এখানে বিনামূল্যে বিশ্ব-বিখ্যাত মাইন্ড বৈজ্ঞানিক দ্বারা মাইন্ড রিলেটেড এনি প্রবলেম অতি যত্ন সহকারে সলভ করা হয় । না জানাই দুর্বলতা , সত্য জানি-মানি-শান্তিতে থাকি
বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ কেমন ভয়ে ভয়ে থাকে । সবার মধ্যে ভয় - এই গেলোরে গেলো , এই মরলাম মনে হয় , এই খাইলো আমারে , আমি শেষ ! ইদুর শ্রেনির মানোসিকতায় এর থেকে বেশি কিছু হবার কথা নয় । নিজ স্বার্থে সদা ব্যাস্ত ইদুরেরা শেষ পর্যন্ত তার বহু যত্নে লালিত প্রানটা বাচাতে পারেনা , রোগে – শোকে কিংবা একসিডেন্টে এক সময় ঠিকই যমদূতের হাতে মারা পরতে হয় ।
কিছু মানুষ অবশ্য ইদুরের জীবন চায় না , তারা সত্যিকারের জীবন চায় , যে জীবনে মরন ভীতির লেশ মাত্র নেই , স্বার্থে লালিত বাসনার কারাগার নেই , নেই গোলামির জিঞ্জীরে হাত পায়ে বাধন ।
সে জীবন, রক্ত দিয়ে ভালোবেসে – মরন কে তুচ্ছ করার –
দুনিয়াতেই মুক্তির আনন্দে - অনন্ত স্বর্গীয়ো সুখের ।
মুক্তির আছে দুটি উপায় –
১। মুক্তির আসল পথটি চেনা । এবং ২। সেই পথে বিরতিহীন পথ চলা
মুক্তির আসল পথটি চেনাঃ
এই পৃথিবীতে একজন , শুধু একজনি নিজের জীবন দিয়ে দেখিয়ে গেছেন “সত্যিকার জীবনের পথ” ।
দিশেহারা মানুষের জন্য একমাত্র আশ্রয় তো তিনি । কোরান শরিফ ও অন্যান্য আসমানি কিতাবে যাকে উল্লেখ করা হয়েছে “ঈসা” মানে “মুক্তিদাতা” মসীহ মানে “মনোনীত ব্যক্তি” নামে । অর্থাৎ তার হাতেই দেয়া হয়েছে পাপিদের মুক্তি দেয়ার সকল ক্ষমতা । আল্লাহ তায়ালা একমাত্র তাকে বলেছিলেন “আমার রুহ” । স্বয়ং প্রভু নেমে এসেছিলেন মাটির পৃথিবীতে যন্ত্রনা ক্লীস্ট মানুষ কে মুক্তি দিতে ।
নিজের জীবন উতসর্গ করে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন ভেতরে হৃদয়ের হৃদয়েস্বর বরাবর “ভক্ত মন” কে নিমজ্জিত করে আর
বাহিরে ঐ হৃদয়েস্বরেরি “সবাই কে মিলিয়ে এক মুর্ত অস্তিত্ব” কে অকাতরে ভালোবাসে কিভাবে মানুষ অর্জন করতে পারে সর্বোচ্চ কল্যান।
তিনি এমন একজন যার মতো কেউ নয় । তিনি মৃত কে জীবিত করেছেন , করেছেন অসুস্থকে সুস্থ , নিজের অস্তিত্ব জ্ঞান করে পরম মমতায় সেবা করে গেছেন সবাইকে – সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান হয়েও নিজের হাতে পা ধুয়ে দিয়েছেন শিষ্যদের , সহ্য করেছেন নির্মম অত্যাচার , পাপিদের মুক্তি দিতে নিজের শরীরের রক্ত অকাতরে করেছেন নিঃশেষ , পাক রুহ তিনি - ইচ্ছা মত শরীর ছেড়ে চলে যেয়ে আবার তিন দিন পর নিজের মৃত শরীরে ফিরে আসেন , ৪০ দিন দুনিয়াতে থেকে আবার চলে যান তার আসল গন্তব্যে । কেয়ামতের আগে আবার তিনি দুনিয়াতে এসে মানুষকে গুনাহ থেকে মুক্ত করবেন, এই আশায় আমরা এখনো বুক বেধে আছি । তাকে কেউ জন্ম দেয়নি তিনিও কাউকে না , এমন ঐশ্বরিক ক্ষমতাবান – নিস্পাপ – নিরঅহংকারী ২য় কেউ আছে কি ?
তাই আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি আর কেউ নয় শুধু তাকে ভালোবাসলে প্রভুকেই ভালোবাসা হবে , সমস্ত সৃস্টির সেবা করলে তাকেই সেবা করা হবে –প্রভুরি সেবা হবে কারন প্রভু তার সৃস্টির সাথে বিচ্ছিন্ন নয় , তাকে সম্মান করলে প্রভুকেই সম্মান করা হবে ,তাকে অনুসরন করা হলে প্রভুকেই অনুসরন করা হবে ,কারন তিনি যে স্বয়ং পাক রুহ !
