আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"রেকর্ড ছাড়িয়েছে মার্কিন সেনাদের আত্মহত্যা"

"সকল বস্তু তার বিপরীত বস্তুর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠে"

রয়টার্স: মার্কিন সেনাবাহিনীতে প্রতি বছর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে এবং এর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। চলতি বছর আত্মহত্যার ঘটনা রেকর্ড ছাড়িয়েছে বলে মঙ্গলবার মার্কিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর ভাইস চিফ অব স্টাফ জেনারেল পিটার কিয়ারেল্লি জানান, এ বছর আত্মহত্যাকারী সেনার সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে, যা ২০০৮ সালের চেয়ে প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে কেউ কেউ লড়াই থেকে ফেরার কয়েক সপ্তাহ পরই আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে প্রায় ১৪০টির মতো আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে সেসব সেনাদের মধ্যে, যারা বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয় দায়িত্ব পালন করছে।

এর বাইরে আরো ৭১ সেনা আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে, যারা সক্রিয়ভাবে কোনো জায়গায় দায়িত্ব পালন করছে না। মার্কিন সেনাদের আত্মহত্যার এসব কাহিনী এমন সময় প্রকাশ করা হলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আফগানিস্তানে আরো সেনা পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছেন। জেনারেল পিটারের এ মন্তব্যে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা বাড়ানোর সম্ভাবনার এ সময়ে সেনাদের মানসিক চাপের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ আরো বেড়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিয়ারেল্লি আত্মহত্যার কারণ নিয়ে কোনো ঢালাও মন্তব্য করা কিংবা ইরাক ও আফগানিস্তানের লড়াইয়ের কারণে মার্কিন সেনাদের ওপর চাপের সাথে এর সম্পর্ক রয়েছে­ এমন ধারণা না করার ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি জানান, আত্মহত্যার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়।

তা ছাড়া আত্মহত্যাকারী প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সেনা কখনো বিদেশে মোতায়েন হননি। তবে সম্প্রতি সেনাবাহিনী জানায়, সেনাবাহিনীর নিু পদমর্যাদার এক-পঞ্চমাংশ সেনাই বিষণíতার মতো মানসিক রোগে ভুগছেন। ইরাক ও আফগানিস্তান পরিস্খিতি নিয়ে মার্কিন সমরবিশারদরা যখন চিন্তিত, তখন মার্কিন সেনারা ক্রমেই তাদের নিজ জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ছেন। তাদের মধ্যে বিষণíতা বাড়ছে দিন দিন। মার্কিন সেনাবাহিনীতে বর্তমানে প্রায় ৯০০ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন এবং আরো নাকি ৮০০ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দরকার তাদের।

কিন্তু মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের চিকিৎসাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। দিন দিন আত্মহত্যার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেনাবাহিনীতে এভাবে আত্মহত্যার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই দিশেহারা সেনা কর্তৃপক্ষ। ঠিক কী কারণে সেনারা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে তাও তারা ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। মনে করা হচ্ছে যুদ্ধ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন, পারিবারিক নানা সমস্যার কারণে সেনারা আত্মহত্যা করছে।

বিশেষ করে যুদ্ধ ক্ষেত্রে পাঠানো হলে সেটি অনেক সেনার পারিবারিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিন্তু সেনাবাহিনীর মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন যে আত্মহত্যাকারী সেনাদের এক-তৃতীয়াংশ এমন সেনা যাদের কখনো কোনো যুদ্ধ ক্ষেত্রে পাঠানো হয়নি। এর পরও কেন তারা আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে সেটি একটি বিরাট প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ইতোমধ্যে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ন্যাশনাল হেলথ একটি পাঁচ বছরের প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যাতে খরচ হবে পাঁচ কোটি ডলার। এ প্রকল্পের পাশাপাশি সেনাদের মানসিক বিষণíতা ও চাপ দূর করতে আরো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগের কথাও জানান জেনারেল কিয়ারেল্লি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.