প্লিজ শুনুন, একটু
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় একটি পুরাতন জেলা জেলা হচ্ছে পাবনা। একসময় এটি উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ছিল। কারণ তখন পাবনার নগরবাড়ি ফেরিঘাটের মাধ্যমেই বাস-ট্রাকসহ সড়কপথের সব বাহনকে যাতায়াত করতে হত। এখন অবস্থা পাল্টেছে। ফেরিঘাট থাকলেও যমুনা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর ওপর দিয়েই প্রায় সব বাহন যাতায়াত করে।
ঢাকা থেকে পাবনা যেতে চাইলে সড়ক, রেল, নৌ এবং বিমান এই চারটি ব্যবস্থার মধ্যে সড়কপথে যাওয়াটাই ভালো বালা যায়।
সড়কপথে
সড়কপথে বাসে চড়ে যেতে চাইলে যেতে হবে গাবতলী আন্ত:জেলা বাস টার্মিনালে। এখানে পাবনাগামী অনেক বাসের কাউন্টার রয়েছে। বাসগুলো এখান থেকে যাত্রা করে। তবে কিছু কিছু পরিবহন সংস্থা কল্যাণপুর খাজা মার্কেট, টেকনিক্যাল মোড় ইত্যাদি জায়গায় কাউন্টার বসিয়েছে।
খাজা মার্কেট থেকে বাস যাত্রা না করলেও টেকনিক্যাল মোড় থেকে বেশ কয়েকটি পরিবহন সংস্থার বাস ছেড়ে যায়। এই বাসগুলো অবশ্য গাবতলী থেকেও যাত্রী নেয়। আবার কিছু পরিবহন সংস্থার বাস নারায়ণগঞ্জ থেকে থেকে যাত্রা করে উত্তরা, আবদুল্লাহপুর হয়ে যাতায়াত করে। নারায়ণগঞ্জ, মালিবাগ, আবদুল্লাহপুর প্রভৃতি জায়গায় এসব বাসের কাউন্টার রয়েছে, এসব জায়গায় যাত্রী ওঠা-নামার সুযোগও রয়েছে। বলাবাহুল্য সব বাসই যমুনা সেতু হয়ে যাতায়াত করে।
যমুনা সেতুর দু’পারে টাঙ্গাইল এবং সিরাজগঞ্জ অংশে বেশ কয়েকটি রেষ্টুরেন্ট রয়েছে। পাবনাসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন গন্তব্যের বাসগুলো এসব রেষ্টুরেন্টে যাত্রাবিরতি করে। রেষ্টুরেন্টগুলোয় ফ্রি টয়লেট সুবিধা থাকে। বিভিন্ন ধরনের হালকা খাবার ছাড়াও ভাত সহকারে দুপুর বা রাতের আহার সেরে নেয়া যায় এখান থেকে। যাত্রা বিরতির সময়কাল ১০ থেকে ১৫ মিনিট হয়।
কম খরচে যেতে
কম খরচে যেতে চাইলে গাবতলী থেকে আরিচাগামী বাসে চড়তে হবে। ফুলবাড়িয়া বিআরটিসি বাসস্ট্যান্ড থেকেও আরিচাগামী বিআরটিসি বাস পাওয়া যায়। এরপর লঞ্চে বা ফেরিতে যমুনা নদী পর হতে হবে। তারপর নগরবাড়ী থেকে পাবনাগামী বাসে চড়তে হবে। এ পথে যাওয়া একটু কষ্ট হলেও বেশ অর্থ সাশ্রয় হয়।
আরিচা এবং নগরবাড়িতে বাস স্ট্য্যন্ডও নদী সরে যাওয়ার সাথে সাথে সরিয়ে নেয়া হয়। ফলে বাস থেকে নেমেই ফেরি বা লঞ্চে ওঠা সম্ভব।
বর্ষাকালে উত্তাল নদী পর হতে লঞ্চে না চড়ে ফেরিতে নদী পার হওয়াই ভালো।
ভাড়া করা বাহন বা ব্যক্তিগত বহনে
ভাড়া করা গাড়ি কিংবা ব্যক্তিগত গাড়িতে পাবনা যেতে চাইলেও যমুনা সেতু হয়ে যাওয়াটাই ভালো, কারণ আরিচা ও নগরবাড়ি ফেরিঘাটে সময়মত ফেরি পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকে।
গাড়ি ভাড়ার তথ্য জানতে...
পরিবহন সংস্থা:
ঢাকা-পাবনা রুটে বেশ অনেকগুলো পরিবহন সংস্থার বাস চলাচল করে।
এর মধ্যে পাবনা এক্সপ্রেস, রাজা বাদশাহ, বাদল, শ্যামলী অন্যতম।
ভাড়া
নন-এসি বাসের ভাড়া ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা। আর এসি বাসের ভাড়া ৪০০ টাকা।
রেলপথে
পাবনা শহরে এখন পর্যন্ত রেললাইন নেই। তবে ট্রেনেও পাবনা যাওয়া যেতে পারে।
কারণ পাবনার চাটমোহর এবং ঈশ্বরদীতে রেল স্টেশন রয়েছে। খুলনা, রাজশাহী ও দিনাজপুরগামী ট্রেনগুলো এসব স্টেশন হয়ে যাতায়াত করে।
চাটমোহর এবং ঈশ্বরদী রেল স্টেশন থেকে বাসে চড়ে সহজেই পাবনা শহরসহ পাবনার বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া সম্ভব।
কিছু ট্রেন ঈশ্বরদী মূল জংশনে থামে। এখান থেকে রিকশায় চড়ে বাস স্ট্যান্ডে যেতে হবে।
আবার কিছু ট্রেন ঈশ্বরদীর বাইপাস স্টেশনে থামে এখান থেকে ভ্যান বা রিকশায় চড়ে বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে।
ট্রেনের নাম
যেসব ট্রেনে চড়ে চাটমোহর কিংবা ঈশ্বরদী যাওয়া যায়:
খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস
খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস
রাজশাহীগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস
রাজশাহীগামী পদ্মা এক্সপ্রেস
রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস
দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস
বিমান পথে
পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি বিমানবন্দর থাকলেও এখন বন্ধ। কাজেই বিমানযোগে পাবনা যাওয়ার সুযোগ এখন নেই।
নৌ-পথে
ঢাকা থেক নৌ-পথেও পাবনা যাওয়ার সুযোগ এখন নেই। তবে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহনে পাবনার নগরবাড়ি এবং বাঘাবাড়ি ঘাট ব্যবহৃত হচ্ছে।
থাকার ব্যবস্থা:
ভাঁড়ারা শাহী মসজিদ, জোড় বাংলা,মন্দির, তাড়াশ বিল্ডিং, বৃটিশ্ শাসনামলে নির্মিত হার্ডিঞ্জ সেতু, রেল জাদুঘর ছাড়াও অনেক অনেক কিছু দেখার আছে পাবনায়। এছাড়া বর্ষায় চলনবিলের সূর্যাস্তও বেশ উপভোগ্য।
পাবনায় থাকার জন্য সরকারি সার্কিট হাউজ, রেস্ট হাউজ ছাড়াও বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ের হোটেলগুলোর মধ্যে হোটেল শীল্টন, হোটেল টাইম গেষ্ট, প্রশান্তি ভূবন পার্ক, হোটেল শাপলা, ইডেন বোডিং ইত্যাদির নাম উল্লেখযোগ্য। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।