আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বোধোদয়

আমি অতি সাধারণ মানুষ ইকবাল সাহেব বারান্দায় বসে আছেন। বিকালবেলা কিছু সময় তিনি বারান্দায় বসে থাকেন। ঢাকা শহর ধীরে ধীরে ইট, বালু, সিমেন্টের নগরী হয়ে উঠলেও এখনো তার বাসার আশেপাশে ফাঁকা জায়গা আছে। ছেলেরা বিকেলে এখানে খেলাধুলা করে। ইকবাল সাহেব মুগ্ধ হয়ে খেলা দেখেন।

মানুষের জীবনে আনন্দের বড়ই অভাব। এইসব বাচ্চাদের আনন্দ দেখতে তার ভাল লাগে। আজকে অবশ্য কেউ খেলছে না। দুপুর থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এখন রীতিমত মুষলধারে বৃষ্টি পরছে।

ইকবাল সাহেব চুপচাপ বৃষ্টি পরা দেখছেন। আজকে খেলা হচ্ছেনা বলে তার মন কিঞ্চিত খারাপ। তার জীবনে আনন্দ নেই। সারাদিনের মধ্যে এই বিকেলবেলাতেই তার যা একটু ভাল লাগে। মাগরিবের নামাজের সময় হলে ইকবাল সাহেব উঠে নামাজ পড়লেন।

নামাজ পড়া শেষ হলে জব্বার এসে চা দিয়ে গেল। সন্ধ্যায় তিনি এক মগ গ্রীনটি খান। সন্ধ্যার এই চা পর্ব তাকে একাই পালন করতে হয়। তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে এই সান্ধ্য চা-চক্রে তিনি একাই অংশগ্রহন করেন। ইকবাল সাহেব এই অবসর জীবনে খুব নিঃসঙ্গ অনুবভ করেন।

এ বাসায় এখন তিনি আর তার ছেলে মাহমুদ থাকে। তার বড় মেয়ে বিয়ের পরে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী হয়েছে। মাহমুদ চাকরি নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকে। বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রতিদিনি প্রায় নয়টার মত বেজে যায়। তিনি ছেলের জন্য অপেক্ষা করেন।

ছেলে আসলে একসাথে রাতের খাবার খাবেন। মাহমুদ যদিও প্রায় রাতেই কিছুই খায় না। তারপরও ইকবাল সাহেবের অপেক্ষা করতে ভাল লাগে। মাহমুদকে উনি কয়েকবার বিয়ের কথা বলেছেন। কিন্তু মাহমুদ এখন বিয়ে করতে চায় না।

ও আগে ক্যারিয়ার গড়তে চায়। বিয়ে যেকোন সময় করা যাবে, কিন্তু এখন ক্যারিয়ার গড়তে না পারলে পরে আর সময় পাওয়া যাবে না- এই হচ্ছে মাহমুদের যুক্তি। ইকবাল সাহেব কিছু বলেন না। চুপচাপ ছেলের যুক্তি শুনে যান। ইকবাল সাহেবের এখন প্রায়ই তার বাবা-মার কথা মনে পড়ে।

প্রায়ই পুরোনো এ্যালবাম বের করে বাবা-মার ছবি দেখেন। তার বাবা মা দুজনই আজ থেকে প্রায় পনেরো বছর আগে মারা যায়। বাবা মারা যাওয়ার পাঁচ মাস পর তার মাও মারা যায়। তারপর থেকেই তিনি এতিম। এতদিন তার স্ত্রী তাকে সঙ্গ দিয়েছে।

বছর তিনেক আগে তিনিও গত হয়েছেন। ইকবাল সাহেব তার বাবা-মার একমাত্র সন্তান। তার বাবা-মার বিয়ের প্রায় আট বছর পর ওনার জন্ম হয়েছে। দীর্ঘদিন নিঃসন্তান থাকার পর ইকবাল সাহেবের জন্ম হওয়াতে স্বাভাবিকভাবেই ইকবাল সাহেবের আদরযত্ন একটু বেশিই ছিল। বাবা মা তার প্রায় সব স্বাদ আহ্লাদি পুরোন করার চেষ্টা করতেন।

তাকে অনেক স্বাধীনতা দিয়েছিলেন তারা। তার মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কখনই জোর করে কিছু চাপিয়ে দেননি তারা। কিন্তু বাধ সাধলেন যখন তিনি পড়াশুনার জন্য বিদেশ যেতে চাইলেন। -বাপ, তোর আর পরাশুনা কইরা কাজ নাই। অনেক তো পড়লি, ভার্সিটিও পাশ দিলি।

আর পইড়া কি হইব? এখনতো ভাল একটা চাকরিও পাইসস। বাদ দে। বিদেশ যাওয়া লাগব না। এখন বিয়াশাদী কইরা সংসারী হ। -মা, তোমরা বুঝতাছোনা।