গরু – ছাগলের রক্ত আমাদের গুনাহের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে পারে না , শুধু নিস্পাপ মানুষের রক্তই পারে ।
একমাত্র ঈসা মসীহ ছিলেন নিস্পাপ আর তাকেই আমাদের গুনাহের জন্যে কোরবানি করা হয়েছে, তাই তিনিই আমাদের অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তি দানকারী ।
আল্লাহর কিতাব ইঞ্জীল শরিফে ঈসা বলেন , “আমার পিতা (রুহানী অর্থে আল্লাহ কে পিতা বলা হচ্ছে) সব কিছুই আমার হাতে দিয়েছেন । পিতা ছাড়া পুত্র কে কেউ জানে না এবং পুত্র ছাড়া পিতা কে কেউ জানে না , আর পুত্র যার কাছে পিতা কে প্রকাশ করতে ইচ্ছা করেন সে-ই তাকে জানে । তোমরা যারা ক্লান্ত ও বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছ, তোমরা সবাই আমার কাছে এসো ; আমি তোমাদের বিশ্রাম দেবো । আমার জোয়াল তোমাদের উপর তুলে নাও ও আমার কাছ থেকে শেখো , কারন আমার স্বভাব নরম ও নম্র ।
এতে তোমাদের দিলে বিশ্রাম পাবে , কারন আমার জোয়াল বয়ে নেওয়া সহজ ও আমার বোঝা হালকা” । (মথি ১১:২৭-৩০)
তিনি আরো বলেন , “আমিই পথ , সত্য আর জীবন । আমার মধ্যে দিয়ে না গেলে কেউই পিতার (রুহানী অর্থে আল্লাহ কে পিতা বলা হচ্ছে) কাছে যেতে পারে না । - ( ইঞ্জিল শরিফ , ইউহোন্না ১৪:৬)
পরে তিনি (ঈসা) সেই রুটি টুকরা টুকরা করলেন এবং উম্মতদের দিয়ে বললেন, “এই নাও, খাও , এ আমার শরীর”।
-ইঞ্জিল শরিফ –মথি ২৬:২৬
তিনি ২০০০ সাল আগেই মাত্র দুটি কথায় মানুষকে মুক্তির দিশা দিয়েছেন –
১) আমাদের মাবুদ আল্লাহ এক ।
তোমার সমস্ত অন্তর, তোমার সমস্ত প্রান , তোমার সমস্ত মন এবং তোমার সমস্ত শক্তি দিয়ে প্রভু , যিনি তোমার আল্লাহ , তাকে মহব্বত করবে ।
২) তোমার প্রতিবেশি কে নিজের মত মহব্বত করবে । -(ইঞ্জিল শরিফ , মার্ক ১২:৩০-৩১ আয়াত)
আসুন পবিত্র কোরানের আলোকে ঈসা মসিহ কে আরো জানতে চেষ্টা করে, সত্যিকার জীবনের পথ খুজে পাইঃ-
**কেয়ামত পর্যন্ত কার অনুসারীরা বিজয়ী থাকবে ?
উত্তর – সুরা আল-ই-ইমরান ৩:৫৫-৫৬
৫৫। যখন আল্লাহ বললেন , “হে ঈসা! আমি তোমার সময় পূর্ন করতে এবং তোমাকে আমার কাছে তুলে নিতে যাচ্ছি । আর যারা (তোমাকে) অবিশ্বাস করেছে , আমি তাদের থেকে তোমাকে পবিত্র করবো এবং তোমার অনুসারীদের কে কেয়ামত পর্যন্ত বিজয়ী রাখবো ।
তারপর তোমরা আমার কাছে ফিরবে । তখন যে বিষয়ে তোমাদের মতভেদ ঘটেছে আমি তার মিমাংসা করে দেবো । ৫৬। যারা (তোমাকে) অবিশ্বাস করেছে আমি তাদেরকে ইহকাল ও পরকালে কঠর শাস্তি দেবো আর তাদের কে কেউ সাহায্য করবে না ।
**ঈসা মসিহ কি আল্লাহ তায়ালার রুহ ? তাকেও তো কেউ জন্ম দেয়নি ও তিনিও কাউকে জন্ম দেননি , তিনিই একমাত্র নিষ্পাপ ছিলেন ।
অন্য সব নবিদের ওপর লিখিত বানী নাযিল হয়েছিলো কিন্তু ঈসা মসিহ আল্লাহর জীবন্ত বানী ছিলেন? তিনি আসলে কে ছিলেন?
উত্তর- সুরা তাহরিম ৬৬:১২ - সুরা ইখলাস – ইঞ্জিল শরিফ ইউহোন্না১:১-৫,৯-১৩,১৭-১৮ - ১৪:৩-১২,২০-২১
১২। তিনি আরো দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন ইমরান কন্যা মরিয়মের , যে তার সতীত্ব রক্ষা করেছিল । আমি তাই তার মধ্যে আমার (আল্লাহর) রুহ ফুকে দিয়েছিলাম , এবং সে তার প্রতিপালকের বানী (ঈসা মসিহ) ও তার নির্দশনাবলী বাস্তবায়িত করেছিল । সে ছিল অনুগতদের একজন ।
-
সুরা ইখলাস-
বলো তিনি আল্লাহ অদ্বিতীয় ।
আল্লাহ সবার নির্ভরস্থল । তিনি কাউকে জন্ম দেননি ও তাকেও কেউ জন্ম দেয়নি । আর তার সমতুল্য কেউ নেই।
-
আল্লাহর বানী মানুষ (ঈসা মসিহ) হয়ে জন্মগ্রহন করলেন।
প্রথমেই বানী ছিলেন , বানী আল্লাহর সংগে ছিলেন এবং বানী নিজেই আল্লাহ ছিলেন ।
আর প্রথমেই তিনি আল্লাহর সংগে ছিলেন । সব কিছুই সেই বানীর দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল, আর যা কিছুই সৃষ্টি হয়েছিল কোন কিছুই তাকে ছাড়া সৃষ্টি হয়নি। তার মধ্যে জীবন ছিল এবং সেই জীবনি ছিল মানুষের নূর । সেই নূর অন্ধকারের মধ্যে জ্বলছে কিন্তু অন্ধকার নূর কে জয় করতে পারেনি।
সেই আসল নূর , যিনি প্রত্যেক মানুষকে নূর দান করেন, তিনি দুনিয়াতে এসেছিলেন।
তিনি দুনিয়াতেই ছিলেন এবং দুনিয়া তার দ্বারাই সৃষ্ট হয়েছিল, তবু দুনিয়ার মানুষ তাকে চিনলোনা। তিনি নিজের দেশে আসলেন, কিন্তু তার নিজের লোকেরাই তাকে গ্রহন করলো না । তবে যতজন তার ওপর ঈমান এনে তাকে গ্রহন করলো , তাদের প্রত্যেককে তিনি আল্লাহর সন্তান হবার অধিকার দিলেন। এই লোকদের সৃষ্টি রক্ত থেকে হয়নি, শারিরিক কামনা বা পুরুষের বাসনা থেকেও হয়নি, কিন্তু আল্লাহর থেকেই হয়েছে।
ঈসা মসিহের মধ্যে দিয়ে রহমত ও সত্য এসেছে ।
আল্লাহ কে কেউ কখনো দেখেনি । তার সংগে থাকা সেই একমাত্র পুত্র (ঈসা মসিহ), যিনি নিজেই আল্লাহ, তিনিই (আল্লাহই) তাকে (নিজেকে) প্রকাশ করেছেন।
-
আমি গিয়ে তোমাদের জন্য জায়গা ঠিক করে আসবো আর আমার কাছে তোমাদের নিয়ে যাবো, যেন আমি যেখানে (বেহেস্তে) থাকি তোমরাও সেখানে থাকতে পারো । আমি কোথায় যাচ্ছি তার পথ তো তোমরা জানো ।
থোমা ঈসাকে বললো, “হুজুর আপনি কোথায় যাচ্ছেন তা-ই আমরা জানিনা, তবে পথ কি করে জানবো”?
