংকলন বিনষ্ট করে ফেলেন পর্ব-৩ --চলবে।

পর্ব -১- Click This Link পর্ব-২ Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.