আমি একটা বিত্তি পাইছি। খুব ভাল বিত্তি। আমি যদি এইটা পইড়া আসতে পারি, তাইলে আরো ভাল চাকরি পামু। আর আমার লাইগা তোমাদের কোন খরচ করতে হইবো না। উল্টা আমি তোমাগো টাকা পাঠাইতে পারুম।

-বাপ, তুই জাইস না। তুই গেলেগা আমরা থাকুম কেমনে? আমাগো আর কে আছে তুই ছাড়া? তুই বাংলাদেশের অন্য কোনখানে গেলে তাও হইত, তুই যাবি সেই আমেরিকা! বাপ, তোর এতদূর যাওয়া লাগব না। অত পরাশুনা আমার দরকার নাই। অত টাকাও আমার লাগব না। তুই বাংলাদেশেই থাক।

বাবা মার এত অনুরোধেও ইকবাল সাহেব পিছপা হননি। তিনি আমেরিকা চলে যান পড়তে। মাস্টার্স শেষ করে পিএইচডি করেন। তারপর দীর্ঘ ছয় বছর পর তিনি আবার দেশে ফিরে আসেন। -স্যার, মাহমুদ ভাই ফোন করছে, জব্বারের কথাতে ইকবাল সাহেব আবার বাস্তবে ফিরে আসেন।

তিনি জব্বারের হাত থেকে কর্ডলেস ফোনটা নিয়ে কানে দেন। -হ্যালো। -হ্যালো বাবা, আমি অফিসের কাজে আজকে রাতে একটু চিটাগাং যাচ্ছি। দুইদিন পরে ফিরব। সকালে তোমাকে বলতে ভুলে গিয়েছিলাম।

তাই ফোন করলাম। -আচ্ছা। সাবধানে থেকো। -ওকে বাবা। রাখি।

ইকবাল সাহেব ফোনটা জব্বারের দিকে এগিয়ে দিল। জব্বার চলে গেল। আগামী দুইদিনের জন্য পুরোপুরি নিঃসঙ্গ হয়ে গেলেন। এইদিন তার ছেলে রাতে বাসায় থাকত। তিনি অনুভব করতেন তার অতি আপন একজন তার পাশের রুমেই আছে।

আগামী দুইদিন কেউ থকবে না। তিনি পুরোপুরি একা। অবশ্য তিনি এটা মেনে নিয়েছেন। এই নিঃসঙ্গতা তার প্রাপ্যই ছিল। রাতে ভাত খেয়ে ইকবাল সাহেব তার বুকশেলফ খুলে পঁয়ত্রিশ বছর আগে লেখা ডাইরি বের করলেন।

পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণ করতে তার ভাল লাগে। তিনি ডায়রির পাতা উল্টান। কতকিছু লেখা আছে এই ডায়রিতে! তিনি তখন পঁয়ত্রিশ বছরের এক টগবগে যুবক। তার দুচোখে স্বপ্ন। তিনি স্বপ্ন দেখেন এদেশের বড় এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হওয়ার।

লোকজন তার কথায় উঠবে বসবে। পাজেরো হাঁকিয়ে তিনি অফিসে আসবেন। দারোয়ান গেট খুলে তাকে স্যালুট দিবে। কিন্তু এজন্য তাকে ব্যবসা করতে হবে। চাকরি করে এসব স্বপ্ন পূর্ণ হবে না।

ইকবাল সাহেব সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি ব্যবসা করবেন। কিন্তু এখানেও তার বাবা মা আপত্তি করলেন। -ব্যবসা করতে গেলে অনেক খটনি বাপ। সারাদিন অফিসে পইড়া থাকতে হয়। মেলা দৌড়াদৌড়ি করা লাগে।

আর খালি টেনশন আর টেনশন। তুই বাপ ব্যবসা বাদ দে। দরকার কি এত টাকাপয়সার? ভালই তো চাকরি কইরা পাইতাছস। শুধু শুধু টেনশন বাড়াইয়া লাভ কি? ইকবাল সাহেব বাবা মার একথাও আমলে নেননি। ধুর, বাবা মার সব কথা শুনলে জীবনে কিছুই করা যায় না।

তিনি আর তার এক বন্ধু মিলে একটা ছোট গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি খুললেন। মাত্র তিনটা সুইং লাইন দিয়ে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি চালু করলেন। দেখতে দেখতে তার সুইং লাইন বাড়তে লাগল। তার ব্যবসায় প্রচুর লাভ হতে থাকে। তিনি রঙের ব্যবসায় হাত দেন।

কাপড়ের রঙ বিক্রি করা শুরু করেন। এখনেও তিনি প্রচুর লাভ করেন। তার ব্যবসা আরো বড় হয়। তার ব্যস্ততাও বাড়তে থাকে চক্রবৃদ্ধিহারে। বাসায় সময় দিতে পারেন না খুব একটা।