ঈসা থোমা কে বললেন, “আমিই পথ , সত্য আর জীবন।
আমার মধ্যে দিয়ে না গেলে (আমার দেখিয়ে দেয়া পথে না চললে)কেউই পিতার কাছে যেতে পারে না । তোমরা যদি আমাকে জানতে তবে আমার পিতা কেও জানতে । এখন তোমরা তাকে জেনেছো আর তাকে দেখতেও পেয়েছো”।
ফিলিপ ঈসাকে বললেন, “হুযুর পিতাকে (আল্লাহকে) আমাদের দেখান , তাতেই আমরা সন্তুষ্ট হব”।
ঈসা তাকে বললেন, “ফিলিপ, এতদিন আমি তোমাদের সংগে সংগে আছি , তবুও কি তুমি আমাকে জানতে পারোনি? যে আমাকে দেখেছে সে পিতাকেও (আল্লাহকেও) দেখেছে ।
তুমি কেমন করে বলছো , “পিতাকে আমাদের দেখান”(আল্লাহর প্রকাশ্য রুপ তো আমি)। তুমি কি বিশ্বাস করনা যে, আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতা আমার মধ্যে আছেন? যেসব কথা আমি তোমাদের বলি তা আমি নিজে থেকে বলিনা, কিন্তু পিতা যিনি আমার মধ্যে আছেন (এবং আমিও যার মধ্যে আছি), তিনিই তার কাজ করছেন। আমার কথায় বিশ্বাস কর যে , আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতা আমার মধ্যে আছেন । তা না হলে অন্ততঃ আমার এই সব কাজের (ঐশ্বরিক ক্ষমতার) জন্য আমাকে বিশ্বাস কর ।
আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যদি কেউ আমার উপর ঈমান আনে তবে আমি যে সব কাজ (মৃত কে জীবিত করা, বিক্ষুদ্ধ সমুদ্র কে হাতের ইশারায় শান্ত করা) করি , সেও তা করবে ।
সেই দিন তোমরা জানতে পারবে যে, আমি পিতার (আল্লাহর) সঙ্গে যুক্ত আছি আর তোমরা আমার সঙ্গে যুক্ত আছো এবং আমি তোমাদের সংগে যুক্ত আছি । যে আমার সব হুকুম জানে ও পালন করে সেই আমাকে মহব্বত করে । যে আমাকে মহব্বত করে , আমার পিতা তাকে মহব্বত করবেন। আমিও তাকে মহব্বত করবো আর তার কাছে নিজেকে প্রকাশ করবো।
**ঈসা মসিহ কি কেয়ামতে মানুষ কে মুক্তি দিতে আসবেন ? বিচার দিবসে কার হাতে সমস্ত ক্ষমতা থাকবে? আহলে কিতাবিরা সবাই কি ঈসার ওপর ঈমান আনবে?
উত্তর- সুরা জুখরুফ ৪৩:৬১-৬৫ - সুরা নিসা ৪:১৫৯ - ইঞ্জিল শরিফ ২৫:৩১-৪০
৬১।
ঈসা তো কেয়ামতের অগ্রদূত । সুতরাং তোমরা কিয়ামতে সন্দেহ করো না , আর আমাকে অনুসরন করো । এই সরল পথ । ৬২। শয়তান যেন কিছুতেই তোমাদেরকে এ থেকে নিবৃত্ত না করে ।
সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু । ৬৩। ঈসা যখন স্পষ্ট নিদর্শন (ঈসার হাতে ঐশ্বরিক ক্ষমতাবলী) নিয়ে এলো , সে বলেছিল , “তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করছো তা স্পষ্ট করে দেওয়ার জন্য আমি তোমাদের কাছে হিকমত (ইঞ্জিল শরিফ-পাক রুহে আত্মসমর্পনের পথ ) নিয়ে এসেছি । সুতরাং তোমরা আল্লাহ কে ভয় করো আর আমার অনুসরন করো । ৬৪।
আল্লাহই তো আমার প্রতিপালক ও তোমাদের প্রতিপালক । তাই তার উপাসনা করো । এ-ই সরল পথ । ৬৫। তারপর ওদের বিভিন্ন দল নিজেদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি করলো ।
তাই সীমালঙ্ঘঙ্কারীদের জন্য নিদারুন দিনের শাস্তি দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে ।
-
১৫৯। প্রত্যেক আহলে কিতাব মৃত্যুর পূর্বে অবশ্যই তার (ঈসার) উপর ঈমান আনবে এবং কেয়ামত দিবসে সে তাদের (রোমীও ও ইহুদী) বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে ।
-
ইবনে আদম (ঈসা মসিহ) সমস্ত ফেরেস্তাদের সংগে নিয়ে যখন নিজের মহিমায় আসবেন তখন তিনি বাদশা হিসেবে তার সিংহাসনে মহিমার সংগে বসবেন। সেই সময় (বিচার দিবসে) সমস্ত জাতির লোকদের তার সামনে একসংগে জমায়েত করা হবে ।
রাখাল যেমন ভেড়া আর ছাগল আলাদা করে তেমনি তিনি সব লোকদের দু’ভাগে আলাদা করবেন। তিনি নিজের ডান দিকে ভেড়াদের আর বাম দিকে ছাগলদের রাখবেন।
এরপর বাদশা(ঈসা মসিহ) তার ডান দিকের লোকদের বলবেন, “তোমরা যারা আমার পিতার (আল্লাহর) দয়া পেয়েছ এসো । দুনিয়ার শুরুতে যে রাজ্য (বেহেস্ত) তোমাদের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে তার অধিকারী হও। যখন আমার খিদা পেয়েছিল তখন তোমরা আমাকে খেতে দিয়েছিলে ; যখন মেহোমান হয়েছিলাম তখন আশ্রয় দিয়েছিলে; যখন খালি গায়ে ছিলাম তখন কাপড় পরিয়েছিলে; যখন অসুস্থ ছিলাম তখন আমার দেখাশোনা করেছিলে; আর যখন আমি জেলখানায় বন্দি ছিলাম তখন আমাকে দেখতে গিয়েছিলে”।
তখন সেই আল্লাহ ভক্ত লোকেরা জবাবে তাকে বলবেন, “প্রভু, আপনার খিদা পেয়েছে দেখে কখন আপনাকে খেতে দিয়েছিলাম বা পিপাসা পেয়েছে দেখে পানি দিয়েছিলাম? কখনি বা আপনাকে মেহমান হিসাবে আশ্রয় দিয়েছিলাম , কিংবা খালি গায়ে দেখে কাপড় পরিয়েছিলাম? আর কখনি বা অসুস্থ বা জেলখানায় আছেন জেনে আপনার কাছে গিয়েছিলাম”?
