আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হরতালে সাইক্লিং

১১ তারিখ সন্ধ্যার শাহবাগের আড্ডায় মুজাক্কির বলল ভাইয়া চলেন কালকে সাইকেল চালাই । ১২ আর ১৩ হরতাল তাই তার এই প্রস্তাব । ঠিক আছে বলে ফোন দিলাম কয়েকজনকে । সাড়া দিল রঞ্জু ভাই আর আবুবকর । মুন বলল জয়েন করবে পরে ।

সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে গেলাম সকাল সকাল । বাসাবো বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে থাকতে বলেছিলাম আবুবকর আর রঞ্জু ভাইকে । তারা রেডি ছিল । আমি লালবাগ আর মুজাক্কির নাজিমউদ্দিন রোড থেকে রওনা দিলাম । সময়মত রওনাও দিলাম বাসাবো থেকে ।

ডিম, প্রমান সাইজ পরটা গাভীর দুধের চা দিয়ে নাস্তা সারলাম । এরপর গেলাম রঞ্জু ভাইয়ের জমি দেখতে । কি ছোট ছোট রাস্তা । কোন পরিকল্পনা নেই এই রাস্তা তৈরিতে । কিভাবে বাঁচবে আগুন লাগলে তা চিন্তা করতে করতে বের হলাম আমাদের গন্তব্যর দিকে ।

সালাম ডেইরি ফার্মের সামনে দিয়ে কাঁচা-পাকা রাস্তা ধরে এগুতে থাকলাম দক্ষিনগাওয়ের দিকে । বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানির সাইন বোর্ড দেখলাম যেখানে গড়ে উঠবে সবার স্বপ্নের বসতী । কাচাঁ রাস্তা ধরে আমরা আগালাম এবার আমুলিয়ার দিকে । কিন্তু পথ ভুল করে কিছুটা দূরে মাদারটেক এর দিকে চলে গিয়েছিলাম । সেখানে তালের সাশ দেখে বিরতী দিলাম ।

খেলাম মজার সাশ । এবার সঠিক পথে ফেরার পালা । আমুলিয়া হয়ে চনপাড়া,পূর্বগ্রাম,বাউনাপাড়া, বড় আলু, মাঝিনা নদীর পাড়, রুপগঞ্জ । রপগঞ্জে নির্বাচন চলছে । কত মানুষ আর পুলিশ ।

উৎসবের আমেজ । সাইকেলে হাওয়া দিলাম । বিভিন্ন দৃশ্য দেখতে রওনা দিলাম মুশুরীর দিকে । পথে নদী আর খাল দেখে গোসলের ইচ্ছা পোষন করছিল আবুবকর আর রঞ্জু ভাই । সহ্য করতে না পেরে এক সময় তারা বলল ভাই থামান এবার গোসল করবো ।

কি আর করা অগত্যা থামতেই হল । ছোট পুকুরে গোসলের পাশাপাশি সাঁতার প্রতিযোগীতা করলো আবুবকর আর রঞ্জু ভাই । ফাষ্ট হল কে বলেন তো ? ও একটা মজার কথা একটা ছেলে হিন্দিতে কথা বলা শুরু করলো আমার সাথে । আমি কিছুটা কথা বলার ফাঁকে রঞ্জু ভাই যোগ দিল আমাদের সাথে সে দেখি হঠাৎ সে আরবী বলা শুরু করলো । তখন সেই ছেলেঠি পালালো ।

মুভিপাগল আমার তখন থানেদার ছবির " কেয়সা ফুটায়া -কামালকা ডারায়া " ডায়লগটি মনে পড়লো । আবার শুরু পালা । নির্বাচনের হিংসার শিকার দেখলাম এক দোকানদার । নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না বলে মিছিল করতে করতে দেখলাম যে যার মত জিনিস নিচ্ছে দোকান থেকে । টান মুশুরী, দক্ষিনবাগ, বাগদেব, গোয়ালপাড়া ।

গোয়ালপাড়া পৌছে আম কিনলো আবুবকর । ছোট কিন্তু মিষ্টি আম । দারুন সুস্বাদু । আম খেতে খেতে সাইকেল চালাছছিল রঞ্জু ভাই । হঠাৎ একটি স্পিড ব্রেকার দেখতে দেরি করাতে সে ব্রেক করলো ঠিকই কিন্তু ততখনে সাইকেল তার উপরে ।

সাইকেলের নিচে থাকা অবস্থায় সে আম খাচ্ছিল । যা দেখে ঐখানে থাকা সবাই হেসে উঠল । হাত ছিলে রক্ত বের হচ্ছিল । ঠিক পাশেই ছিল ডিসপেন্সারি । ডেটল , তুলা, ব্যান্ডেজ কিনলাম ।

আবুবকর ধুয়ে তাতে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিল । এবার মুন ফোন দিল বলল কই আপনারা ? অবস্থান জানালাম আমাদের । সে আমাদের জয়েন করলো । আম দিলাম মুনকে । আম খেতে খেতে দেখি আমরা যেই জায়গাটাতে দাড়িয়ে সেখানে গত বৎসর এসেছিলাম নৌকা ভ্রমনে ।

আবার আসার কথা বললাম সবাইকে । মজাই হয়ে ছিল সেই নৌকা ভ্রমনটি । এবার ইছাপুরা হয়ে মুনের বাড়ি । খিলক্ষেতে মুনের বাসা । মজার রান্না করেছে খাল্লামা আমাদের জন্য ।

খেলাম মজা করে । মুনের বাসাতে বার-বি-কিউয়ের আদর্শ জায়গা । প্লান করলাম কোন এক পূর্নিমাতে করবো বার-বি-কিউ । এবার বাসায় ফেরার পালা । মুনকে ভালবাসা জানিয়ে বিদায় নিলাম ।

ফাঁকা রাস্তাতে সাইকেল চালালাম ইচ্ছে মত । এর মধ্যে ফেইবুক দেখে আমাদের ফোন করলো গুলশান থেকে এই আপু । তার সাথে দেখা করে আমাদের ক্লাব সর্ম্পকে জানালাম । সে আমাদের সাথে পড়ে জয়েন করার ইচ্ছা পোষন করলো । তাকে স্বাগত জানিয়ে বিদায় নিলাম ।

চলে আসলাম শাহবাগে রুমা আপা, টুটু ভাই মাসুদ, কামরুল সহ সবার সাথে শেয়ার করলাম আমাদের দিনের অভিঞ্জতা । (ছবি তোলা হয়নি । ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।