ছেলেমেয়ের সাথে তার দূরত্ব বাড়তে থাকে। তিনি খুব একটা আমলে নেন না ব্যাপারগুলি। ছেলেমেয়ের জন্যই তো সব করছেন। মেয়ের বিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক ছেলের সাথে। যতদিন তার স্ত্রী বেঁচে ছিল মেয়ে প্রতি সাপ্তাহে একবার ফোন দিত।

তিনি ছেলেমেয়েদের সময় দিতে পারেননি বলে মায়ের সাথেই তাদের ঘনিষ্ঠতা হয় বেশি। মাকেই ফোন দিত মেয়ে। তিনিও এই সুযোগে মেয়ের সাথে কথা বলতেন। কিন্তু মা মারা যাওয়ার পর মেয়ে আর আগের মত ফোন দেয় না। তিনি মাঝে মাঝে ফোন দেন, কিন্তু খুব বেশিক্ষণ কথা বলতে পারেন না।

অল্পতেই কথা ফুরিয়ে যায়। অথচ মায়ের সাথে একঘণ্টায়ও মেয়ের কথা ফুরাত না। ক্রিং ক্রিং। ক্রিং ক্রিং। ফোনের শব্দে ইকবাল সাহেবের স্মৃতিচারণে ব্যঘাত ঘটল।

ইকবাল সাহেব মোবাইল হাতে নিলেন। তার বন্ধু, ব্যবসায়িক পার্টনার বেলাল ফোন দিয়েছে। -হ্যালো। -কেমন আছিস ইকবাল? শরীর ভাল? -আছি আল্লাহর রহমতে ভালই। তোর কি খবর? -ভাল।

তুই কালকে একটু অফিসে আসতে পারবি? -আমার শরীরটা অত ভাল নেই। কি জন্যে? -জাপান থেকে একটা নতুন অর্ডার পেয়েছি। অনেক বড় অর্ডার। তুই একবার একটু আয়। দেখে যা।

-তোর যা ভাল মনে হয় কর। আমাকে আর টানিস না। -এটাতো তোরও কোম্পানি নাকি? -হ্যাঁ, আমার কোম্পানি। কিন্তু আমি তো এখন তোর উপর সব ছেড়ে দিয়েছি। আমার আর এসব দেখতে ভাল লাগে না।

তোর যা ভাল মনে হয় কর। -আচ্ছা ঠিক আছে। ভাল থাকিস। -আল্লাহ্‌ হাফেজ। ইকবাল সাহেব ফোন রেখে দেন।

বেলাল তার খুব বিশ্বস্ত বন্ধু। বেলালের উপর উনি নিশ্চিন্তে বিশ্বাস করতে পারেন। তাদের ব্যবসা এখন বেলাল আর বেলালের ছেলে দেখে। তিনি এখন আর এই ব্যবসা দেখেন না। তার ছেলে মাহমুদও বাবার ব্যবসার সাথে নিজেকে জড়ায়নি।

মাহমুদ কেন তার ব্যবসায় বসেন না, এটা তিনি বুঝেন না। মাহমুদ যখন তার গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে তখন একদিন তিনি মাহমুদকে তার অফিসে বসতে বলেন। -না বাবা, আমি তোমার অফিসে বসব না। -অফিসে বসবি না মানে? -মানে বাবা আমি আসলে তোমার ব্যবসার সাথে নিজেকে জড়াতে চাচ্ছি না। -তা কি করবি? -আমি একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জয়েন করতে যাচ্ছি।

আমাকে ওরা সিলেক্ট করেছে। আমি আগামী মাসে ওখানে জয়েন করব। -তা আমার এখানে জয়েন করতে কি সমস্যা? -আসলে বাবা আমি নিজে নিজে কিছু করতে চাই। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। -তা আমার এই ব্যবসা কে দেখবে? আমি আর কয়দিন বাঁচব! তুইতো এর উত্তরাধিকারী হবি।

তোর এসব বুঝে নিতে হবে না! -সে পরে দেখা যাবে বাবা। আর কে কয়দিন বাঁচে এটা কে বলতে পারে? ইকবাল সাহেব মাহমুদকে আর কিছু বলেননি। তিনি নিজেও তার বাবা মার কথা অমান্য করে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। মাহমুদ তার কথা শুনবে না, এতে আর আশ্চর্য কি। //২// ইকবাল সাহেবের আজকে ভাল লাগছে।

প্রায় সাপ্তাহখানেক পরে আজ মাহমুদ তার সাথে রাতের খাবার খাচ্ছে। তিনি খুব আনন্দের সাথে খাওয়া দাওয়া করছেন। মাহমুদকে এটা ওটা এগিয়ে দিচ্ছেন। -আরেকটু ভাত নে, এত কম খেলে তোদের মত ইয়াং ছেলের চলে? -না বাবা, আর খাব না। পেট ভরে গেছে।