এর জবাবে বাদশা (ঈসা মসিহ) তখন তাদের বলবেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আমার এই ভাইদের মধ্যে সামান্য কোন একজনের জন্যে যখন তা করেছিলে তখন আমারি জন্য তা করেছিলে”। -ইঞ্জিল শরিফ ২৫:৩১-৪০
**বেহেস্ত ও দুনিয়ার সমস্ত ক্ষমতা কোন নবীর হাতে ? দুনিয়ার সমস্ত জাতিই কি তার উম্মত হতে পারে ? বর্তমান পৃথিবীতে কোন ধর্মের মানুষ সবচেয়ে বেশী?
উত্তর- ইঞ্জিল শরিফ ২৮:১৮-২০
বেহেস্তের ও দুনিয়ার সমস্ত ক্ষমতা আমাকে দেয়া হয়েছে । এই জন্যে তোমরা গিয়ে সমস্ত জাতির লোকদের আমার উম্মর কর। পিতা (আল্লাহ), পুত্র ও পাক-রুহের নামে তাদের তরিকা বন্দি দাও । দেখ, যুগের শেষ পর্যন্ত সব সময় আমি তোমাদের সাথে সংগে আছি”।
-
বর্তমান পৃথিবীতে ঈসায়ী খৃষ্ট ধর্মের লোক সবচেয়ে বেশী।
**২০০০ সাল আগে, ঈসার আমলেও কি মুসলমানেরা ছিল ?
উত্তর- সুরা আল-ই-ইমরান ৩:৫২ - সুরা মায়িদা ৫:১১১
৫২। ঈসা ওদের থেকে অবিশ্বাসের উপলব্ধি করে বললো , আল্লাহর রাস্তায় কারা আমার সাহায্যকারী ? হাওয়ারীরা (শিষ্যরা)বললো- আমরাই সাহায্যকারী , আমরা আল্লাহে বিশ্বাসী ও মুসোলমান , সাক্ষী থাকো।
-
১১১। আরো স্মরন করো , আমি যখন হাওয়ারিদের কে এ প্রেরনা দিয়েছিলাম যে, “তোমরা আমার ওপর ও আমার রসুলের ওপর বিশ্বাস করো” , তারা বলেছিল , “আমরা বিশ্বাস করলাম আর সাক্ষী থাকো যে আমরা মুসলমান”।
[মুসোলমান অর্থ – আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পনকারী আর সালাত বা নামাজ অর্থ প্রার্থনা বা আল্লাহর সাথে কথা বলা । ]
**আল্লাহ ও মানুষের মধ্যে মধ্যেস্থতাকারী হিসেবে একমাত্র কোন মানুষটি আছেন?
উত্তর- ইঞ্জিল শরিফ তীমথিয় ১:১-৬
আল্লাহ মাত্র একজনি আছেন এবং আল্লাহ ও মানুষের মধ্যে মধ্যস্থও মাত্র একজন আছেন । সেই মধ্যেস্থ হলেন মানুষ মসিহ ঈসা । তিনি সব মানুষের মুক্তির মূল্য হিসেবে নিজের জীবন দিয়েছিলেন ।
**মানুষে মানুষে ভালবাসার সম্মান বজায় রাখতে ঈসা মসিহের নির্দেশনাবলী কি? এ সম্পর্কিত আয়াত গুলো কি কি?
উত্তর – ইঞ্জিল শরিফ মথি ২০:২৭-২৮ - ইঞ্জিল শরিফ মথি ২৫:৪২-৪৫
তোমাদের মধ্যে যে বড় হতে চায়, তাকে তোমাদের সেবাকারী হতে হবে ।
আর যে প্রথম হতে চায় তাকে তোমাদের গোলাম হতে হবে । মনে রেখ ইবনে আদম সেবা পেতে আসেননি বরং সেবা দিতে এসেছেন এবং অনেক লোকের মুক্তির মূল্য হিসেবে তাদের প্রানের পরিবর্তে নিজের প্রান দিতে এসেছেন”।
-ইঞ্জিল শরিফ মথি ২০:২৭-২৮
*
“যখন আমার খিদে পেয়েছিল তখন আমাকে খেতে দাওনি , যখন মেহমান হয়েছিলাম তখন আশ্রয় দাওনি , যখন খালি গায়ে ছিলাম তখন কাপড় পরাও নি , যখন অসুস্থ হয়েছিলাম এবং জেলখানায় বন্দি ছিলাম তখন আমাকে দেখতে যাওনি” ।
তখন তারা তাকে বলবে , “প্রভু, কখন আপনার খিদে বা পিপাসা পেয়েছে দেখে কিংবা মেহমান হয়েছেন দেখে কিংবা খালি গায়ে দেখে কিংবা অসুস্থ বা জেলখানায় আছেন জেনে সাহায্য করিনি”?
