ভার্সিটিতে ঊঠে ঘোরাঘুরির একটা গ্রুপ হয়ে গেল। ৭/৮ জনের গ্রুপ। সবারই খুব ইচ্ছা এখানে সেখানে ঘুরব। বিয়ার গ্রিলস এর MAN VS WILD দেখি আর ভাবি আমরাও বাংলাদেশের দুর্গম স্থানগুলোতে যাব। বিয়ারের মত একটা ছুরিই হবে সম্বল।
শিকার করব,ক্যাম্প ফায়ার করব। সারা দিনের ক্লান্তি একটা ভাল ঘুম উপহার দেবে......... ইত্যাদি।
সবশেষে ধান্ধা হল একটা অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব খুলব,বড় গ্রুপ নিয়ে ঘুরব,খরচ কমবে।
কিন্তু ছাত্র মানুষ। পকেটে গড়ের মাঠ।
পাশাপাশি সারাদিন ক্লাস,টিউশনি,সেসনালের পর ক্লান্তির নির্মম অত্যাচারে চোখ বুজে আসে। তারপরও সময় ,সুযোগ পেলে আমরা বেড়িয়ে পড়ি উদ্দেশ্যহীনভাবে। এবছর একটা বড় ট্যুরের প্ল্যান ছিল। টাকা নাই। ভাবলাম কিভাবে কম টাকায় রাংগামাটি যাওয়া যায়।
অবশেষে ডিসিশন হল ট্যাকা নাই ত কি হইছে হাইট্যা হাইট্যা রাঙ্গামাটি
যামু... ইবনে বতুতা হমু।
আমাদের ভার্সিটি থেকে কাপ্তাই খুব কাছেই। সেখান থেকে রাঙ্গামাটির দূরুত্ব ১৫ কিমি। আর রাস্তাটাও নাকি অসাধারণ। আমাদের প্ল্যান হল প্রথমেঙ্কাপ্তাই গিয়ে সেখান থেকে হেটে রাঙ্গামাটি যাব।
যথাসময়ে যথাদিনে আমরা কয়েক তরুণ ভোরে যাত্রা করলাম কাপ্তাইয়ের উদ্দেশ্যে। কিন্তু আমরা কাপ্তাই থেকে ১০ কিমি আগে বড়ইছড়ি তে নেমে পড়লাম। বড়ইছড়ি থেকেও রাংগামাটি যাওয়ার একটা রাস্তা আছে। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে আমরা ঐ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার প্ল্যান করলাম। কথা না বাড়িয়ে হাটা শুরু হল।
টিমের বাকিরা এই রাস্তার দুরত্ব কত জানতে চাইল। আমি বললাম আরে ব্যাটা ১৫ কিমি এর বেশি হবে না।
আমরা হাটছি ত হাটছিই। কিন্তু পথ শেষ হয় না। পথে কোন কিমি পোস্টও দেখা যাচ্ছে না।
বন্ধুরা ক্রমেই অধৈর্য হয়ে পড়ছে। প্রায় ৪ ঘন্টা হাটার পরও কোন বাজার বা বড় গ্রাম চোখে পড়ছে না । এতক্ষণে ত আমাদের রাংগামাটির কাছে চলে আসার কথা।
অবশেষে রাস্তার পাশে ঝোপে ঢাকা কিমি পোস্ট এর ঝোপ সরিয়ে যা দেখলাম তাতে মনে হল নীলাকাশ থেকে ঠা ঠা পড়ল। দেখলাম রাংগামাটি আর মাত্র ২০ কিমি দূরে!!!শুরু হল বন্ধুদের গালিগালাজ।
“শালা এই চড়া রোদে ১৫ কিমি এর কথা কইয়া ৩৫ কিমি হাটাইতে আনছিস । ক্যাম্পাসে যাইয়া লই সবার আগে তোর পা দুইটা লুলা বানাইয়া দিমু...ইত্যাদি। ”
আরে ম্যান আমরা হইলাম গিয়া হার্ডকোর অ্যাডভেঞ্চারার। ৩৫ কিমি ডিসটেন্স কোন ব্যাপার হল—এই ছিল আমার জবাব। কিছু ক্ষণের মাঝে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে গেল সবাই।
দুরত্বের কথা মাথায়ই রইল না।
চলুন আমাদের সাথে খানিকক্ষণ হেটে আসি রাংগামাটির পথে...
যাত্রা শুরু....
তপ্ত রোদের নীচে রাস্তা চলছি আমরা..
রাস্তা ছিল এমনই আকাবাকা
বিশ্রামও ত প্রয়োজন
ওয়াগগা ইশকুলের বন্ধুরা
রাস্তার পাশে গাছের নীচে ছোট্ট আদিবাসী ইশকুল
আদিবাসি ইশকুলের বন্ধুদের সাথে আমরা
ভীষণ ক্ষীধে পেয়েছিল তাই এভাইবেই
রাঙ্গামাটির ট্রাক চড়ে দেখতে পারেন মজা আছে
পথ চলতে চলতে হল দেখা
পাহাড়ে চূড়ায় উড়াই লাল সবুজ
আদিবাসিদের কেউ মারা গেলে এরকম একটা জিনিস তৈরি করে রাখে বিস্তারিত মনে নাই ভুইল্যা গেছি
এবার দেখেন কত সুন্দর রাস্তা
দেহে লাল সবুজ নিয়ে রাঙ্গামাটির প্রায় কাছে চলে এসেছি
এই বস রা আমাদের সাথেই ছিলেন উদারতা দেখিয়ে ছায়া দান করেছেন
সবশেষ ভালবাসা এই মিয়া কে
আমাদের সাথে প্রায় ১০ কিমি এসেছে
দেশ দেখতে বেড়িয়েছিল মনে হয়
যাক দোয়া করবেন
চলেন আরও কিছু জায়গায় ঘুরে আসি
কুতুবদিয়া ঘুরতে চাইলে চলুন আমার সাথে ট্রাভেল লগঃকুতুবদিয়া
আলি কদম গুহায় ঢু মারবেন চলেন তাইলে ট্রাভেল লগঃআলি কদম গুহা -আলির সুরং
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।