-ভাত না খেলে শুধু শুধু এই মাছের পিসটা খা, দিব? -না বাবা, আর কিছু খাব না। -আচ্ছা ভাল কথা, তোর দুই-তিনদিন সময় হবে? -কেন? -পরশুদিন তোর দাদার মৃত্যুবার্ষিকী। আমি কাল গ্রামে যাব। তুইও আমার সাথে চল। -বাবা, আমিও যেতাম।

কিন্তু কালকে আমাদের মেইন হেডঅফিস- মানে ফ্রান্সের অফিসের সিইও আসবে বাংলাদেশে। এই সাপ্তাহ উনি বাংলাদেশেই থাকবেন। এদেশের প্রজেক্টগুলো ঘুরে দেখবেন। আমাকে থাকতে হবে। -ও আচ্ছা।

ইকবাল সাহেব আর কোন কথা না বলে খেতে লাগলেন। যতটা আনন্দ নিয়ে তিনি খাওয়া শুরু করেছিলেন তার মন এখন ততটাই বিষাদে ছেয়ে গেছে। মাহমুদের মা যদি এখন মাহমুদকে এই কথাটা বলতেন তাহলে মাহমুদ মায়ের কথা ফেলতে পারত না। মায়ের সাথে মাহমুদের অনেক খাতির ছিল। //৩// ইকবাল সাহেব একা একাই গ্রামে এসেছেন।

আগামীকাল তার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি আগামীকাল দোয়ার ব্যবস্থা করেছেন। কোরআন খতমের ব্যবস্থা করেছেন। আজ আসরের নামাজের পর তিনি মসজিদে বসে আছেন। মসজিদের পাশেই তাদের পারিবারিক কবরস্থান।

মসজিদ খালি হয়ে গেছে। তিনি বাংলা তর্জমাসহ একটি কোরআন শরীফ বের করে পড়তে শুরু করলেন। “তোমার প্রতিপালক নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ব্যতীত অন্য কারো এবাদত করবে না এবং পিতামাতার সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করবে। যদি তাঁদের একজন কিংবা উভয়ই তোমার সামনে বার্ধক্যে উপনীত হন, তবে তুমি তাদের প্রতি ‘উহ!’ শব্দটিও উচ্চারণ করো না। তাঁদের সাথে ধমকের সুরে কথা বলবে না।

বরং তাঁদের সাথে সম্মানসূচক ভাষায় কথা বলবে। তাঁদের জন্য দয়া পরবশ হয়ে বিনয়ের বাহু অবনমিত করো। তাঁদের সেবায় আত্মনিয়োগ করো এবং বলো- হে আল্লাহ্‌, আমার পিতামাতা শৈশবে যেমন স্নেহ-মমতা দিয়ে আমাকে লালন পালন করেছিলেন, আপনি তাঁদের প্রতি তেমনি সদয় হন। ” (সুরা বনী ইসরাইলঃ ২৩-২৫) ইকবাল সাহেবের চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। তিনি কোরআন শরীফ বন্ধ করলেন।

বাবা মার সাথে তিনি ভাল ব্যবহার করেননি। তাদের অনেক কথাবার্তাও শুনেননি। তার মনে আজ সুখ নেই। যে সুখের জন্য বাবা মার নির্দেশ অমান্য করেছিলেন, তা আজ তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। ছেলেমেয়ের সাথে দিনদিন তার দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে ।

বাবার কথা শুনে যদি তিনি ব্যবসা শুরু না করতেন, যদি চাকরি করতেন, তাহলে হয়ত ছেলেমেয়েকে আরো সময় দিতে পারতেন। তার হয়ত টাকাপয়সা থাকত না, কিন্তু মনে শান্তি থাকত। ইকবাল সাহেব মসজিদ থেকে বের হয়ে বাবা মার কবরের সামনে দাঁড়ালেন। বাবা মার জীবদ্দশায় তিনি খুব একটা দায়িত্ব পালন করেননি। এখন তারা বেঁচে নেই।

এখন তাদের প্রতি দোয়া করা ছাড়া আর কোন দায়িত্বই তিনি পালন করতে পারবেন না। দুয়েকজন লোক রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখল এক বৃদ্ধ কবরের সামনে দাঁড়িয়ে হাউমাউ করে কাঁদছে আর বিড়বিড় করে কি যেন বলছে। উৎসর্গঃ আমার বাবা মাকে। যাঁদের সাথে গত পঁচিশ বছর ধরে বেয়াদপি করে চলেছি। কিন্তু আজও তাঁরা হাসিমুখে নিরলসভাবে আমার সেবা করে চলেছেন।

©Muhit Alam ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।