জবাবে প্রভু তাদের বলবেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি , তোমরা যখন এই সামান্য লোকদের মধ্যে কোন একজনের জন্যে তা কর নি তখন তা আমার জন্যেই কর নি”।
-ইঞ্জিল শরিফ মথি ২৫:৪২-৪৫
**বর্তমান বিশ্বে বহু বিবাহ ও তালাক সমস্যা এক মারাত্মক সামাজিক ব্যধি হয়ে দেখা দিয়েছে ।
ব্রকেন পরিবার গুলোর সন্তানেরা এক সময়ে গুরুতর অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পরছে । একটা জাতি কতটা ভালো সেটা নির্ভর করে নারী ও শিশুর প্রতি
জাতিটা কতটা মর্যাদাবান সেটার ওপর । বেহেস্তে হুর সুন্দরী ও গেলমান , এ কথা বলে নারী ও শিশু কে ভোগের বস্তু বানানো উচিত কি উচিত না মানুষ তার বিবেক কেই জিজ্ঞেস করুক । আজ থেকে দুই হাজার বছর আগেই , ঈসা মসিহ নারী কে দিয়েছিলেন সর্বোচ্চ সম্মান , শিশুকে তুলনা করেছিলেন স্বর্গিয়ো বাসিন্দা হিসেবে । কোরান ও ইঞ্জিল শরিফের আলোকে এর প্রমান দেখি –
উত্তর- সুরা মারিয়াম ১৯:৩২ – সুরা আল ইমরান ৩:৩৫-৩৭ - ইঞ্জিল শরিফ মথি ৫:২৭-৩২
-ইঞ্জিল শরিফ মথি ১৮:১-৫
৩২।
অনুগত করেছেন আমাকে (ঈসাকে) মাতার (মা মরিয়মের) , করেন নাই তিনি আমাকে উদ্ধত , অবাধ্য ।
-
৩৫। যখন ইমরানের স্ত্রী বলেছিল , “হে আমার প্রতিপালক ! আমার গর্ভে যা আছে (মরিয়ম) তা একান্ত তোমার জন্যে (পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাসের খাদেম রুপে , যদিও সে সময় শুধু পুরুষরাই খাদেম হতে পারতো) আমি উতসর্গ করলাম । সুতরাং আমার পক্ষ থেকে তা গ্রহন কর । তুমি তো সবই শোন , সবই জানো ।
৩৬। তারপর যখন সে ওকে (মরিয়মকে) প্রসব করলো তখন সে বললো , “ হে আমার প্রতিপালক ! আমি কন্যা প্রসব করেছি (আমি তো পুত্র চেয়েছিলাম) । আল্লাহ ভালোই জানতেন সে যা প্রসব করেছিলো । “ছেলে তো মেয়ের মত নয়” আমি তার নাম মরিয়ম রেখেছি আর অভিশপ্ত শয়তান থেকে তার ও তার বংশধর দের জন্য আমি তোমার স্মরন নিচ্ছি”। ৩৭।
তারপর তার প্রতিপালক তাকে(মরিয়ম) কে ভালোভাবেই গ্রহন করেন ও ভালোভাবেই মানুষ করেন এবং তাকে জাকারিয়ার (বায়তুল মুকাদ্দাসের পেশ ইমাম , মরিয়মের খালু) তত্বাবধানে রেখেছিলেন । যখনি জাকারিয়া তার সঙ্গে ঘরে দেখা করতে যেত তখনি তার কাছে খাবার দাবার দেখতে পেত । সে বলতো , “ও মরিয়ম! এসব তুমি কোত্থেকে পেলে”? সে বলতো, “এসব আল্লাহর কাছ থেকে”। নিশ্চয় আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অশেষ জীবিকা দান করেন ।
-
তোমরা শুনেছ , এই কথা বলা হয়েছে , “জেনা করো না”।
কিন্তু আমি তোমাদের বলছি যে কেউ কোন স্ত্রীলোকের দিকে কামনার চোখে তাকায় সে তখনি মনে মনে তার সংগে জেনা করলো।
তোমার ডান চোখ যদি তোমাকে গুনাহের পথে টানে তবে তা উপরে ফেলে দাও । তোমার সমস্ত শরীর জাহান্নামে যাওয়ার চেয়ে বরং তার একটা অংশ নষ্ট হইয়ে যাওয়া তোমার পক্ষে ভাল। যদি তোমার ডান হাত তোমাকে গুনাহের পথে টানে তবে তা কেটে ফেলে দাও । তোমার সমস্ত শরীর জাহান্নামে যাওয়ার চেয়ে বরং তার একটা অংশ নষ্ট হইয়ে যাওয়া তোমার পক্ষে ভাল।
আবার বলা হয়েছে যে কেউ তার স্ত্রীকে তালাক দেয় সে তাকে তালাক নামা দিক । কিন্তু আমি তোমাদের বলছি , যে কেউ জেনার দোষ ছাড়া অন্য কোন কারনে স্ত্রীকে তালাক দেয় সে তাকে জেনা কারীনি করে তোলে । আর যাকে তালাক দেয়া হয়েছে সেই স্ত্রীকে যে বিয়ে করে সেও জেনা করে । -ইঞ্জিল শরিফ ৫:২৭-৩২
-
সেই সময়ে উম্মতেরা ঈসার কাছে এসে বললেন , “ বেহেস্তি রাজ্যে সবচেয়ে বড় কে ?
তখন ঈসা একটা শিশুকে ডেকে তাদের মধ্যে দাড় করিয়ে বললেন , “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যদি তোমরা মন ফিরিয়ে শিশুর মত না হও তবে কোন মতেই বেহেস্তি রাজ্যে ঢুকতে পারবে না । যে কেউ এই শিশুর মত নিজেকে নম্র করে , সেই বেহেস্তি রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বড় ।
আর যে কেউ এর মত কোন শিশুকে আমার নামে গ্রহন করে সে আমাকেই গ্রহন করে ।
-ইঞ্জিল শরিফ মথি ১৮:১-৫
**ঈমানদের বন্ধু কি খ্রিষ্টানরা ?
উত্তর- সুরা মায়িদা ৫:৮২
৮২। অবশ্য বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে শত্রুতায় মানুষের মধ্যে ইহুদী ও অংশীবাদীদেরকে তুমি সবচেয়ে বেশি উগ্র দেখবে , আর যারা বলে আমরা খ্রিষ্টান ,তাদের কেই তুমি বিশ্বাসীদের নিকটতর বন্ধু হিসাবে দেখবে , কারন তাদের মধ্যে অনেক পন্ডিত ও সংসার বিরাগী সন্নাসী রয়েছে , আর তারা অহংকারো করে না ।
** ইহুদি , খৃষ্টানরাও কি ঈমানদার?
উত্তর- সুরা মায়িদা ৫:৬৯
৬৯। নিশ্চয় যারা বিশ্বাসী , ইহুদী , সাবেয়ি ও খৃষ্টান তাদের মধ্যে যে-কেউ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করবে ও সৎকাজ করবে তার কোনো ভয় নেই আর সে দুঃখিতও হবে না ।
**ঈসা মসিহ কি আল্লাহর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত ?
উত্তর- সুরা আল-ই-ইমরান ৩:৪৫
৪৫। যখন ফেরেস্তারা বললো , “ও মরিয়ম! আল্লাহ তার তরফ থেকে তোমাকে সুখবর দিচ্ছেন একটি বানীর – যার নাম হবে মসিহ-মরিয়ম পুত্র ঈসা । সে ইহকাল ও পরকালে সম্মানিত হবে আর সে ( আল্লাহর) সান্নিধ্যপ্রাপ্তদের একজন ।
