আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্মের নামে অপধর্মের চর্চা করে যারা উগ্রবাদিতা এবং সাম্প্রদায়িকতাকে লালন করে তাদের কর্মকাণ্ডের দোহাই দিয়ে ধর্মকেই দায়ি করা রীতিমত নির্বুদ্ধিতা এবং অযৌক্তিক

যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য ফেইসবুকে কোরআন অবমাননা করে ছবি সংযুক্ত করেন বৌদ্ধ ধর্মের (?)অনুসারী রামু উপজেলার উত্তম কুমার বড়ুয়া। এর প্রতিক্রিয়ায় কিছু উগ্রবাদী মুসল্লি বৌদ্ধ বিহার এবং তাদের ঘর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এদের কেউই ধর্ম অনুসরণ করে নাই, প্রথমত বুদ্ধ অহিংস নীতি মেনে চলার কথা বলতেন, উত্তম কুমার বুদ্ধকে অনুসরণ না করে বুদ্ধিবৃত্তিক সহিংসতার পরিচয় দিয়েছেন, আবার ইসলাম এবং ইসলামের নবী মুহাম্মদও এই ধরনের উগ্র সহিংস হামলা এব ং অগ্নিসংযোগকে রীতিমতো জঘন্য অপরাধ মনে করে, তাই এসব উগ্রবাদি মুসলিম ধর্ম অনুসারি নয়, আমরা উভয়ের এই ধরনের সহিংস কাজের তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদের শাস্তির দাবি জানাই। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে ফেসবুক, ব্লগে অনেকেই এজন্য ধর্মকেই কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে প্রচণ্ড প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের ভাষ্য হচ্ছে ধর্মই এই সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প সৃষ্টি করছে, এদের মতে সকল ধর্মই অন্যধর্মের মানুষকে ঘৃণা করতে শেখায়, বিদ্বেষ সৃষ্টি করে! রামুর ঘটনার উভয় পক্ষই ধর্ম অনুসরণ না করলেও ধর্মকেই দায়ি করাটা স্থুল চিন্তা ছাড়া আর কিছুই না, সকল ধর্মের কোথাও অন্য ধর্মের অনুসারীদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করার কথা বলা নাই, বরং প্রতিটি ধর্মই এটাকেই অমানবিক মনে করে। বিজ্ঞানের আবিস্কারকে মানব বিধ্বংসী পারমানবিক বোমা তৈরির কাজে ব্যাবহার করলে যেমন বিজ্ঞানকে সকল ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ি করা যায় না, তেমনি ধর্মকে ব্যাবহার করে কিছু লোকের সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ সৃষ্টিকে ধর্মপ্রসূত বলা অযৌক্তিক। আর অর্থনীতি আর দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতি , রাজনীতি আর শোষণমূলক অপরাজনীতি, চিকিৎসা আর অপচিকিৎসা, বিজ্ঞান আর অপবিজ্ঞানের মধ্যকার ফারাক যদি আমরা বুঝি, তাহলে ধর্ম আর অপধর্মের পার্থক্য বুঝতে চাই না কেন? কিছু হাতুড়ে চিকিৎসকের অপচিকিতসায় রোগী মারা গেলে চিকিৎসাবিজ্ঞানকেই সকল মৃত্যুর জন্য দায়ি কেউ করবেন না, তাহলে ধর্মের নামে অপধর্মের চর্চা করে যারা উগ্রবাদিতা এবং সাম্প্রদায়িকতাকে লালন করে তাদের কর্মকাণ্ডের দোহাই দিয়ে ধর্মকেই দায়ি করা রীতিমত নির্বুদ্ধিতা এবং অযৌক্তিক। পৃথিবীতে যেই দুটি বিশ্বযুদ্ধে কোটি কোটি মানুষ মারা গেল তার জন্য দায়ি ছিল উগ্র জাতীয়তাবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদ, ধর্ম নয়, একী ধর্মের অনুসারি হলেও শত শত বছর ধরে ইউরোপে যে যুদ্ধ, বিগ্রহ, হানাহানি ছিল (ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের উদাহরণ দ্রষ্টব্য) তার জন্য দায়ি ছিল আধিপত্য এবং ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, জাতীয়তাবাদ এবং জাতের আভিজাত্য, ধর্ম নয়, তাই বলে ইউরোপীয় রেনেসাঁ থেকেই সকল যুদ্ধ, বিগ্রহ, হানাহানি আর সাম্প্রদায়িকতার জন্ম এই সরলীকরণ কেউ করতে আসবেন না, তাহলে ধর্মের অপব্যাবহার এর কারনে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক হানাহানির ক্ষেত্রে ধর্মকেই দায়ি করার এত এত চেষ্টা কেন?

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.