আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাবুলের গল্প

সে এক পাথর আছে কেবলই লাবণ্য ধরে ...
বাবুলের বাবা পাগল ছিলেন ... আমরা যেতাম না ঐ অন্ধকার ঘরে , যেখানে একটা বালিশ আর জলচৌকি নিয়ে তিনি , সুতো বুনতেন পথহারা অনুষঙ্গে ... আর চোখ তুলে তাকাতেন যেন বুনো কাক ... ঝড়শেষে ডানাভেঙ্গে সহসাই । বাবুল যেত না খেলতে কোথাও কোন স্কুলে পড়া হয়নি তার , একমনে ইট ভেঙে চলত সে রেলগাড়ির ছন্দে ... আমরা স্কুল শেষে ফিরলে আমাদের আইসক্রিম খাওয়াতো নিজ পয়সায় কখনো বলেনি তারও ইচ্ছে করে ... বাবুলের বাসায় আমরা যেতাম না কেউ , বাসার বারণ ছিলো ... ভয়ও পেতাম খুব , পাগলেরা নাকি কামড়ে দেয় ছোট শিশু পেলে , যদিও নিজেকে কখনোই শিশু ভাবিনি তবুও ভয় হত , দূর থেকে ডাকতাম বিকেলে .. কখনো নোনাধরা ভাঙা দেয়ালে দেখতাম জটাচুল ভোঁ দৌড় .... বাবুলের একটা ঘুড়ি ছিল ঢাউশ , একটা আকাশ ছিল একান্ত পোষা টিয়া ছিল আমাদের ঈর্ষা জাগিয়ে ... সে শিষ বাজাত আর বিড়ি টানত কায়দা করে , আমরা হুডিনির দর্শকের মত তাকিয়ে থাকতাম একঠায় । পচা ডোবায় নিরীহ জাম্বুরাকে বল বানিয়ে , অথবা কলাগাছের ভেলায় ভেসে মাছ খুঁজে দু একটা আমরা আকাশে হারিয়ে যেতাম আর বাবুল , মাঝে মাঝে গান ধরত ... আবিদের ঠোঁটে নিষিদ্ধ গল্পের শিহরণ । বাবুল মারা যায় ১৬ই জুন , বাসী পলাশের মত , তার প্রাণহীণ দেহ পড়ে ছিল রাস্তার পাশে .. কেউ দেখেনি , পড়ে ছিল তেমনি রাতভর , কোন অবহেলায় ... বাবুলের ঠোঁটের কষে লাল রক্ত দেখে , গুমড়ে উঠেছিলো বুকে .. ঝাপসা চোখে দেখেছিলাম বাবুল পড়ে আছে ..যেন এখনি উছে আসবে , বিড়ি ধরাবে কায়দায় । আজও সেই পাখরটা আছে , একমনে ইট ভেঙে চলে কোন কিশোর সেই পাখিটা আজও খুজি আকাশে ...
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.