**ঈসা মসিহের ঐশ্বরিক ক্ষমতা গুলো কি কি?
উত্তর- সুরা আল-ই-ইমরান ৩:৪৯
৪৯। আর (আল্লাহ) তাকে (ঈসাকে) রসুল করবেন বনি-ইস্রাইলদের জন্য ।
সে বলবে , “আমি তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে তোমাদের কাছে নিদর্শন এনেছি । আমি তোমাদের জন্য মাটি দিয়ে একটি পাখি বানাবো তারপর আমি ওতে ফু (প্রান) দিবো , আল্লাহর অনুমতি পেলে তা পাখি হয়ে যাবে । আমি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে ভালো করবো আর আল্লাহর অনুমতি পেলে মৃত কে জীবন্ত করবো । আর তোমাদের কে বলে দেবো ঘরে তোমরা কী খাবে ও কী মজুদ করবে । এতে তো তোমাদের জন্যে নিদর্শন রয়েছে , যদি তোমরা বিশ্বাসী হও ।
**ঈসা মসিহ কি ইসলাম (শান্তি) ধর্মের প্রচারক ছিলেন ?
উত্তর- সুরা মরিয়ম ১৯:৩৩
৩৩। আমার ওপর শান্তি (ইসলাম) ছিলো যেদিন আমি জন্মলাভ করেছিলাম ও শান্তি (ইসলাম) থাকবে যেদিন আমার মৃত্যু হবে এবং যেদিন জীবিত অবস্থায় আমার পুনরুত্থান হবে ।
**মুহাম্মদ (স) এর অনুসারীদের ঈসা মসিহ ও অন্যান্য নবীগন ও তাদের ওপর অবতির্ন কিতাবের ওপর বিশ্বাস রাখা দরকার আছে কি না ? সব নবীদের ধর্মই কি এক?
উত্তর- সুরা নিসা ৪:১৩৬ - সুরা শুরা ৪২:১৩ –সুরা মায়িদা/৪৬ – সুরা ইউনুস/৯৪
১৩৬। হে বিশ্বাসীগন! তোমরা আল্লাহ , তার রসুল , তার রসুলের ওপর তিনি যে কিতাব অবতীর্ন করেছেন তাতে এবং যে কিতাব তিনি পূর্বে অবতীর্ন করেছেন তাতে বিশ্বাস করো । আর আল্লাহ , তার ফেরেশ্তাদেরকে , তার কিতাব সমুহে , তার রসুলদেরকে এবং পরকালে অবিশ্বাস করবে সে ভীষনভাবে পথ ভ্রষ্ট হবে ।
-
১৩। আমি তোমাদের জন্য নির্ধারিত করেছি (সেই) ধর্ম যার নির্দেশ নুহ কে দিয়েছিলাম,- যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি তোমাকে , - যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহিম , মুসা ও ঈসা কে এই বলে যে , “তোমরা ধর্ম কে প্রতিষ্ঠিত করো আর তার মধ্যে মতভেদ এনো না । তুমি অংশীবাদীদেরকে যার কাছে ডাকছো তাদের কাছে তা বড় কঠিন বলে মনে হয় । আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ধর্মের দিকে টানেন , আর যে তার দিকে মুখ ফেরায় তাকে তিনি ধর্মের পথে পরিচালিত করেন ।
-
৪৬।
সতর্ককারীদের জন্য পথের নির্দেশ আর উপদেশ হিসেবে তাকে (ঈসাকে) ইঞ্জিল দিয়েছিলাম; তার মধ্যে ছিল পথের নির্দেশ ও আলো ।
-
৯৪। আমি তোমার কাছে যা (কোরান) অবতীর্ন করেছি তাতে যদি সন্দেহ হয় তবে তোমার আগের কিতাব (ইঞ্জিল শরিফ সহ অন্যান্য আসমানি কিতাব) যারা পড়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করো ।
**অনেক ধর্মবিদেরা শত্রুকে ধংস করার কথা বলেছেন । কিন্তু ঈসা মসিহ ২০০০ বছর আগেই শত্রু কেও ভালোবেসে অহিংস ধর্ম প্রচার করে গেছেন ।
এ সম্পর্কিত আয়াত কি?
উত্তর- কিন্তু আমি তোমাদের বলছি তোমাদের শত্রুদেরো ভালোবাসো । যারা তোমাদের ওপর জুলুম করে তাদের জন্য মুনাজাত করো , যেনো লোকে দেখতে পায় সত্যি তোমরা
বেহেস্তি পিতার সন্তান । তিনি তো ভাল-মন্দ সকলের ওপর তার সূর্য উঠান এবং সৎ ও অসত লোকদের উপরে বৃষ্টি দেন । - ইঞ্জিল শরিফ মথি ৫:৪৪-৪৬
**মানুষ কে আল্লাহর সন্তান বলে , আসলে ঈসা মসিহ কি বলতে চেয়েছেন ?
উত্তর – এটা আসলে মানুষের সর্বোচ্চ সম্ভাবনার ইঙ্গিত । রুহানী অর্থে ঈসা মসিহ মানুষ কে আল্লাহর সন্তান বলেছেন ।
নিজের জীবন দিয়ে তিনি প্রমান করে গেছেন , মৃত্যুকে পর্যন্ত অসহায় করে তুলতে পারে মানুষ , যদি সে সর্বশক্তিমানের সাথে একাত্ম হয়ে উঠে , পরম প্রভুর মতো খাটি হয়ে উঠে । সবকিছুকে নিজ অস্তিত্ব জ্ঞান করে - নিজ অস্তিত্বেরি কল্যানে আত্ম নিবেদনের পথ তিনি দেখিয়ে গেছেন । এই পথের পথিক যিনি তিনিই আল্লহর সন্তান । এ সংক্রান্ত আয়াত ঃ-
পরে আল্লাহ তার মত করেই মানুষ সৃষ্টি করলেন । হ্যা , তিনি তার মত করেই মানুষ সৃষ্টি করলেন , সৃষ্টি করলেন পুরুষ ও স্ত্রীলোক করে ।
-তৌরাত শরীফ , পয়দায়েশ১:২৭
*
কিন্তু আমি প্রভু আর ওস্তাদ হয়েও যখন তোমাদের পা ধুয়ে দিলাম তখন তোমাদেরো একে অন্যের পা ধোয়ানো উচিত ।
আমি তোমাদের সত্যিই বলছি , আমি যাকে পাঠাই , যে তাকে গ্রহন করে সে আমাকেই গ্রহন করে । আর যে আমাকে গ্রহন করে , যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন সে তাকেই গ্রহন করে ।
-ইঞ্জিল শরিফ , ইউহোন্না ১৩:১৪,২০
*
আর যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেস্তাদেরকে বললেন , “আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি (আমার স্বরুপ) সৃষ্টি করতে যাচ্ছি” , তারা বললো, “আপনি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন যে অশান্তি ঘটাবে ও রক্তপাত করবে? আমরাই তো আপনার পবিত্র মহিমা ঘোষনা করি”। তিনি বললেন, “আমি যা জানি তোমরা তা জানোনা”।
-কোরান শরিফ ২:৩০
*
আমি যখন ফেরেস্তাদেরকে বললাম, “আদমকে(আমার স্বরুপকে) সিজদা করো” , তখন ইবলিশ ছাড়া সকলেই সিজদা করলো । সে অমান্য করলো ও অহংকার করলো । তাই সে (আমা্র) অবিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হলো ।
-কোরান শরিফ ২:৩৪
*
হে প্রশান্ত আত্মা ! তুমি তোমার প্রতিপালকের কাছে ফিরে এসো , (নিজে) সন্তুষ্ট হও ও (তাকে) সন্তুষ্ট করো ।
-কোরান শরিফ ৮৯:২৭-২৮
**বাংলাদেশীদের মধ্যে একটা ভ্রান্ত বিশ্বাস আছে যে ইব্রাহিম (আ) তার পুত্র ইসমাঈলকে কোরবানি দিচ্ছিলেন , কোরানের আলোকে সঠিক জবাব চাই ।
ঈসা মসিহ , ইব্রাহিম (আ) এর কোন পুত্রের বংশ ধর ছিলেন ?
উত্তর- সুরা সাফফাত ৩৭:১০০-১১৩ - আল-ই-ইমরান ৩:৩৩
১০০। হে আমার প্রতিপালক ! আমাকে এক সুসন্তান দাও । ১০১। আমি তাকে এক ধীরস্থির পুত্রের খবর দিলাম । ১০২।
তারপর যখন তার পিতার সঙ্গে কাজ করার মতো বয়স হল তখন ইব্রাহিম তাকে বললো , “বাছা ! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে , তোমাকে আমি জবাই করছি , এখন তোমার কি বলার আছে ?”
সে বললো, “পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে তা-ই করুন । আল্লাহ ইচ্ছা করলে আপনি দেখবেন , আমি ধৈর্য ধারন করতে পারি”।
১০৩। তারা দুজনেই যখন আনুগত্য প্রকাশ করলো ও ইব্রাহিম তার পুত্রকে কাত করে (জবাই করার জন্য) শুইয়ে দিলো । ১০৪।
তখন আমি তাকে ডেকে বললাম , “হে ইব্রাহিম!১০৫। তুমি তো স্বপ্নের আদেশ সত্যিই পালন করলে”। এভাবেই আমি সতকর্মপরায়ন্ দেরকে পুরস্কৃত করে থাকি । ১০৬। নিশ্চয়ই এ ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা ।
১০৭। আমি (ইসহাক কে ছাড়িয়ে নিয়ে) জবাই করার জন্য দিলাম এক মহান জন্তু । ১০৮। এবং তাকে রেখেদিলাম পরবর্তিদের মাঝে (স্মরনিয়ো করে)১০৯। ইব্রাহিমের ওপর শান্তি বর্শিত হোক ১১০।
এভাবেই আমি সতকর্মপরায়নদের কে পুরষ্কৃত করে থাকি । ১১১। সে ছিল
আমার এক বিশ্বাসী দাস । ১১২। আমি তাকে ইসহাকের সুখবর দিয়েছিলাম , সে ছিল এক নবি , সতকর্মপরায়ন দের একজন ।
১১৩। তাকে ও ইসহাক কে আমি সমৃদ্ধি দান করেছিলাম । তাদের বংশধরদের কেউ কেউ ছিল সতকর্মপরায়ন , আবার কেউ কেউ নিজেদের ওপর স্পষ্টই জুলুম করতো ।
[সুপ্রিয় পাঠক , এখন আপনারাই বলুন উপরের আয়াত গুলোতে কোথায় ইসমাঈল নবির নাম আছে ?নবি ইসহাকের বংশধর ছিলেন নবি ইমরান আর নবি ইমরান ছিলেন ঈসা মসিহের নানা]
৩৩। আল্লাহ তো আদম , নুহ ও ইব্রাহিমের বংশধর এবং ইমরানের বংশধরকে বিশ্বজগতে মনোনীত করেছেন ।
**দুনিয়াতেই বেহেস্তের শান্তিতে থাকা সম্ভব ?
উত্তর - আমিই আসল আঙ্গুর গাছ (বহুতে একাত্ব “প্রকাশ্য প্রভু”) আর আমার পিতা (ঐক্যের মুল প্রান সঞ্চারকারী “অপ্রকাশ্য প্রভু”) মালী । আমার যেসব ডালে ফল (“প্রকাশ্য প্রভুতে” ভালোবাসার সেবায় প্রশান্তি ) ধরে না সেগুলো তিনি কেটে ফেলেন , আর যেসব ডালে ফল ধরে সেগুলো তিনি ছেটে পরিষ্কার (ধংশ) করেন , যেন আরো অনেক ফল ধরতে পারে । আঙ্গুর গাছে (প্রভুর একত্বে)যুক্ত না থাকলে যেমন ডাল নিজে নিজে ফল ধরাতে পারে না তেমনি আমার মধ্যে না থাকলে তোমরাও একা একা ফল ধরাতে পারো না । আমিই আঙ্গুর গাছ আর তোমরা ডালপালা । যদি কেউ আমার মধ্যে থাকে আর আমি তার মধ্যে থাকি তবে তার জীবনে অনেক ফল ধরে , কারন আমাকে ছাড়া তোমরা কিছুই করতে পারো না ।
যদি কেউ আমার মধ্যে না থাকে তবে কাটা ডালের মতোই তাকে বাইরে ফেলে দেয়া হয় আর তা শুকিয়ে যায় ।
-ঈশা মশিহ
-
যে কেউ নিজের জীবন রক্ষা করতে চায় সে তার সত্যিকারের জীবন হারাবে , কিন্তু যে কেউ আমার (আল্লাহর) জন্য তার প্রান হারায় সে তার জীবনের শান্তি রক্ষা করবে ।
কি লাভ ? দুনিয়ার সব পেয়েও
যদি এসবের বিনিময়ে একজন তার জীবনের শান্তি হারায় ।
-ইঞ্জিল শরিফ মথি ১৬:২৫-২৬
----
আমরা সন্তান কে মানুষ করতে উচ্চার শিক্ষার জন্য খৃষ্টানদের দেশে পাঠাই , উন্নত জীবনের আশায় জান বাজি রেখে খৃষ্টান দেশে থাকার চেষ্টা করি , তাদের কাছ থেকে অর্থ ও কারিগরি সাহায্য নিয়ে দেশ চালাই , তাদেরই মহান ঈশায়ী দর্শন কে আত্মস্থ করতে আমাদের অবহেলা করা কি উচিত? গুনে খাওয়া মানোসিকতায় আর কত হোচট খাওয়া! সুপ্রিয় পাঠক এখন আপনারাই আপনাদের বিবেক কে প্রশ্ন করুন , আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর পথ কোনটি? আল্লাহ , আমাদের ইচ্ছাকে তার ইচ্ছায় প্রতিস্থাপিত করুন , তার পবিত্র রুহ ঈসা মসিহের মাধ্যমে । আমেন ।
আসল পথে বিরতিহীন পথ চলাতেই শান্তিঃ
এই দুনিয়াতে এক বিস্ময়কর ঘটনা কোটি কোটি মানুষ কে আজো নাড়া দেয় –
আল্লাহর আশির্বাদে , পিতা ছাড়াই মা মরিয়মের গর্ভে ঈসা মসিহের জন্ম ।
নজরুলের কবিতায় আবার ফিরে যেতে হয় –“মানুষে স্বর্গে তুলিয়া ধরিয়া ধুলায় নামে শশী”। আল্লাহ তার পথহারা সৃষ্টিকে পথে আনতে নিজেই নেমে আসেন মাটির পৃথিবীতে।
মা ও শিশুর ভালোবাসায় স্বর্গিয়ো আনন্দধারা , দূর থেকে দেখেই আমরা পবিত্রতায় সিক্ত হই । মন কে বুঝ দেই , নাহ! খাটি-নির্ভেজাল ভালোবাসা এখনো আছে ।
আর দূর থেকে নয়, এখন ইচ্ছা করলেই আমরা মা ও শিশুর স্বর্গিও আনন্দে নিত্য স্নান করতে পারি । একমাত্র “ঈসায়ী দর্শন” আমাদের সে সুযোগ করে দিয়েছে ।
আমরা যাতে সহজে চলতে পারি সত্যিকার জীবনের পথ , এজন্য আল্লাহতায়ালা, মা মরিয়ম ও তার নিষ্পাপ সন্তান ঈসা মসিহ কে আমাদের সামনে জীবন্ত নিদর্শন রুপে তুলে ধরেছেন । এখানে মা মরিয়ম , মমতাময়ী মায়ের নিঃস্বার্থ সেবিকা রুপে আর ঈসা মসিহ নিষ্পাপ শিশুর সরলতা রপে আমাদের সামনে প্রকাশিত।
আমাদের “আসল আমি”ও মায়ের মতই আমাদের লালন করে চলেছেন , জটিল দেহ যন্ত্রকে অবিশ্রামভাবে সচল রাখছেন ।
শিশু দুষ্টামী করলে মা যেমন পিটুনি দিয়ে শাসন করেন ঠিক তেমনি আমরাও অহংকারী খারাপ মন নিয়ে চললে , তিনিও আমাদের রোগ শোক দিয়ে শাস্তি দেন । আবার তিনিই সুস্থ করে তোলেন , রোগ শোক হচ্ছে আমাদের জন্য তার সতর্কবার্তা । অবচেতন-মনে আমরা যত সরল হবো-শিশু হবো , সচেতন-মন“আসল আমি”ও আমাদের দুর্বল হাতের সবল হাত হয়ে কঠিন সব কাজ সহজে করে দিবেন। মা কখনোই চাননা তার সন্তান কষ্ট পাক । নিজে না খেয়ে , মা সন্তান কে আগে খাইয়ে নেন , সন্তানের সুখেই তার সুখ ।
শুন্যের মত, পর্দার আড়ালে থেকে মা সন্তান কে শুধু ভালোবেসেই যান বিনিময়ে চাননা কিছুই । আহলাদ করে মায়ের কোলে বসলে , মা পরম মমতায় মাথায় হাত বুলিয়ে বুলিয়ে শিশুকে ঘুম পারিয়ে দেন । আমাদের সচেতন-মন “আসল আমি”ই তো আমাদের “আসল মা”। সবাই ছেড়ে চলে যায় তবু তিনি থেকে যান,পাছে তার সন্তান ভয় পেয়ে যায় , চরম দুঃসহ পরিস্থিতিতে একমাত্র তিনিই আমাদের অন্তরে অভয় দেন – তার ওপর বিশ্বাস (আত্মবিশ্বাস) রেখে শুধু এগিয়ে যেতে । তার কাছে নিঃশ্ব হয়ে সরল মনে নিজেকে সপে দিলে তিনিও গভীর মমতায় আমাদের আগলে রাখেন ।
যেকোন কিছু এমনকি মৃত্যুও তখন আমাদের সামনে দুর্বল হয়ে পরে । যেমনটি হয়েছিল ঈসা মসিহের জীবনে , তিনি মৃত কে জীবিত করেছিলেন, অসুস্থকে করেছিলেন সুস্থ , হাতের ইশারায় সমুদ্রের ঝর থামিয়ে দিয়েছিলেন , এমন সব ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকারী তিনি হয়েছিলেন সচেতন-মনের ইচ্ছায় অবচেতন-মনের ইচ্ছাকে সপে দিয়ে । ঈসা মসিহ মমতাময়ী মাতৃভাবেই সবসময় পুর্ন থাকতেন, তাইতো তিনি বলেছিলেন , “সেবা পেতে নয়, আমি সেবা দিতে এসেছি এবং অনেক লোকের মুক্তির মূল্য হিসেবে তাদের প্রানের পরিবর্তে নিজের প্রান দিতে এসেছি”।
মা সাধক এমনই হন , সমস্ত সৃষ্টিকে নিজের অস্তিত্ব-নিজের সন্তান জ্ঞান করে অকাতরে সেবা করে যান। সেবাতেই মায়ের স্বর্গিয়ো শান্তি , যে শান্তি কখনোই শেষ হবার নয় ।
তাই “মানবীয় জীবন্ত ঈশ্বর” ঈসা ম।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।